২০০১-র ঐতিহাসিক ইডেন টেস্টে কেন লক্ষ্মণ-দ্রাবিড়ের ব্যাটিং দেখেননি, জানালেন হরভজন
২০০১-র ঐতিহাসিক ইডেন টেস্টে কেন লক্ষ্মণ-দ্রাবিড়ের ব্যাটিং দেখেননি, জানালেন হরভজন
২০০১-র ঐতিহাসিক কলকাতা টেস্টের কথা ভুলবেন না ভারতের ক্রিকেট প্রেমীরা। ফলো-অন খেয়েও ভিভিএস লক্ষ্মণ ও রাহুল দ্রাবিড়ের পার্টনারশিপে শুধু ফিরে আসা নয়, দুর্ধর্ষ অস্ট্রেলিয়াকে হারানো যেমন স্মরণীয়, তেমনই সতেজ হরভজন সিং-র হ্যাটট্রিক। স্মৃতির স্মরণী বেয়ে সেই ম্যাচে ফিরে গিয়ে এক মজাদার ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন ভাজ্জি। আক্ষেপের সুরে জানিয়েছেন যে ওই ম্যাচে ভিভিএস লক্ষ্মণ ও রাহুল দ্রাবিড়ের সেই ঐতিহাসিক ব্যাটিং নাকি তিনি দেখতেই পাননি।
তাঁর হ্যাটট্রিক গুরুত্বপূর্ণ ছিল
লেজেন্ড হরভজন সিং-র কথায়, ইডেন টেস্টের প্রথম দিনের চা পানের বিরতির আগে পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার প্রাধান্য ছিল। ৯৭ রান করে ফেলেছিলেন অজি ওপেনার ম্যাথু হেডেন। তাই সেই দিন শেষ বেলায় করা তাঁর হ্যাটট্রিক গুরুত্বপূর্ণ ছিল বলেই মনে করেন ভাজ্জি।
স্টিভ ওয়া-র শতরান
হরভজন সিং জানিয়েছেন যে শত চেষ্টা করেও ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভ ওয়াকে ঠেকাতে পারেননি ভারতীয় বোলাররা। ১১০ রান করেন স্টিভ। প্রথম ইনিংসে ভারতের বিরুদ্ধে ৪৪৫ রানের পাহাড় খাড়া করে অস্ট্রেলিয়া।
ভারতের ব্যাটিং বিপর্যয়
জবাবে প্রথম ইনিংসে ১৭১ রানে অল আউট হয়ে গিয়েছিল ভারত। টিম ইন্ডিয়ার হয়ে সর্বাধিক ৫৯ রান করেছিলেন ভিভিএস লক্ষ্মণ। সে সময় হরভজন সিং-র মনে হয়েছিল যে মুম্বই-র মতো কলকাতা টেস্টেও ভারতকে তিন দিনে নো হোয়ার করে দেবে অস্ট্রেলিয়া।
দ্বিতীয় ইনিংস
প্রথম ইনিংসে ২৭৪ রানে পিছিয়ে থাকা ভারতকে দ্বিতীয় ইনিংসে ফলো অন বা ফের ব্যাট করার জন্য আমন্ত্রণ জানায় অস্ট্রেলিয়া। যে সিদ্ধান্তকে ক্রিকেটীয় ইতিহাসের অন্যতম ভুল বলে বিবেচনা করা হয়। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ভারতের শুরুটা বেশ ভালো হয়। তবে ২৩২ রানে ওপেনার শিবসুন্দর দাস, সদাগোপান রমেশ, সচিন তেন্ডুলকর ও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে হারিয়ে চাপেও পড়ে যায় ভারত। সেই সময় ব্যাটসম্যান ভিভিএস লক্ষ্মণ ও রাহুল দ্রাবিড় যা করে দেখান, তাঁকে 'মাদার অফ অল কামব্যাক' বলে অভিহিত করা হয়। পিছিয়ে থাকা টিম ইন্ডিয়াকে টেনে তোলাই শুধু নয়, পঞ্চম উইকেটে ৩৭৬ রানের রেকর্ড পার্টনারশিপ গড়ে ভারতকে চালকের আসনে বসান তাঁরা। ২৮১ রানের ম্যারাথন ইনিংস খেলেন লক্ষ্মণ। ১৮০ রান করেন রাহুল দ্রাবিড়। ৬৫৭ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করেন ভারতের সেই সময়ের অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। বাকিটা ইতিহাস।
লক্ষ্মণ-দ্রাবিড়ের ব্যাটিং দেখতে পাননি ভাজ্জি
আক্ষেপের সুরে হরভজন সিং বলেছেন যে তিনি নাকি সেই ম্যাচে ভিভিএস লক্ষ্মণ ও রাহুল দ্রাবিড়ের ব্যাটিং দেখতেই পাননি। ভাজ্জি জানিয়েছেন, ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসেও পরপর উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল ভারত। সেই অবস্থায় চতুর্থ দিনের একটা গোটা সেশন ব্যাট করেছিলেন লক্ষ্মণ ও দ্রাবিড়। তখনই নাকি সাজঘরে বসে থাকা ভারতীয় ক্রিকেটাররা ঠিক করেন যে যতক্ষণ ওই দুই ক্রিকেটার ব্যাটিং করবেন, তাঁরা নিজেদের আসন ছাড়বেন না। এমন ভাবনার পৌরহিত্যে মাস্টার ব্লাস্টার সচিন তেন্ডুলকর ছিলেন বলেও জানিয়েছেন হরভজন সিং। সাজঘরের ভিতরে বসে থাকায় তিনি লক্ষ্মণ ও দ্রাবিড়ের সেই ঐতিহাসিক ব্যাটিং দেখতে পারেননি বলে জানিয়েছেন ভাজ্জি।