মাঁকড়ীয় আউটের পক্ষে সওয়াল গ্রিনিজের, টি ২০ খেলা দেখেন না ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি
মহম্মদ শামি শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দাসুন শনাকাকে মাঁকড়ীয় আউট করতে গিয়ে আবেদন করেছিলেন, যদিও গুয়াহাটির সেই ম্যাচে আবেদন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। রোহিতের পদক্ষেপ নিয়ে ক্রিকেট মহল দ্বিধাবিভক্তন। ভিনু মাঁকড়ের নামাঙ্কিত এই আউটের ধরন নিয়ে তাঁর পরিবারের আপত্তি না থাকলেও অনেকে বলছেন, Mankading-এর নামের সঙ্গে ভিনু মাঁকড়ের নাম যোগ করাটা ঠিক নয়।
|
মাঁকড়ীয় আউট প্রসঙ্গে
এই ধরনের আউটের ক্ষেত্রে ক্রিকেটীয় স্পিরিটও চর্চার বিষয় হয়ে ওঠে। আজ দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি গর্ডন গ্রিনিজ জানিয়ে দিলেন, Mankading-এ দোষের কিছু নেই। উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালে ভিনু মাঁকড় নন স্ট্রাইকিং এন্ডে থাকা অস্ট্রেলিয়ার বিল ব্রাউনকে আউট করেছিলেন। তারপর থেকেই এই আউটকে মাঁকড়ীয় বলা হয়। সম্প্রতি বিগ ব্যাশ লিগে অ্যাডাম জাম্পা এই ধরনের আউট করলেও আম্পায়াররা ব্যাটারকে আউট দেননি। তারপরই ঘটে শামির ঘটনা। আজ গ্রিনিজ বলেন, এই ধরনের আউট হয়ে ব্যাটাররা নিশ্চিতভাবেই নিজের উইকেটটি হারাতে পছন্দ করবেন না। কেউ বলতে পারেন এটি ক্রিকেটীয় স্পিরিটের বিরোধী। তবে যদি একজন ব্যাটার ২-৩ মিটার এগিয়ে থাকার ফায়দা নিতে চান, সেটিও তো একরকম চুরিই। এটা বলা হয়ে থাকে, ব্যাটার বল করার আগে বেরিয়ে গেলে আম্পায়ারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা উচিত। যদিও আমি মনে করি আউট করে দেওয়াটাই উচিত। অনেক সময় এমনটা হয় না। তবে ক্রিকেট নিয়ম মেনেই খেলা হয়। নিয়ম ভাঙতে বিশেষ দেখা যায় না।
গ্রিনিজের সওয়াল
বোলারদের ওভারস্টেপিংয়ের জন্য যে শাস্তির বিধান রয়েছে তার প্রেক্ষিতে গ্রিনিজ বলেন, ব্যাটারদের ২-৩ মিটার চুরি করা ঠিক নয়। আবার বোলাররা ওভারস্টেপিংয়ের ফাঁদে জড়ালে ফ্রি হিট দেওয়া হয়। আমি বুঝি যে, সকলে চার-ছয় দেখতে ভালোবাসেন। তবে সত্যিকারের ক্রিকেটপ্রেমী কিন্তু ব্যাটে-বলের লড়াই উপভোগ করেন। একপেশে খেলা পছন্দ করেন না। ফলে আগামী দিনে এই সংক্রান্ত নিয়মকানুন সংশোধনের পক্ষেই সওয়াল করেছেন গ্রিনিজ।
টেস্টকেই গুরুত্ব
১৯৭০, ১৯৮০-র দশকের দাপুটে ক্রিকেটার এখনও টেস্ট খেলাকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। তিনি বলেন, আমি টি ২০-র সমালোচক নই। তবে এটা আমার পছন্দের নয়। নিশ্চিতভাবেই এই ফরম্যাট ভবিষ্যতেও থাকবে। এটা উত্তেজক, উপভোগ্য। খেলা দেখতে গেলে সকলে তা উপভোগ করেন। এটা দেখার পক্ষে ভালো, তবে আমি নিয়মিত দেখি না। আমি টেস্ট খেলা দেখতে পছন্দ করি। আমি বরাবর টেস্টের সমর্থক। ১৯টি টেস্ট শতরান-সহ ৩০টি আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরির মালিক গ্রিনিজ বলেন, টি ২০ কখনও পঞ্চাশ ওভারের খেলার স্থলাভিষিক্ত হতে পারে না। টি ২০ দর্শকদের খেলা, ক্রিকেটারদের পক্ষে আদর্শ ফরম্যাট নয়। টেস্ট ম্যাচই আসল ক্রিকেট। ৫০ ওভার মাঝামাঝি কিছু। তবে ২০ ওভারের পর ১০ ওভারের খেলা এসেছে। এরপর কি ২, ১ ওভারের ম্যাচ হবে? টেস্ট ক্রিকেটকে স্বমহিমায় রাখার পক্ষেও সওয়াল করেছেন গ্রিনিজ। তাঁর কথায়, টেস্ট ক্রিকেটের জন্যই আমরা এই জায়গায় এসেছি। এটা দেখেই আমরা সকলে বড় হয়েছি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলা দেখে ব্যথিত
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটের গ্রাফ যেভাবে তলানির দিকে যাচ্ছে তাতে ব্যথিত গ্রিনিজ। তিনি সাফ জানালেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলা আর দেখেন না। টেস্ট ক্রিকেট দেখেন। কিংবা কোনও তরুণ প্রতিভাবান ক্রিকেটারের কথা শুনলে তবে তাঁর খেলা দেখার চেষ্টা করেন। তবে ক্রিকেট খেলা দেখতে মাঠে যান না। টি ২০ দেখতে তো নয়ই। ৭১ বছরের গ্রিনিজ এদিন দিল্লির ৩ নং টার্মিনাল থেকে ফিরোজ শাহ কোটলায় পৌঁছন দিল্লি মেট্রো চেপে। একটি ব্যাট প্রস্তুতকারক সংস্থার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিনি রাজধানীতে এসেছিলেন ঝটিকা সফরে।