অ্যাডিলেডের পাল্টা অকল্যান্ড, বিপর্যয়ের শিক্ষাই মোতেরায় বিরাটের তুরুপের তাস
এখনও অবধি টেস্ট ক্রিকেটে দুবার গোলাপি বলে খেলেছে ভারত। ইডেনে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বড় জয় পেলেও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অ্যাডিলেডে বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হচ্ছে। মোতেরায় গোলাপি বলে টেস্ট খেলার আগেও তাই বারেবারেই আলোচনায় উঠে আসছে ৩৬ রানে অল আউটের ঘটনা। ইংল্যান্ড শিবির যখন অ্যাডিলেডের কথা সামনে এনে ভারতকে মানসিকভাবে চাপে ফেলতে চাইছে তেমনই অনেকে সামনে আনছেন গত বছর রুটের ইংল্যান্ডেরই অকল্যান্ড টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৫৮ রানে অল আউটের ঘটনা। নিউজিল্যান্ডের কাছে সেই টেস্টে ইনিংসে হারে ইংল্যান্ড।

তবে এই পরিসংখ্যানকে গুরুত্ব দিতে নারাজ ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। তাঁর কথায়, দুই দলের কাছেই এটা খারাপ অভিজ্ঞতা। ইংল্যান্ডকে কেউ যদি পাল্টা প্রশ্ন করে আবার ৫০-এ অল আউট হওয়ার আশঙ্কা করছে কিনা তাহলেও উত্তর 'না' আসবে। কোনও দিন এমন কিছু ঘটে যাতে শত চেষ্টা করা সত্ত্বেও পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যায়। ঠেকানো যায় না। আমাদের যেটা হয়েছিল অ্যাডিলেডে। যে টেস্টে আমরা দাপট নিয়ে খেলছিলাম শুধু ৪৫ মিনিট খারাপ খেলায় ওই ফল হয়েছে। তবে গোলাপি বলে খেলার ক্ষেত্রে আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। সিম সহায়ক উইকেটেও আমরা গোলাপি বলের টেস্টে অজিদের উপর চাপ তৈরি করেছিলাম। ওইদিন কী কী ভুল হয়েছিল তা আমরা বুঝতে পারি, শুধরে নিই। ফলে ওইরকম পরাজয় যে আমাদের দলের ক্রিকেটারদের মনে কোনও দাগ ফেলতে পারেনি বা বাধা তৈরি করেনি তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে পরের মেলবোর্ন টেস্টেই। শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে চলেছি বলেই আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছিলাম।
গোলাপি বলের টেস্টে সাফল্যের কৌশলও ঠিক করে ফেলেছেন বিরাট। তাঁর কথায়, লাল বলের চেয়ে গোলাপি বলে বেশি স্যুইং হয়। যে কোনও পিচে তাই এই বলে খেলা চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে গোধূলির পর এক থেকে দেড় ঘণ্টা। বল যতক্ষণ ভালো থাকে, রং উজ্জ্বল থাকে তখন অবধি জোরে বোলাররা সাফল্য পেতেই পারেন। আলো জ্বললে খেলা অনেকটা টেস্টের প্রথম সেশনে ব্যাট করার মতো। যতক্ষণ সূর্য থাকে ততক্ষণ সমস্যা নেই। কিন্তু আলো জ্বললে বল দেখতেও কিছুটা অসুবিধা হয়। স্যুইং বেশি হয়, এর সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিতে হবে। আলো জ্বলার আগে ভালো খেললেও গোধূলির সময় থেকে আরও বেশি সতর্কতার সঙ্গে খেলতে হবে। একইভাবে বোলারদের আলো জ্বলার আগে সঠিক লাইন, লেংথে বল করতে হবে যাতে বিপক্ষ বেশি রান করতে না পারে। আলো জ্বললে বোলাররা আরও বেশি আক্রমণে যেতে পারেন, এই টেস্টেও তার ব্যতিক্রম হবে না।
পরিসংখ্যান বলছে, ১৫টি দিন-রাতের টেস্টে পেসারদের ঝুলিতে গিয়েছে ৩৫৪টি উইকেট, স্পিনাররা পেয়েছেন ১১৫ উইকেট। মোতেরার উইকেটে অল্প হলেও ঘাস রয়েছে। তবে স্পিনাররা যাতে বেশি সুবিধা পান সেটি মাথায় রেখেই উইকেট তৈরি হয়েছে। সৈয়দ মুস্তাক আলি টি ২০-তেও এখানে টার্নিং ট্র্যাক ছিল। তবু পেসাররাও এই পিচে গোলাপি বল হাতে বিপজ্জনক হয়ে উঠতেই পারেন।
