বিশ্বকাপে আবারও মুখোমুখি আর্চ রাইভাল ভারত-অস্ট্রেলিয়া, কার পাল্লা ভারী?
এবার কার ভাগ্যে শিঁকে ছিঁড়বে, তা জানতে মুখিয়ে আছে ক্রিকেট বিশ্ব। তবে ম্যাচ যে পয়সা উসুল সুলভ হবে, তেমনটাই কিন্তু বিশ্বাস করেন দুই দলের ফ্যানরা।
আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে চলতি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের যে মাঠে মুখোমুখি হতে চলেছে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া, সেই ঐতিহাসিক ওভালেই ১৯৯৯-র বিশ্বযুদ্ধে আজহারুদ্দিনের নীল বাহিনীকে ৭৭ রানে হারিয়েছিল স্টিভ ওয়ার হলুদ শিবির।
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৩। দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে অজিদের বিরুদ্ধে ওই হারের বদলা নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের টিম ইন্ডিয়া। কিন্তু সেই ম্যাচে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভারতের নৌকা ভরাডুবির সম্মুখীন হয়েছিল। আবার সেই টুর্নামেন্টেই ওই অপমানের সমুচিত জবাব দেওয়ার মোক্ষম সুযোগ পেয়েছিল দাদা বাহিনী। কিন্তু ২৩ মার্চের সেই ফাইনালে ১২৫ রানের লজ্জাজনক হার আজও ভুলতে পারেনি ভারতের ক্রিকেটপ্রেমীরা।
সাল ২০১১। ১৫ বছর পর আবারও উপ-মহাদেশে হওয়া বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। গুজরাতের আহমেদাবাদের ওই ম্যাচে ৫ উইকেটে জিতে অবশেষে এত বছরের জ্বালা জুড়িয়েছিল মহেন্দ্র সিং ধোনি নেতৃত্বাধীন ভারত। এত সহজে অপমান সহ্য করার মতো ক্রিকেট খেলিয়ে দেশ তো ছিল না অস্ট্রেলিয়াও। চার বছর পর ঘরের মাঠে হওয়া বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে সেই ধোনি ব্রিগেডকে ৯৫ রানে হারিয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়েছিল ক্যাঙারু শিবির।
এবার কার ভাগ্যে শিঁকে ছিঁড়বে, তা জানতে মুখিয়ে আছে ক্রিকেট বিশ্ব। তবে ম্যাচ যে পয়সা উসুল সুলভ হবে, তেমনটাই কিন্তু বিশ্বাস করেন দুই দলের ফ্যানরা। ম্যাচে লড়াই যে তুল্যমূল্য হবে, সে ব্যাপারে কারো মনে কোনো সন্দেহ নেই।
বল বিকৃতি কাণ্ডে এক বছর আগে নির্বাসিত হওয়া স্টিভ স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নারের অনুপস্থিতি, অজিদের পারফরম্যান্সে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। দীর্ঘদিনের ব্যাডপ্যাচ কাটিয়ে চলতি বছরের শুরুতে ভারত ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজ জয়, অস্ট্রেলিয়াকে নতুন জীবন দান করে। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে অজি শিবির। বিশ্বকাপের মুখেই নির্বাসন কাটিয়ে স্মিথ ও ওয়ার্নারের অন্তর্ভূক্তি অস্ট্রেলিয়া দলকে যে ফাঁক-ফোকরহীন করেছে, তা একবাক্য স্বীকার করে নিয়েছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা।
আইপিএল এবং আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে এই বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ম্যাচে ওয়ার্নারের ধামাকাদার পারফরম্যান্স প্রমাণ করেছে, তাঁর ব্যাটে ঘুন ধরেনি। অন্যদিকে, গত ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে স্মিখের ম্যাচ সেভিং ইনিংস, আরো একবার প্রাক্তন অজি অধিনায়কের ক্লাস বড়াই করেছে। সেই সঙ্গে মিচেল স্টার্ক, নাথান কুল্টার-নাইল, প্যাট কমিন্সের সমন্বয়ে তৈরি অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল ছয় বারের জন্য বিশ্বকাপ ঘরে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে বলেই মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে একদিনের সিরিজ হারলেও সেই অভিজ্ঞতাকেই ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের হাই-ভোল্টেজ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে কাজে লাগাতে চাইছে বিরাট কোহলির ভারত। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, লন্ডনের ওভালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তো বটেই, সার্বিক ভাবে ভারতের জয়ের গ্রাফ কিন্তু নিম্নমুখী। যদিও সেসব কচকচানিতে ঢুকে চাপ বাড়াতে রাজি নন ভারতের ক্রিকেট প্রেমীরা। ভারতের মতো ব্যালেন্সড দল এবারের বিশ্বকাপে আর নেই বলেই দাবি সমর্থকদের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে টিম ইন্ডিয়ার অল-রাউন্ড পারফরম্যান্সে উচ্ছ্বসিত ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরাও।
দুই দলের কিছু সমস্যা
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ম্যাচে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের হতাশাজনক প্রদর্শন, অস্ট্রেলিয়া শিবিরের চিন্তার কারণ। অন্যদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ওপেনার শিখর ধাওয়ান ও অধিনায়ক বিরাট কোহলির তাড়াতাড়ি ফিরে যাওয়া নিয়ে কিছুটা হলেও চিন্তায় টিম ইন্ডিয়া ব্রিগেড।
কি ফ্যাক্টর
ওভালের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কি-ফ্যাক্টর যদি স্টিভ স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার হন তবে ভারতের বাজি বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা এবং অবশ্যই মহেন্দ্র সিং ধোনি।
তরুণ ব্রিগেড
হার্দিক পাণ্ডিয়া, কেএল রাহুল, কুলদীপ যাদব, যুজবেন্দ্র চাহলদের পারফরম্যান্স এই কনটেস্টে অস্ট্রেলিয়ার থেকে ভারতকে কিছুটা হলেও এগিয়ে রেখেছে বলে মত ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের।
[আরও পড়ুন:বিশ্বকাপ ফ্যান্টাসি প্রোমো ক্যাম্পেন, ভবিষ্যদ্বাণী করুন ও নগদ জিতুন ]