প্রথম অ্যাসেজ টেস্টেই মুখ থুবড়ে পড়লেন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা, অজিদের মধুর প্রতিশোধ
বিশ্বকাপ জয়ের এক মাসও কাটেনি। সেই আনন্দের রেশ যেন এক লহমার ফিঁকে হয়ে গেল ইংল্যান্ড ক্রিকেটে। ঘরের মাঠে মার্যাদার অ্যাসেজ সিরিজের প্রথম টেস্টেই চির শত্রু অস্ট্রেলিয়ার কাছে ২৫১ রানে হারলেন ইংরেজরা।
বিশ্বকাপ জয়ের এক মাসও কাটেনি। সেই আনন্দের রেশ যেন এক লহমার ফিঁকে হয়ে গেল ইংল্যান্ড ক্রিকেটে। ঘরের মাঠে মার্যাদার অ্যাসেজ সিরিজের প্রথম টেস্টেই চির শত্রু অস্ট্রেলিয়ার কাছে ২৫১ রানে হারলেন ইংরেজরা। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের এই হারে সমর্থকরা তো বটেই, বিস্মিত হয়েছে ক্রিকেট বিশ্ব।
অস্ট্রেলিয়ার কাছে এই লজ্জাজনক পরাজয়ের পর ইংল্যান্ড জুড়ে হা-হুতাশের মধ্যেই খেলোয়াড়দের পারফরম্য়ান্স নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে। অনেক দিন পর আবার সরব হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন ব্রিটিশ ক্রিকেটের সমালোচকরা। ইতিমধ্যেই ইংল্যান্ড দল ও খেলোয়াড়দের নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ধরণের মিম ভাইরাল হয়েছে।
প্রথম ইনিংস
বিশ্বকাপের পর এজবাস্টনে শুরু হওয়া ৭১তম অ্যাসেজ সিরিজের প্রথম টেস্ট ঘিরে ক্রিকেট প্রেমীদের উন্মাদনা ছিল অত্যধিক। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু প্রথম দিন ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়েন অজিরা। শুধুমাত্র স্টিভ স্মিথের ১৪৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংসের দৌলতে প্রথম ইনিংসে ২৮৪ রান তুলতে সক্ষম হয় অস্ট্রেলিয়া।
জবাবে ব্যাট করতে নামা ইংল্যান্ড, প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার থেকে ভালো খেলে। ওপেনার ররি বার্নসের ১৩৩, অধিনায়ক জো রুটের ৫৭ ও বেন স্টোকসের ৫০ রানের সৌজন্যে প্রথম ইনিংসে ৩৭৪ রান তোলে ইংল্যান্ড। অজিদের থেকে ৯০ রানে এগিয়ে থাকেন ইংরেজরা।
অজিদের দ্বিতীয় ইনিংস
দ্বিতীয় ইনিংসে ৯০ রান তাড়া করতে নেমে ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার (৮) ও ক্যামেরন ব্যানক্রফ্টকে (৭) ফের শুরুতে হারায় অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু আবারও গর্জে ওঠে স্টিভ স্মিথের ব্যাট। এজবাস্টন টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে কেরিয়ারের ২৫তম সেঞ্চুরিটি করে ফেলেন প্রাক্তন অজি অধিনায়ক। একই সঙ্গে ম্যাথু ওয়েডের ১১০, ট্রেভিস হেডের ৫১, উসমান খাওয়াজার ৪০, টিম পেইনের ৩৪ ও জেমস প্যাটিনসনের ৪৭ রানের সুবাদে ৪৮৭-এ পৌঁছে ডিক্লিয়ার করে অস্ট্রেলিয়া।
ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস
দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৯৮ রান তাড়া করতে নেমে ন্যাথন লিয়নের ৬ ও প্যাট কমিন্সের ৪ উইকেটের দাপটে মাত্র ১৪৬ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। এই ইনিংসে ইংরেজ শিবিরের টপ স্কোয়ার ক্রিস ওকস (৩৭)। অধিনায়ক জো রুট ও ওপেনার জেসন রয় মাত্র ২৮ রান করেন।
অ্যাসেজের গুরুত্ব
এই অ্য়াসেজ থেকেই শুরু হল বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। এজবাস্টন টেস্টেই সাদা জার্সিতে সর্বপ্রথম নম্বর লেখার রেওয়াজ চালু হল। অন্যদিকে, বল বিকৃতি কাণ্ডে ক্রিকেট থেকে ১৬ মাস আগে নির্বাসিত হওয়া অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার ও ক্যামেরন ব্যানক্রফ্ট এই টেস্টেই ফের সাদা জার্সি গায়ে চাপালেন। ওয়ার্নার, ক্যামেরন ফ্লপ হলেও ম্যাচের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে একাই কুম্ভের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন প্রাক্তন অজি অধিনায়ক।
শেষ থেকে শুরু
কিছু দিন আগে এই এজবাস্টনেই চির শত্রু ইংল্য়ান্ডের কাছে হেরে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে যায় অস্ট্রেলিয়া। সেই হারের বদলা একই মাঠে অ্যাসেজের মতো মর্যাদাপূর্ণ মঞ্চে নিতে পারবেন অজিরা, তা হয়তো ভাবেননি সমর্থকরা।
পরের টেস্ট লর্ডসে
যে মাঠে বিশ্বকাপ ফাইনাল জিতেছিল ইংল্য়ান্ড, সেই লর্ডসে অ্যাসেজের দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামার আগে দলে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করা হতে পারে বলে খবর। ইংল্যান্ড দল থেকে বাদ পড়তে পারেন স্পিনার মইন আলি ও ব্যাটসম্যান জো ড্যানলি। ওপেনারদের ফর্ম নিয়েও চিন্তায় ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড।