এই প্রথম নিজের শহরে টেস্ট খেলবেন ভারতের তারকা, ইয়র্কার রপ্ত করেছেন যে কৌশলে
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভারতীয় দলে অভিষেক হয়েছে ২০১৬ সালে। ২০১৮ সালে টেস্ট অভিষেক। ১৮টি টেস্ট খেলেছেন, ৬৭টি একদিনের আন্তর্জাতিক ও ৫০টি টি ২০ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা। ইশান্ত শর্মা মনে করবেন, তাঁর অবসরের পর দেশকে বল হাতে সার্ভিস দিতে যে জোরে বোলার সবচেয়ে এগিয়ে তিনি জশপ্রীত বুমরাহ। ইশান্তের শততম টেস্ট বিশেষ কারণে স্মরণীয় হতে চলেছে বুমরাহ-র কাছে।
চেন্নাইয়ে দ্বিতীয় টেস্টে বিশ্রামে থাকা বুমরাহ ফের আসছেন প্রথম একাদশে। গোলাপি বলে দিন-রাতের টেস্টে। মোতেরায় কয়েক বছর ধরে সংস্কারের কাজ চলছিল। ফলে নিজের শহরে এই প্রথম টেস্ট তো বটেই, আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ জশপ্রীত বুমরাহ-র কাছে। দর্শকাসনে থাকবেন তাঁর পরিবারের লোকজন, বন্ধুবান্ধবরা। ১ লক্ষ ১০ হাজারের দর্শকাসনের ৫০ শতাংশ আসনে দর্শক থাকবেন। নরেন্দ্র মোদী, ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে তারকাখচিত উদ্বোধনের এক বছর পর হচ্ছে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ। তাই ৫০ হাজারের বেশি দর্শক মাঠে থাকবেন। তাঁদের সামনেই ঘরের মাঠে প্রথম ম্যাচে বুমরাহ বিরাট কোহলির অন্যতম সেরা অস্ত্র।
নজর থাকবে জশপ্রীত বুমরাহ-র সঙ্গে জেমস অ্যান্ডারসেনর দ্বৈরথের দিকে। ২০১৮-র ইংল্যান্ড সফরে বুমরাহ ১৪টি উইকেট পান, তবে ভারত সিরিজ ১-৪ ব্যবধানে হেরে ফেরে। ওই সিরিজে ৫ টেস্টে অ্যান্ডারসন নিয়েছিলেন ২৪ উইকেট। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ অ্যান্ডারসন বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলার হিসেবে পরিচিত। বুমরাহও অল্প সময়ের মধ্যে বিপক্ষের সমীহ আদায় করে নিয়েছেন। তাঁর সামনে লম্বা কেরিয়ার পড়ে। চলতি সিরিজেও দ্বৈরথে বুমরাহ-র চেয়ে এগিয়েই আছেন অ্যান্ডারসন। তবে নিজের শহরে তাঁকে বুমরাহ ছাপিয়ে যেতে পারেন কিনা সেদিকে তাকিয়ে অনেকেই।
ছোটবেলায় ঘরের মধ্যে বোলিং করতেন, দেওয়ালে বল করতেন বলে মায়ের বকা খান বুমরাহ। আওয়াজ হতো। আওয়াজ কম করলে ঘরে বল করা যাবে বলে সাফ জানিয়েছিলেন মা। বুমরাহও সেই সুযোগ হাতছাড়া করেননি। মেঝে যেখানে দেওয়ালে মিশছে সেখানে টার্গেট করে বল করতে থাকেন টানা। এতেই ইয়র্কার হয়ে ওঠে বুমরাহ-র সেরা অস্ত্র। আমেদাবাদের নির্মাণ হাই স্কুলে পড়েছেন। এই স্কুলের প্রাথমিক বিভাগের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন বুমরাহ-র মা। বাবাকে জশপ্রীত হারিয়েছেন যখন তাঁর বয়স সাত। মা ছেলেকে বড় করেছেন। বুমরাহও গাড়ি নিয়ে মাকে আনতে যেতেন স্কুলে। করোনার পর সেভাবে যাননি, মা অবসরও নিয়েছেন। তবে তাঁর স্কুলের শিক্ষকরা জানিয়েছেন অতীত দিনের কথা। নির্মাণ হাই স্কুলেই প্রথম ক্রিকেটের প্রেমে পড়া। তাই কখনও একা, কখনও বন্ধুদের নিয়ে স্কুলের সামনে গাড়ি দাঁড় করিয়ে অতীত স্মৃতিতে ডুব দেন জশপ্রীত।
১৩ বছর বয়সে কিশোর ত্রিবেদী আকাদেমিতে ভর্তি হন। তাঁর বোলিং অ্যাকশন নিয়ে অনেক অভিভাবক আপত্তি করতেন। কিন্তু অ্যাকশন অন্যরকম হলেও চাকিংয়ের অভিযোগ মানতে চাননি কোচ সিদ্ধার্থ ত্রিবেদী। অনেকে বলতেন, এ এতো জোরে বল করে তো মেরে ফেলবে! বুমরাহ-র কোচ তাঁর পাশেই থেকেছেন। যুক্তি ছিল ক্রিকেটার হতে গেলে সব চ্যালেঞ্জ সামলাতে হয়। বুমরাহ নিজের শহরে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার আগে তাঁর জন্য গর্বিত সকলেই। অনেকে মাঠেও যাবেন বুমরাহ-র জন্য গলা ফাটাতে।