উমরান মালিকের মতো পারি না! রাজকোটে দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের আগে কেন এমন মন্তব্য হর্ষল প্যাটেলের?
টি ২০ বিশ্বকাপে ভারতের ব্যর্থতার পর দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম সিরিজেই ভারতীয় দলে অভিষেক হয় হর্ষল প্যাটেলের। এখনও অবধি খেলেছেন ১১টি টি ২০ আন্তর্জাতিক। চলতি সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৬টি উইকেট-সহ তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ১৭টি উইকেট। টি ২০ আন্তর্জাতিকে তাঁর বোলিং গড় ১৯.৫২, স্ট্রাইক রেট ৮.৪৭। বিশাখাপত্তনমে যুজবেন্দ্র চাহাল তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা হলেও ওই ম্যাচেই ভারতের জয়ে অবদান রাখেন হরিয়ানার হয়ে খেলা ৩১ বছরের এই গুজরাতি পেসার।
হর্ষল দারুণ ফর্মে
গত বছরের আইপিএলে ১৫ ম্যাচে ৩২টি উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী হন হর্ষল প্যাটেল। এবারের আইপিএলে তিনি ১৫ ম্যাচে ১৯টি উইকেট দখল করেন। গড় ২১.৫৮। ইকনমি এ বছরের আইপিএলে ৭.৬৬, যা গত বছরের ৮.১৪-এর চেয়ে অনেকটাই ভালো। মাঝের ওভার কিংবা ডেথ ওভারে বিপক্ষ ব্যাটারদের বেঁধে ফেলার কাজটা ভালোভাবেই করছেন হর্ষল। চলতি সিরিজে ইতিমধ্যেই তিনটি ম্যাচে ৬টি উইকেট নিয়েছেন। দিল্লিতে ৪৩ রান ও কটকে ১৭ রানের বিনিময়ে একটি করে উইকেট নেওয়ার পর বিশাখাপত্তনমে হর্ষল আউট করেছিলেন রিজা হেন্ডরিক্স, ডেভিড মিলার, কাগিসো রাবাডা ও তাবরেজ শামসিকে। চারটি উইকেট তুলে নেন মাত্র ২৫ রান খরচ করে। যা তাঁর আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের সেরা বোলিং।
স্লো উইকেটে কার্যকরী
হর্ষলের বোলিং বেশি কার্যকরী দেখাচ্ছে স্লো উইকেটে। তাঁর স্লোয়ার ঠকাচ্ছে প্রোটিয়া ব্যাটারদেরও। নিজের সাধ্যের মধ্যে সেরাটা দেওয়াই লক্ষ্য হর্ষলের। আজ রাজকোটে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, বিগত দুই বছরে আইপিএলে বোলিংয়ের নিরিখে অনেকেই আমাকে বিচার করছেন। কিন্তু এটা অস্বীকারের উপায় নেই, কোনও বোলার যত বেশি ম্যাচ খেলবে তার শক্তি, দুর্বলতা এবং কেমন বোলিং করতে পারেন সেই সম্পর্কে সচেতন হয়েই রণকৌশল সাজায় বিপক্ষ দল। ফলে আমাকে সব সময়ই প্রতিপক্ষের ভাবনার চেয়ে এগিয়ে থাকতে হবে। ১৫ রকমের পরিকল্পনা থাকতেই পারে. কিন্তু কোনও দিন চাপের মুখে আত্নবিশ্বাসী থেকে পরিকল্পনামাফিক বোলিং করতে না পারলে কোনও লাভ নেই। ফলে কোনও মুহূর্তে যে ডেলিভারিটি আদর্শ হতে পারে সেটা করাতেই আমার ফোকাস থাকে।
'উমরানের মতো নই'
হর্ষল আরও বলেন, আমি জানি উমরান মালিকের মতো জোরে বোলিং করতে আমি পারব না। তবে এতে উদ্বিগ্ন না হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেকে কার্যকরী করে তুলতে আমি নিজের দক্ষতার বিকাশ ঘটানোয় জোর দিচ্ছি। আমি এক্সপ্রেস ফাস্ট বোলার হতে না পারলেও কোনও একটি দিনে আমিও ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার বেগের আশেপাশে বল করতে পারি। সেটা মাথায় রেখে নিজের সীমাবদ্ধতা ও শক্তির নিরিখে নিজের বোলিং দক্ষতাকে উন্নত করাই আমার লক্ষ্য।
সীমাবদ্ধতার মধ্যেই উন্নতি
অস্ট্রেলিয়ায় হবে টি ২০ আন্তর্জাতিক বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপের প্রথম একাদশে জায়গা পেতে হলে হর্ষলকে পরীক্ষা দিতে হবে আয়ারল্যান্ড, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও। তাঁর কথায়, স্লো উইকেটে বোলিং করা পছন্দ করি। এতে লড়াইয়ের ভালো সুযোগ থাকে। তবে দিল্লিতে যে উইকেট ছিল তা আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরাতে পারে। আমাদের দলে এমন বোলার রয়েছেন যাঁরা সব ধরনের উইকেটেই বল করতে পারেন। কিন্তু মন্থর পিচে এবং বাউন্ডারি বড় এমন মাঠে তাঁদেরও পরীক্ষা দিতে হয়। এই পরিস্থিতিতে নিজের দক্ষতার বিকাশ ঘটিয়ে নিজেকে দারুণভাবে মেলে ধরে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করাই পাখির চোখ হর্ষলের।