টি ২০ বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে ইমরানের বিরাট বার্তা! ১৯৯২ কি মেলবোর্নে ফেরাতে পারবেন বাবর?
বিশ্বকাপের ফাইনালে পাকিস্তান বনাম ইংল্যান্ড। ৩০ বছর পর ঠিক এমনই পরিস্থিতি। পাকিস্তান ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ জিতেছে মাত্র একবারই, খাদের কিনারা থেকে উঠে এসে ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ ইমরান খানের দল জিতেছিল মেলবোর্নে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে। টি ২০ বিশ্বকাপ অবশ্য দ্বিতীয়বার জেতার হাতছানি রয়েছে পাকিস্তানের সামনে। এবারও ইংল্যান্ডই তাদের প্রতিপক্ষ, সেই মেলবোর্নেই।
|
বিরানব্বই ফিরবে বাইশে?
১৯৯২ সালের ২৫ মার্চ এমসিজিতে ফাইনালে চার বল বাকি থাকতেই ইংল্যান্ডকে ২২ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পাকিস্তান। তিনে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক ইমরান খান ১১০ বলে ৭২ রান করেছিলেন। সেই সঙ্গে জাভেদ মিয়াঁদাদের ৫৮, ইনজামাম উল হকের ৩৫ বলে ৪২ ও ওয়াসিম আক্রমের ১৮ বলে ৩৩ রানের দৌলতে পাকিস্তান পৌঁছেছিল ৬ উইকেটে ২৪৯ রানে। জবাবে ৪৯.২ ওভারে ২২৭ রানে গুটিয়ে যায় গ্রাহাম গুচের দল। ৪৯ রানে তিন উইকেট নেন আক্রম। মুস্তাক আহমেদ ৪১ রানের বিনিময়ে তিনটি উইকেট নিয়েছিলেন। আকিব জাভেদ পেয়েছিলেন ২ উইকেট। ইমরান ৬.২ ওভারে ৪৩ রান খরচ করে নিয়েছিলেন ১ উইকেট।
|
অনেক মিল
১৯৯২ সালের বিশ্বকাপের মতো এবারের টি ২০ বিশ্বকাপেও পাকিস্তানের শুরুটা ভালো হয়নি। ১৯৯২ সালে পাকিস্তান ৮ ম্যাচে চারটিতে জিতে ৯ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার চারে থেকে সেমিফাইনালে উঠেছিল। নিউজিল্যান্ড ১৪, ইংল্যান্ড ১১ ও দক্ষিণ আফ্রিকা ১০ পয়েন্ট নিয়ে শেষ চারে যায়। সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়ে পাকিস্তান ফাইনালে উঠেছিল। এবারের টি ২০ বিশ্বকাপের ফাইনালেও পাকিস্তান উঠেছে কিউয়ি বধ সেরেই। ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে পাকিস্তান অভিযান শুরু করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ১০ উইকেটে হেরে। এর পরের ম্যাচে হারায় জিম্বাবোয়েকে। বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছিল পাকিস্তান-ইংল্যান্ড ম্যাচ। চতুর্থ ম্যাচে ভারতের কাছে হারে পাকিস্তান। পঞ্চম ম্যাচে পরাস্ত হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে। যদিও এরপর অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা ও নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে শেষ চারে জায়গা পাকা করেছিল ইমরান খানের দল। এবারও ভারত ও জিম্বাবোয়ের কাছে হেরে পাকিস্তান বিপাকে পড়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার অপ্রত্যাশিত বিদায় খুলে দিয়েছিল শেষ চারের দরজা। বাংলাদেশকে হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠে পাকিস্তান।
|
ছন্দে ফিরেছেন বাবর
পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম এবারের টি ২০ বিশ্বকাপে ছন্দ পাচ্ছিলেন না। ঠিক যেমনটা হয়েছিল ১৯৯২ সালে ইমরান খানের ক্ষেত্রেও। কিন্তু বড় প্লেয়াররা অপেক্ষা করেন বড় ম্যাচের। সেই আপ্তবাক্যটি সঠিক প্রমাণ করে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে দুরন্ত অর্ধশতরান করেছেন বাবর। তার আগে চলতি বিশ্বকাপে তাঁর রান ছিল যথাক্রমে ০, ৪, ৪, ৬ ও ২৫। পাকিস্তানের বিদায়ের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় অনেকে বাবরকে অধিনায়কের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তোলেন। যদিও সেই বাবরের হাত ধরেই ১৩ বছর পর ফের টি ২০ বিশ্বকাপ জিততে পারে পাকিস্তান।
|
ভূয়সী প্রশংসা ইমরানের
বাবর ও তাঁর দলকে উৎসাহিত করতে পারে ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খানের বার্তা। টকটিভি শো-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইমরান জানান, ২০১৯ সালের অক্টোবরে বাবরকে অধিনায়ক করার পরামর্শ তিনিই দিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, আমি তখন প্রধানমন্ত্রী। আমাদের ক্রিকেট দল খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। আমি বাবরকে খেলতে দেখেছিলাম দুবার। তখনই পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রধানকে বলি, বিশ্বমানের ক্রিকেটার বাবরকে অধিনায়ক করতে। নানা ভূমিকা পালনে পারদর্শী, সঠিক টেকনিক ও ভালো স্ট্রোকপ্লে-তে দক্ষ এবং ভালো টেম্পারামেন্টের অধিকারী বাবর সহজেই মন জিতে নিয়েছিলেন ইমরানের। তিনি নিশ্চিত ছিলেন, বাবরের হাত ধরেই আসবে সাফল্য। কেন না, বিশ্বমানের হলে তবেই সেই অধিনায়ক সম্ভ্রম আদায় করতে পারেন। ইমরান আরও বলেন, আমাদের দল ভালো খেলছে। ফাইনালও জেতার ক্ষমতা রয়েছে।