দেশের মাটিতে ৮ বছরে সব টেস্ট সিরিজ জিততে ভারতের দরকার ৫ উইকেট, নজির অশ্বিনের
মুম্বই টেস্টে লজ্জাজনক পরাজয়ের সামনে বিশ্বের ১ নম্বর তথা টেস্টের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ড। বিরাট কোহলির ভারত কিউয়িদের ফলো অন করালে তিন দিনেই শেষ হয়ে যেত টেস্ট। ভারত ব্যাটিং প্র্যাকটিস সেরে নেওয়া সত্ত্বেও টেস্ট তথা সিরিজের যবনিকা পড়তে পারে কাল চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনেই। জিততে নিউজিল্যান্ডের দরকার ৪০০ রান! ভারতের সিরিজ জিততে দরকার ৫ উইকেট।
সিরিজ জয় ৫ উইকেট দূরে
আজ ৭ উইকেটে ২৭৬ রান তুলে দ্বিতীয় ইনিংস ভারত ডিক্লেয়ার করার পর জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডের টার্গেট দাঁড়ায় ৫৪০। চা বিরতিতে নিউজিল্যান্ডের স্কোর ছিল ১ উইকেটে ১৩। তৃতীয় সেশনে আরও চারটি উইকেট হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। তৃতীয় দিনের শেষে কিউয়িদের স্কোর ৪৫ ওভারে ৫ উইকেটে ১৪০ রান। সাতটি চার ও দুটি ছয়ের সাহায্যে ৯২ বলে সর্বাধিক ৬০ রান করেছেন ড্যারিল মিচেল। টম লাথাম ৬, উইল ইয়ং ২০, রস টেলর ৬ ও টম ব্লান্ডেল শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন। হেনরি নিকোলস ৮৬ বল খেলে ৩৬ রানে অপরাজিত রয়েছেন। ২৩ বলে ২ রান করে অপরাজিত রয়েছেন রাচিন রবীন্দ্র।
অশ্বিনের নজির
রবিচন্দ্রন অশ্বিন সাতটি মেডেন-সহ ২৭ রান দিয়ে ৩টি উইকেট পেয়েছেন। সেই সুবাদে চলতি বছরে টেস্টে সর্বাধিক উইকেটশিকারী অশ্বিন ৮টি টেস্টে ইতিমধ্যেই ঝুলিতে পুরেছেন ৫১টি উইকেট। অনেক পিছনে শাহিন শাহ আফ্রিদি (৯ টেস্টে ৪৪ উইকেট)। অশ্বিনকে ইংল্যান্ডে চারটি টেস্টে খেলানো হয়নি। তা সত্ত্বেও এই নিয়ে কেরিয়ারে চতুর্থবার ক্যালেন্ডার ইয়ারে ৫০ বা তার বেশি উইকেট পেলেন অশ্বিন (২০১৫, ২০১৬, ২০১৭, ২০২১)। অনিল কুম্বলে (১৯৯৯, ২০০৪ ও ২০০৬) এবং হরভজন সিং (২০০১, ২০০২, ২০০৮) তিনবার এই নজির গড়েছেন। অক্ষর প্যাটেল এদিন ১টি উইকেট পান। টম ব্লান্ডেল রান আউট।
অপ্রতিরোধ্য ভারত
২০১২ সালে ভারত ইংল্যান্ডের কাছে শেষবার দেশের মাটিতে টেস্ট সিরিজে পরাজিত হয়েছিল। চার টেস্টের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জেতে ইংল্যান্ড। যদিও ২০১৩ সাল থেকে আর দেশের মাটিতে ভারত টেস্ট সিরিজে হারেনি। ২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়াকে চার টেস্টের সিরিজে ৪-০ ব্যবধানে হারায়। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জেতে ভারত, দুই টেস্টের সিরিজের শেষ টেস্টটি ছিল সচিন তেন্ডুলকরের শেষ টেস্ট।
ক্যাপ্টেন বিরাট দেশে অপরাজেয়
বিরাট কোহলির নেতৃত্বে ভারতের প্রথম হোম টেস্ট সিরিজ ছিল ২০১৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে। প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে সেই চার টেস্টের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতে ফ্রিডম ট্রফির দখল নেয় ভারত। ২০১৬ সালে নিউজিল্যান্ড ভারতে এসে তিন টেস্টের সিরিজের তিনটিতেই পরাজিত হয়। ওই বছরই দেশের মাটিতে ইংল্যান্ডকে পাঁচ টেস্টের সিরিজে ভারত হারায় ৪-০ ব্যবধানে। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ ভারতে এসে একটি টেস্ট খেলে, সেটিও জেতে ভারত। এরপর বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়াকে ভারত চার টেস্টের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে দেয়। বছরের শেষে দেশের মাটিতে শ্রীলঙ্কাকে তিন টেস্টের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে হারায় ভারত।
সিরিজ জয়ের ধারা অব্যাহত থাকছে
২০১৮ সালে অজিঙ্ক রাহানের নেতৃত্বে আফগানিস্তানকে একমাত্র টেস্টে হারানোর পর ওই বছরের শেষে দেশের মাটিতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২ টেস্টের সিরিজে ভারত হোয়াইটওয়াশ করে। ২০১৯ সালে ভারত সফরে এসে দক্ষিণ আফ্রিকা তিন টেস্টের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়ে ফেরে। ওই বছরই বাংলাদেশ ভারত সফরে এসে দুটি টেস্টের সিরিজে ০-২ ব্যবধানে পরাজিত হয়। চলতি বছর ভারত সফরে এসে ইংল্যান্ড প্রথম টেস্ট জেতার পরও সিরিজের বাকি তিন টেস্ট জিতে নিয়েছিল বিরাট কোহলির দল। এবার নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে মুম্বই টেস্ট জিতে দেশের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে ভারতের দরকার ৫ উইকেট।