ভারত করেছিল বঞ্চনা, আয়ারল্যান্ড দিল সম্মান, জেনে নিন লড়াকু সিমরনজিতের কাহিনি
পাঞ্জাবের জার্সিতে খেলেছেন অনুর্ধ্ব ১৪ ও অনুর্ধ্ব ১৭ -তে কিন্তু তারপর আর শিকে ছেঁড়েনি। তাই আজ দেশ ছেড়ে বিদেশের জার্সিতে ভাগ্য পরীক্ষায় পাঞ্জাবের সিমরনজিৎ।
সিমরনজিৎ, বা সিমি, ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই ক্রিকেটার হয়ত একদিন খেলবেন ভারতের বিরুদ্ধেই ।
না চমকে উঠবেন না। পাঞ্জাবের এই ছেলেটা ঘরোয়া ক্রিকেটে একদিন ছাপ ফেলেছিলেন। খেলেছেন অনুর্ধ্ব ১৪ অনুর্ধ্ব ১৭ দলে। রেখেছেন দারুণ পারফরম্যান্স। ২০০৪ সালে ঘরোয়া ক্রিকেটে ৭২৫ রান করেছিলেন এই সিমরনজিৎ। স্টেট ইন্টার ডিস্ট্রিক্ট অনুর্ধ্ব ১৭ চ্যাম্পিয়নশিপেও খেলেছিলেন তিনি। সব মিলিয়ে সঠিক ভাবেই এগোচ্ছিল সিমি-র ক্রিকেট কেরিয়ার।
কিন্তু এরপরেও অনুর্ধ্ব ১৯ ক্রিকেট দলে আর তাঁকে ডাকা হয়নি। অদ্ভুতভাবে পিছিয়ে পড়েন সিমরনজিৎ। সেসময় তাঁর পরিবার সিদ্ধান্ত নেয় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হবে আয়ারল্যান্ডে। ভারতীয় ক্রিকেটে অবশ্য ভুরি ভুরি এরকম উদাহরণ আছে। পাঞ্জাবেরই গুরিন্দর সান্ধু অস্ট্রেলিয়ায় চলে গেছেন, নিউজিল্যান্ডে খেলছে ইশ সোধি।
তবে ইতিমধ্যেই আইরিশ ক্রিকেটার হিসেবে নিজের অনেকটা সফর এগিয়ে নিয়ে গেছেন সিমরনজিৎ। আয়াল্যান্ডের একদিনের দলে নাম তুলে ফেলেছেন এই ভারতীয় বংশোদ্ভুত। এখন তাঁর স্বপ্ন টেস্ট স্বীকৃতি পাওয়া আয়ারল্যান্ডের হয়ে টেস্ট খেলা।
তবে লড়াইয়ের দিনগুলি আজও ভোলেননি সিমরনজিৎ ও তাঁর পরিবার। সিমরনজিতের বাবা অমরজিৎ সিং জানিয়েছেন ২০০১ সালে বিজওয়াড়ায় হওয়া ন্যাশানাল স্কুল গেমসে সেরা ক্রিকেটার হয়েছিলেন তিনি। তারপরও সুযোগ পাননি।
সিমিও বলেছেন, 'ভারতের জার্সি গায়ে খেলার স্বপ্ন কুঁড়িতেই বিনষ্ট হয়ে যায়। আমার ও আমার পরিবারের জন্য সেটা খুব কঠিন সময় ছিল।' তাঁর কোচ জানিয়েছেন ব্যাটিং টেকনিকের দিক থেকে খুবই ভাল প্লেয়ার সিমরনজিৎ।
২০০৫ সালে আয়ারল্যান্ডে হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়তে চলে গিয়েছিলেন সিমরনজিৎ। সেখানে সপ্তাহান্তে ক্রিকেট খেলতে ম্যাচ প্রতি পাঁচ পাউন্ড করে দিতে হত। দোকানে কাজ করে ক্রিকেট খেলার সেই টাকা রোজগার করতেন তিনি।
সেই কঠিন পথ চলা আজ সুফল নিয়ে এসেছে। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপানোর সুযোগ পেয়েছেন তিনি। সিমি ইতিমধ্যে ইসিবি-র লেভেল টু কোচিংও করে ফেলেছেন। যাতে ওই দেশে তিনি থাকতে পারেন। অন্য দিকে মে মাসে আয়ারল্যান্ডের নাগরিকত্ব পেয়ে গেছেন সিমরনজিৎ।