IPL 2022: কেন এত কম দাম পেলেন ওয়ার্নার, ডি কক, কী কারণে চাহারের মূল্য ১৪ কোটির উপর জেনে নিন বিস্তারে
কেন এত কম দাম পেলেন ওয়ার্নার, ডি কক, কী কারণে চাহারের মূল্য ১৪ কোটির উপর জেনে নিন বিস্তারে
পঞ্চদশ আইপিএল-এর জন্য আয়োজিত নিলামে একের পর এক অবাক করা বিড লক্ষ্য করা গিয়েছে। যেখানে দীপক চাহার, শার্দূল ঠাকুর, আভেষ খানের মতো ক্রিকেটারদের দর উঠেছে ১০ কোটির উপর সেখানে ট্রেন্ট বোল্ট, কাগিসো রাবাডা, মহম্মদ শআমিরা দশ কোটির ঘরে পৌঁছতে পারেনি। যেই নিলাম দেখেছে ঈশান কিষানকে ১৫.২৫ কোটি টাকায় দল পেতে সেই নিলামেই ডেভিড ওয়ার্নারে মতো বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা কারকা দল পেয়েছে ৭ কোটিরও কম দামে। কিন্তু কী কারণে এতটা হের ফর হল দরের। তারকাদের সঙ্গে আনকোরাদের দামের হের ফেরের পর্যালোচনা করে একাধিক কারণ উঠে আসছে।
কুইন্টন ডি কক এবং ডেভিড ওয়ার্নারের তুলনামূলক কম দাম:
মূলত তিনটি কারণে আইপিএল-এর মহা নিলামে প্রত্যাশিত দর পাননি ওয়ার্নারদের মতো তারকারা। প্রথমত, বিদেশি ব্যাটসম্যানদের সংখ্য়া অনেক বেশি ছিল এই নিলামে তাই ওয়ার্নার বা ডি ককের পিছনে খুব একটা দৌড়ায়নি ফ্রাঞ্চাইজিগুলি। দ্বিতীয়ত, প্রত্যেকটা দল নিলামের আগে যে ক্রিকেটারদের ধরে রেখেছিল তাতে সব দলের কাছেই একজন করে ওপেনার আগে থেকে মজুদ ছিল। ফলে দ্বিতীয় ওপেনারকে পাওয়ার জন্য ইঁদুর দৌড়ে নামতে চায়নি কেউই। তাই মার্কি সেটে ওয়ার্নর বা ডি ককের নাম ওঠায় শুরুতেই কারি টাকা খরচ করতে চায়নি কেউই, তৃতীয়ত এবং সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল ঈশান কিষান। ঝাড়খন্ডের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানের নাম নিলামে ওঠার অপেক্ষা ছিল বহু ফ্রাঞ্চাইজি। ঈশানকে নিয়ে দড়ি টানাটানি হয়েছে এ বারের নিলামেষ শেষ পর্যন্ত চোখ কপালে তোলা ১৫ কোটি ২৫ লক্ষ টাকায় মুম্বই ধরে রেখেছে নিজেদের পুরনো এই ক্রিকেটারকে।
সিমরন হেটমেয়ারের চোখ ধাঁধানো দাম:
এখানেও হিসেব সেই চাহিদা এবং যোগানের। ব্যাটিং অর্ডারে পাঁচ নম্বর পজিশনে প্রতিটা দলই এমন ক্রিকেটারের খোঁজে ছিল যে দারুণ ভাবে ইনিংস ফিনিশ করার ক্ষমতা রাখে। দ্রুত রান তোলার ক্ষমতা রাখা ক্রিকেটার মিডল অর্ডারে খুব কম রয়েছে। প্রতিটা দলই নিজেদের পান্ডিয়া, পোলার্ড, রাসেলের খোঁজে ছিল। কিন্তু নিলামে খুব বেশি ক্রিকেটার ছিলেন না যাঁরা এই ভূমিকা পালন করতে পারে। ফলে হেটমেয়ারের মতো ক্রিকেটার যখন নিলামে উঠবে তখন তাঁর পিছনে কারিকারি অর্থ উড়বে তা প্রত্যাশিত। পাঁচ নম্বরে বা তার নীচে ব্যাটিং করে ১৫০ উপর স্ট্রাইক রেট রয়েছে হেটমেয়ারের।
যে কারণে অশ্বিন-চহাল বড় দর পেলেন না:
এই দুই বোলারই আইপিএল-এর ইতিহাসে সর্বাধিক উইকেট সংগ্রহকারীর তালিকায় সেরা দশে রয়েছে। গত মরসুমে চহালের (১৮ উইকেট) থেকে বেশি উইকেট কোনও স্পিনার দখল করতে পারেননি। অপর দিকে, অশ্বিনের ইকোনমি রেট ছিল ৭.৪১ যা টি-২০ ক্রিকেটে যথেষ্ট কার্যকরী। কিন্তু এত ভাল পরিসংখ্যান হওয়া স্বত্ত্বেও এই দুই স্পেশ্যালিস্ট স্পিনারের বড় দর না পাওয়ার কারণ হল দলগুলির বোলিং অলরাউন্ডারের খোঁজ। ফ্রাঞ্চাইজিগুলি চেয়িছিল এমন স্পিনারকে যারা ৭ বা ৮ নম্বরে নেমে দ্রুত রান তোলারও ক্ষমতা রাখে। অশ্বিন বা চহাল কারোরই সেই দক্ষতা নেই এবং এই কারণেই বেশি দর পায়নি এই দুই স্পিনরা।
দীপক চাহারের অবিশ্বাস্য দর:
নিলামে পেসারদের চাহিদা বরাবরই ছিল। এই বার সেই চাহিদা আরও বেড়েছে। চোট আঘাত ছাড়া একাধিক সমস্যার কথা মাথায় রেখে স্কোয়াডে দলগুলির নূন্যতম পাঁচ থেকে ছয় জন কোয়ালিটি সিমার প্রয়োজন। কিন্তু যেই সিমার দ্রুত উইকেট তোলার পাশাপাশি ব্যাটও করতে পারে তাদের চাহিলা অনেক বেশি। কেউ যদি ৮ নম্বরে ব্যাটিং করতে নেমে ১৩০ বা তার উপর স্ট্রাইক রেটে খেলতে পারে, তা হলে তার জন্য দর যে বাড়বে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ফলে ১৪ কোটির বেশি মূল্য দল পেয়েছেন সিনিয়র চাহর।
জোফ্রা আর্চারের জন্য মুম্বইয়ের ইনভেস্টমেন্ট:
এই মরসুমে খেলতে পারবেন না জোফ্রা আর্চার। সেই কারণে যেই দামে আর্চারকে এই বছর পেয়েছে মুম্বই সেই দামে কখনওই পেত না। ফলে ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে আর্চারের জন্য ইনভেস্ট সঠিক সিদ্ধান্ত। ২০২৩ সালে প্রথম বার মুম্বইয়ের জার্সিতে আর্চার নামবেন আইপিএল-এ।
অজিঙ্ক রাহানের উপর ভরা কলকাতার:
কলকাতা নাইট রাইডার্স দারুণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে অজিঙ্ক রাহানেকে সই করিয়েছে। সাদা বলের ক্রিকেট থেকে তিনি দীর্ঘদিন দূরে থাকলেও তাঁর অভিজ্ঞতা সম্পদ যে কোনও দলের জন্য। পাশাপাশি অধিনায়ক হিসেবে অজিঙ্কর থেকে ভাল কেউ হতে পারে না কেকেআর-এর জন্য এই মুহূর্তে। তিনি যদি ছন্দে ফিরে পেতে পারেন তা হলে সব থেকে বড় জ্যাকপট রাহানেই হবে কেকেআর-এর জন্য।