কলকাতা-রাজস্থান দ্বৈরথের আগে কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা, জেনে নিন
দুই বছরের নির্বাসন কাটিয়ে আইপিএল-এ ফিরেছে রাজস্থান রয়্যাল্স। বুধবার ঘরের মাঠে তাঁদের প্রতিপক্ষ কেকেআর। অতীতে এই ম্যাচকে ঘিরে সড়গরম হয়েছে ক্রিকেট সার্কিট।
বুধবার আইপিএলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে রাজস্থানের মাটিতে রাজস্থান রয়্যালসের মুখোমুখি হচ্ছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। চার ম্যাচ থেকে চার পয়েন্ট নিয়ে লিগ তালিকার দ্বিতীয় স্থানে আছে শাহরুখ খানের দল।
অন্য় দিকে, কেকেআর-এর থেকে এক ম্যাচ কম খেলে সমান পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের পাঁচ নম্বর স্থানে আছে রাজস্থান রয়্যালস। সাধারণ ভাবে দেখলে এই ম্যাচটি নিয়ে বিশেষ আগ্রহ থাকার কোনও কারণ নেই, কিন্তু আইপিএল-এ এই দুই দলের পরস্পরের মুখোমুখি হওয়ার ইতিহাসে যদি নজর দেওয়া যায়, তা হলে নিঃসন্দেহে বোঝা যাবে দু'টি দলের দৃষ্টিকোণ থেকেই কতটা গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচ।
যখনই এই দুই দল মুখোমুখি হয়েছে তখনই উত্তেজনা ছড়িয়েছে মাঠে। শুরুর দিকে শেন ওয়ার্ন-সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় দ্বৈরথের স্মৃতি এখনও টাটকা ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে।
সেই উত্তেজক উপাদান এখন আর নেই দুই দলের কোনওটিতেই। দু'টি দলেই অধিকাংশ নতুন মুখ। ফলে নিজেদের খেলার উপর বেশি জোড় দিচ্ছে দুটি দল। কিন্তু ইতিহাসকে মনে না করতে চাইলেও বিশেষজ্ঞরা কিন্তু মনে করছেন কেকেআর-এর জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে রাজস্থানে।
কেকেআর সংসারের প্রথম তিন বছরের সুখ-দুঃখের সঙ্গী ছিলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার সৌরাশিস লাহিড়ী। তাঁর মতে, 'অতীতে ঘরের মাঠে কলকাতাকে বহুবার বিপাকে ফেলেছে রাজস্থান। এই বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে। তবে, মনে হয় না রাজস্থানের ভাল পারফর্ম করতে সমস্যা হবে কেকেআর এর। কেকেআর-এর মূল ভরসা বোলিং অ্যাটাক। সেখানে কলকাতার বোলারদের মধ্যে বৈচিত্রের অভাব নেই। স্পিন ট্র্যাক না হলেও, নিজেদের কৌশলেই প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের চাপে ফেলার ক্ষমতা আছে কুলদীপ যাদব, সুনীল নারিন, পিযূষ চাওলাদের। সেইসঙ্গে ব্যাট হাতে প্রতি ম্যাচেই ভাল পারফর্ম করছে আন্দ্রে রাসেল। রানের মধ্যে আছে নীতিশ রানাও। ফলে ব্যাটিং বিভাগও যথেষ্ট তৈরি। নীতিশ কিন্তু এই দলের গেম চেঞ্জার।'
অতীতকে মনে রাখতে নারাজ ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ সম্বরণ ব্যানার্জী। তাঁর কাছে এই ম্যাচ ৫০-৫০। প্রাক্তন এই জাতীয় নির্বাচক বলেন, 'কে কোন দিন ভাল খেলবে তার উপরই নির্ভর করছে কোন দল জিতবে ম্যাচ। আন্দ্রে রাসেল যে কটা ম্যাচে বিধ্বংসী ব্যাটিং করেছে তাঁর অধিকাংশই পেস বোলারদের বিরুদ্ধে। আমার মনে হয় না রাসেলের সামনে পেস ব্যাটারি কাজে লাগাবে রাজস্থান মেন্টর শেন ওয়ার্ন। স্পিন অস্ত্রেই রাসেল ঝড় থামাত চাইবেন রাজস্থান রয়্যালসের প্রাক্তন অধিনায়ক এবং প্রথম আইপিএল জয়ী অধিনায়ক। সেইসঙ্গে তরুণ প্রতিভা শুভমন গিলের সঠিক ব্যবহার করছে না নাইটরা। যেখানে ওকে ব্যাট করতে পাঠানো হচ্ছে সেখান থেকে বিশেষ কিছুই করার থাকছে না ওর। গিলকে তিন নম্বরে খেলানো উচিৎ।' এছাড়া এই ম্যাচে কেকেআর-এর ভাগ্য অনেকটাই তাদের প্রধান তিন গেম-চেঞ্জার আন্দ্রে রাসেল, কুলদীপ যাদব এবং সুনীল নারিনের উপর নির্ভর করছে বলেই মনে করছেন সম্বরণ।
সম্বরণের মতোই গিলকে ঠিক মতো ব্যবহার না করায় অসন্তুষ্ট প্রাক্তন ক্রিকেটার এবং প্রাক্তন আন্তর্জাতিক আম্পায়ার প্রসেনজিৎ ব্যানার্জী। তিনি বলেন, 'গত ম্যাচে বড় রান পেলেও ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন আনতে হবে কেকেআর-কে। এখনও পর্যন্ত শুভমন গিলকে সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে ব্যর্থ নাইটরা। গিলকে পিছনের দিকে নামিয়ে কোনও লাভ নেই। ব্যাটিং অর্ডারে তিন নম্বরে ওকে পাঠানো উচিৎ। পাশাপাশি পেস লাইনআপেও সঠিক মতো ব্যবহার করা হচ্ছে না মাভিকে। এই বোলারটির গতি আছে মারাত্মক। এর সুবিধা পেতে আরও বল করাতে হবে মাভিকে দিয়ে। অন্যদিকে, যে জনসনকে এই মরসুমে নিলাম থেকে দলে নিয়েছে কেকেআর টিম ম্যানেজমেন্ট তাঁর মধ্যে স্রেফ অতীতের ছায়া। ফলে রাজস্থানের বিরুদ্ধে ভাল পারফর্ম করতে হলে এই ভুলগুলি অবিলম্বে শোধরাতে হবে নাইট রাইডার্সকে।'