
আইপিএল স্থগিত হতেই সমস্যায় জেরবার অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটাররা
আইপিএল স্থগিত হয়ে গিয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেটাররা বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররাও। তবে মহা সমস্যায় পড়েছেন অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটাররা। এই পরিস্থিতিতে করোনা আবহে কোনও দেশে টি ২০ লিগ খেলতে যাওয়ার ব্যাপারে অজি ক্রিকেটারদের বুঝেশুনে পদক্ষেপের পরামর্শ দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারস অ্যাসোসিয়েশন।

সমস্যায় অস্ট্রেলীয়রা
ভারতের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ। আপাতত ১৫ মে পর্যন্ত ভারত থেকে কাউকে দেশে ফেরার অনুমতি দিচ্ছে না অস্ট্রেলিয়ার সরকার। বিশেষ চার্টার্ড বিমানে করে দেশে ফেরানোর আবেদন অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার, কোচ বা ধারাভাষ্যকাররা করলেও তা নাকচ হয়ে গিয়েছে। এরই মধ্যে চেন্নাই সুপার কিংসের ব্যাটিং কোচ মাইক হাসি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার চিফ এগজিকিউটিভ নিক হকলে জানিয়েছেন, বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি ও বিসিসিআই ক্রিকেটারদের সুরক্ষিতভাবে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করছেন। জানা গিয়েছে, চার্টার্ড বিমানে করে অজিদের প্রথমে মালদ্বীপ বা শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হবে। সেখান থেকে চার্টার্ড বিমানে করেই তাঁদের দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যদিও দুই-তিনদিনের আগে সেটা সম্ভব নয়। ১৫ মে-র পর আন্তর্জাতিক সীমান্ত খুলে দেওয়া হলেও দেশে ফিরে ১৪ দিনের কোয়ারান্টিনে থাকতে হবে সকলকে।
(ছবি: বিসিসিআই/আইপিএল)

বুঝেশুনে সিদ্ধান্ত
নিক হকলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন আইপিএলের আসর থেকে যাঁরা দেশে ফিরবেন তাঁদের কারও জন্যই নিয়মে বিশেষ কোনও শিথিলতা আনার আবেদন করা হবে না। করোনা সংক্রান্ত সরকারি বিধিনিষেধই সকলকে মেনে চলতে হবে। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারস অ্যাসোসিয়েশনের চিফ এগজিকিউটিভ টড গ্রিনবার্গ বলেছেন, আমরা সকলের মানসিক চাপ বা উৎকণ্ঠা অনুভব করছি। কিন্তু এরপর থেকে করোনা পরিস্থিতিতে বিদেশে কোনও টি ২০ লিগ খেলতে চাইলে ক্রিকেটারদের নিজেদেরই যাবতীয় হোমওয়ার্ক করতে হবে। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা যেমন দেশের মানুষের চোখে সুপারহিরো তেমনই তাঁরা কারও বাবা, স্বামী বা সন্তান। ফলে কী মানসিক চাপ যে যাচ্ছে সেটা অনুভব করছি। আমার ধারণা, এই পরিস্থিতিতে পড়ে তাঁদের যা শিক্ষা হলো তা তাঁরা ভুলবেন না। দেশে ফিরলে সকলকেই সহযোগিতা করা হবে। কারও কাউন্সেলিং প্রয়োজন হলে সেই ব্যবস্থাও আমরা করব। দেশে ফেরার নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় প্রায় ৯ হাজার অস্ট্রেলীয় যেমন দুশ্চিন্তায় পড়েছেন, তাঁদের মতোই ক্রিকেটাররাও চিন্তায় রয়েছেন।
(ছবি: বিসিসিআই/আইপিএল)

ফের তোপ স্ল্যাটারের
ভারত থেকে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় ফের অজি প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের উদ্দেশে তোপ দেগেছেন প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার তথা ধারাভাষ্যকারের ভূমিকায় আইপিএলে আসা মাইকেল স্ল্যাটার। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সাধারণ জ্ঞানকে কটাক্ষ করে স্ল্যাটার টুইটারে এদিন লেখেন, দেশের কয়েক হাজার মানুষ তাঁর সরকারের সিদ্ধান্তের ফলে যে কী বিপদে পড়েছেন তা বুঝছেন না প্রধানমন্ত্রী! নিজে প্রাইভেট জেটে এসে দেখে যান রাস্তায় মানুষের মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। আপনার সরকারই আমাকে কাজ করার অনুমতি দেওয়ায় আমি আমার সন্তানদের জন্য, সংসার চালানোর জন্য উপার্জন করতে এসেছি। পাশাপাশি ভারত তথা ভারতীয়দের প্রতি ভালোবাসা ব্যক্ত করে এই সঙ্কট কাটার প্রার্থনাও করেছেন তিনি। এর আগে, মরিসনের হাতে রক্ত লেগে রয়েছে বলে তীব্র বিষোদ্গার করেছিলেন স্ল্যাটার।
(ছবি: বিসিসিআই/আইপিএল)

নিউজিল্যান্ডের দুই ভাগ
অস্ট্রেলিয়ার মতো নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটাররাও আপাতত আটকে রয়েছেন ভারতেই। কোচ, সাপোর্ট স্টাফ মিলিয়ে ১৭ জন। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান হিথ মিলস জানিয়েছেন, ইংল্যান্ডে ভারত-সহ বিভিন্ন দেশ থেকে সে দেশে ঢোকার যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তা পুনর্বিবেচনা করা হবে আগামী সপ্তাহ নাগাদ। ফলে ১১ তারিখ অবধি ইংল্যান্ডে প্রবেশের কোনও সম্ভাবনা নেই। তাই অন্তত ১০ মে অবধি ভারতেই থাকবেন নিউজিল্যান্ডের যে ক্রিকেটাররা ইংল্যান্ড যাবেন টেস্ট খেলতে। তাঁরা হলেন কেন উইলিয়ামসন, ট্রেন্ট বোল্ট, মিচেল স্যান্টনার, ট্রেনার ক্রিস ডোনাল্ডসন, ফিজিও টমি সিমসেক। ৯ জুন থেকে শুরু হতে চলা টি ২০ ব্লাস্ট খেলতে যাঁরা ইংল্যান্ডে যাবেন তাঁরা হলেন লকি ফার্গুসন, জিমি নিশাম ও ফিন অ্যালেন। উইলিয়ামসন হান্ড্রেডেও খেলবেন। দেশে ফিরবেন স্টিফেন ফ্লেমিং, ব্রেন্ডন ম্যাকালাম, কাইল মিলস, শেন বন্ড, মাইক হেসন, টিম সেইফার্ট, অ্যাডাম মিলনে, জেমস পামেন্ট ও স্কট কুগলেইজন। এঁদের মধ্যে কয়েকজনকে ফ্র্যাঞ্চাইজিরা চার্টার্ড বিমানে দেশে ফেরাতে পারেন। তবে ভারত থেকে এখন বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় সকলে এই মুহূর্তেই নিউজিল্যান্ডে ফিরতে পারছেন না।
(ছবি: বিসিসিআই/আইপিএল)