সুপ্রিম কোর্টে কি বাড়ছে সৌরভ-জয়ের অস্বস্তি? বিসিসিআইয়ের আর্জিগুলিকে কি মান্যতা দেবেন বিচারপতিরা?
সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেতে চলেছে বিসিসিআই? বোর্ড যেসব পরিবর্তন এনে সংবিধান সংশোধন করতে চাইছে আজকের শুনানিতে সেই আর্জিগুলির মান্যতা পাওয়া কঠিন বলেই মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে কুলিং অফ পিরিয়ডের নিয়ম ও ক্রিকেট প্রশাসনে ৭০ বছরের ঊর্ধ্বে কারও না থাকার যে নিম রয়েছে তাতে পরিবর্তন আনতে মরিয়া বিসিসিআই।
কাল ফের শুনানি
আজ শীর্ষ আদালতে সওয়াল-জবাব শেষে বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও হিমা কোহলির বেঞ্চ অ্যামিকাস কিউরি তথা সিনিয়র আইনজীবী মনিন্দর সিংকে নির্দেশ দিয়েছে বোর্ড সংবিধানে যে সংশোধনগুলি আনতে চলেছে তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনা করার। কাল দুপুরে ফের শুনানি হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতিরা। কুলিং অফের নিয়ম-সহ সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাবিত খসড়াও শীর্ষ আদালতে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জোর সওয়াল-জবাব
বিসিসিআইয়ের হয়ে সওয়াল-জবাবে অংশ নেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি কুলিং অফের বিষয়টি বিচারপতিদের সামনে তুলে ধরে বলেন, কুলিং অফের নিয়ম অনুয়ায়ী যদি কেউ রাজ্য ক্রিকেট সংস্থায় এক টার্ম এবং তারপর এক টার্ম বিসিসিআইয়ের পদাধিকারী হিসেবে থাকেন তাহলে তাঁকে পরের টার্মে কুলিং অফে যেতে হবে। কিন্তু বোর্ডের বার্ষিক সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা ও বিসিসিআই সম্পূর্ণ আলাদা। রাজ্য ক্রিকেট সংস্থায় একটা টার্ম কাটানোর পর বিসিসিআইয়ে একটা টার্ম কাটালেই যাতে বোর্ডের পদাধিকারীকে কুলিং অফে যেতে না হয়, সে ব্যাপারেও জোরালো সওয়াল করেন তুষার মেহতা।
আদালত অনমনীয়?
যদিও কুলিং অফ তুলে দেওয়ার বিষয়ে কোনও ইঙ্গিত আজকের শুনানিতে অন্তত মেলেনি বলেই জানা যাচ্ছে। ফলে তা অস্বস্তি বাড়াতে পারে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও জয় শাহের। সৌরভ বিসিসিআই সভাপতি হওয়ার আগে সিএবি সচিব ও সভাপতি ছিলেন। গুজরাত ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের শীর্ষপদে ছিলেন জয় শাহ, পরে বোর্ড সচিব হন। বিসিসিআই চাইছে, ক্রিকেট প্রশাসনে ৭০ বছর হয়ে গেলে কেউ থাকতে পারবেন না, এই নিয়মটিও তুলে দেওয়া হোক। আইসিসিতে প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষেত্রে এতে সুবিধা হবে বলে দাবি করেন তুষার মেহতা। যদিও বেঞ্চ এ ক্ষেত্রেও অনমনীয় হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে বলে, ৭০ বছর অবধি অনেক কাজ করা যায়। এরপর পরের প্রজন্মের হাতে ভার তুলে দেওয়া যেতেই পারে। আইসিসিতে অল্প বয়সের কেউ প্রতিনিধিত্ব করুন। আইনজীবী বা ডাক্তার বেশি বয়সের থাকতে পারেন, কিন্তু খেলার ক্ষেত্রে প্রশাসনে ৭০ বছরের উপর কারও থাকা উচিত নয় বলেই জানিয়েছে দুই বিচারপতির বেঞ্চ।
নজরে বুধ-শুনানি
বিসিসিআই সভাপতি ও সচিব হিসেবে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও জয় শাহের মেয়াদ চলতি মাসেই শেষ হচ্ছে। বিসিসিআই ২০২০ সালে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করে সংবিধানে সংশোধন আনার অনুমতি পেতে আবেদন করে। ২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর বোর্ডের বার্ষিক সাধারণ সভায় ছয়টি সংশোধন আনার প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। যার মধ্যে অন্যতম ৬ বছরের বেশি কোনও পদাধিকারী ক্রিকেট প্রশাসনের পদে থাকতে পারবেন না। সৌরভ ও জয়কে যাতে বাধ্যতামূলক তিন বছরের কুলিং অফে না যেতে হয় তার জন্যই মূলত বোর্ডের এই আবেদন। কুলিং অফের বর্তমান নিয়ম বহাল থাকলে তিন বছরের মধ্যে কোনও ব্যক্তি বিসিসিআই বা রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার কোনও পদে থাকতে পারবেন না। সৌরভ ২০১৪ সাল থেকে ক্রিকেট প্রশাসনের বিভিন্ন পদে রয়েছেন। জয় শাহ তার আগের বছর থেকে। যেহেতু বোর্ডের আবেদনের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট কোনও নির্দেশ বা রায় দেয়নি সেজন্য মেয়াদ শেষে বর্ধিত সময়সীমায় স্বপদে রয়েছেন সৌরভ-জয়।