ব্রাউন ওয়াশ সম্পূর্ণ! রানে ফিরলেন গব্বর, শেষ বলে হারল ওয়েস্ট ইন্ডিজ
চেন্নাইয়ে ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ তৃতীয় টি২০আই ম্যাচে ৬ উইকেটে জিতল ভারত।
চেন্নাইয়ে তৃতীয় তথা সিরিজের শেষ টি২০আই ম্যাচে একেবারে শেষ বলে নাটকীয় জয় পেল ভারত। প্রথমে ব্যাট করে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৮১ রান তুলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাবে দীর্ঘদিন পর শিখর ধাওয়ানের ব্যাটে বড় রান (৬২ বে ৯২) ও ঋষভ পন্থের প্রথম টি২০আই অর্ধশতরান (৩৮ বলে ৫৮)-র সুবাদে রানটা সহজেই তোলার পথে ছিল ভারত।
কিন্তু শেষ ২ ওভারে দুজনেই আউট হয়ে যাওয়ায় ম্যাচ জমে যায়। শেষ পর্যন্ত মনীশ পান্ডের (৬ বলে ৪*) ব্যাটে আসে জয়ের রান। প্রথম টি২০আই অর্ধশতান পেলেন পন্থও (৩৮ বলে ৫৮)। ভারত জিতল ৮ উইকেটে।
এদিন কিন্তু রান তাড়া করতে নেমে ভারতের ইনিংসে প্রথম পাওয়ার প্লে-এর মধ্যেই প্যাভিলিয়নে ফিরে গিয়েছিলেন রোহিত শর্মা (৬ বলে ৪) ও কেএল রাহুল (১০ বলে ১৭)। কিমো পলের একটি স্লোয়ার না বুঝতে পেরে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ভারত অধিনায়ক। আর থমাসের বল রাহুলের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে জমা হয় উইকেটরক্ষকের হাতে।
স্কোরকার্ডে বড় রান তোলার পর শুরুতেই এই সাফল্যে দারুণ উৎসাহ পেয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলাররা। কিন্তু সিরিজের একেবারে শেষ ম্যাচে এসে রানে ফিরলেন গব্বর। একদিনের ম্য়াচে রান না পাওয়ার পর টি২০ ,সিরিজেও শিখর ধাওয়ানকে চেনা ছন্দে পাওয়া যাচ্ছিল না। এদিন ৮ ইনিংস পর অর্ধশতরান পেলেন তিনি।
অর্ধশতরানের পরই পাওয়া মারতে শুরু করেন। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দেন ঋষভও। দুজনে জুটিতে ১৩০ রান যোগ করে ভারতের রান ৫.২ ওভারে ৪৫/২ থেকে ১৮.২ ওভারে ১৭৫/২ তে নিয়ে যান। সেখান থেকে আর বাকি ১০ বলে ভারতের জেতার জন্য ৭ রান প্রয়োজন ছিল।
কিন্তু এরপরই প্রথমে ১৯ তম ওভারে কিমো পলের বলে পন্থ আউট হয়ে যান। পন্থের অউটের পর ক্রিজে এসেছিলেন মনীশ পাণ্ডে। শেষ ওভারে বাকি ছিল ৫ রান। বল করতে আসেন ফাবিয়ান অ্যালেন। শেষ ২ বলে ১ রান দরকার এই অবস্থায় অফ স্টাম্পের বাইরের একটি বলে ছয় মারতে গিয়ে লঙ অনে পোলার্ডের হাতে ধরা পড়েন। তবে মনীশ পাণ্ডে শেষ মিড অনে বল ঠেলে ভারতকে ম্যাচ জেতান।
এদিন টসের সময় ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ব্রেথওয়েট জানিয়েছিলেন তাঁরা সম্মান রক্ষার্থে খেলবেন। শেষ পর্যন্ত জিততে না পারলেও সিরিজের শেষ ম্যাচে অন্তত তুল্যমূল্য লড়াই করলেন তাঁরা।
শুরুর দু-এক ওভার দেখে খেলে তারপর হাত খুলতে শুরু করেছিলেন দুই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওপেনার। প্রথম পাওয়ার প্লেতে তারা বিনা উইকেটে ৫১ রান তুলে দেন। কিন্তু পাওয়ার প্লে শেষ হতেই আঘাত হানেন চাহাল।
কুলদীপের জন্য প্রথম দুই টি২০আইতে তিনি সুযোগ পাননি। এদিন চাহালই ভারতের পক্ষে সেরা বোলিং করেন। ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। প্রথমে শাই হোপ (২২ বলে ২৪), ও পরে ভয়ঙ্কর হয়ে ওটার মুখে হেতমিয়ার (২১ বলে ২৬)-কে ফিরিয়ে দেন তিনি।
এদিন চাহাল ছাড়াও ভারতীয় দলের প্রথম এগারোয় সুযোগ পেয়েছিলেন চেন্নাইয়ের ঘরের ছেলে ওয়াশিংটন সুন্দর। প্রথম দিকে বেশ মারও খেয়েছিলেন। দীনেশ রামদিন (১৫ বলে ১৫) তাঁকে একটি ছয় মারার পরও শেষ হাসিটা কিন্তু তিনিই হাসেন। রামদিনের ব্যাটের নিটের কানায় লেগে বল স্টাম্প ভেঙে দেয়।
এরপর পোলার্ডের বদলে ক্রিজে এসেছিলেন বাঁহাতি নিকোলাস পুরান। অভিজ্ঞ ডারেন ব্রাভোর (৩৭ বলে ৪৩*) সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংসকে তিনিই টেনে নিয়ে যান। ১৫ ওভারে তারা পৌঁছেছিল ১১৭/৩-এ। শেষ দিকে সংহারক মুর্তি ধারন করেন পুরান।
ভূবনেশ্বর কুমারকে ২টি ও চাহালকে সুইচ হিটে ১টি ছয় মারেন তিনি। খলিল আহমেদ তাঁর প্রথম ৩ ওভারে দিয়েছিলেন মাত্র ১৪ রান। কিন্তু তাঁর করা শেষ ওভার থেকে ব্রাভো ও পুরান মিলে ২৩ রান যোগ করেছিলেন।
এদিনের ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় অবশ্যই শিখর ধাওয়ান। শেষ ম্যাচে না খেলেই সিরিজ সেরা হলেন কুলদীপ যাদব।