ইংল্যান্ডের অনবদ্য প্রত্যাবর্তনের সাক্ষী থাকল এজবাস্টন, ভারতকে ৭ উইকেটে হারিয়ে সিরিজ বাঁচাল থ্রি লায়ন্স
ইংল্যান্ডের অনবদ্য প্রত্যাবর্তনের সাক্ষী থাকল এজবাস্টন, ভারতকে ৭ উইকেটে হারিয়ে সিরিজ বাঁচাল থ্রি লায়ন্স
ভারতের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক জয় তুলে নিল ইংল্যান্ড। এজবাস্টন টেস্টের চতুর্থ ইনিংস ভারতকে কোনঠাঁসা করে পঞ্চম দিনের প্রথম সেশনেই জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান তুলে নিল ইংল্যান্ড। জনি বেয়ারস্টো এবং জো রুটের জোড়া শতরানের উপর ভর করে এজবাস্টনে জয়ের ধ্বজা ওড়াল ব্রিটিশ দলটি। ইংল্যান্ডের হয়ে অপরাজিত ১৪২ রান করেন জো রুট এবং অপরাজিত ১১৪ রান করেন জনি বেয়ারস্টো।
এই টেস্টে টসে জিতে গোটা ক্রিকেট মহলকে অবাক করে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস। তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর দল রান তাড়া করতে বেশি স্বচ্ছন্দ তাই বোলিং-এর সিদ্ধান্ত নেওয়া। প্রথমে বোলিং করে শুরুটা ভালই করেছিল ইংল্যান্ড। ৯৮/৫ হয়ে গিয়েছল একটা সময়ে ভারত। ভারতীয় দলকে যখন গ্রাস করেছে ব্যাটিং ভরাডুবির আশঙ্ক তখন ত্রাতা হয়ে এগিয়ে আসেন উইকেটরক্ষক- ব্যাটসম্যান ঋষভ পন্থ এবং রবীন্দ্র জাডেজা। দুর্দন্ত ১৪৬ রানে ইনিংস খেলেন পন্থ এবং জাডেজা করেন দুরন্ত ১০৪ রান। এই দুই ব্যাটার নিজেদের মধ্যে ২২২ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। ভারতের ইনিংসের শেষের দিকে স্টুয়ার্ট ব্রডের এক ওভারে ৩৫ রান নিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে এক ওভারে সর্বাধিক রান করার ইতিহাস তৈরি করেন জসপ্রীত বুমরাহ। ধুকতে থাকা ভারতীয় ইনিংস শেষ হয়েছিল ৪১৬ রানে। ইংল্যান্ডের হয়ে পাঁচটি উইকেট নিয়েছিলেন জেমস অ্যান্ডারসন।
ভারতের পাহাড় প্রমাণ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ২৮৪ রানে শেষ হয়ে যায় ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস। একমাত্র জনি বেয়ারস্টো ছাড়া কোনও ইংলিশ ব্যাটসম্যান দাঁড়াতে পারেননি এই ইনিংসে। ১০৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন জনি। ভারতের হয়ে চারটি উইকেট নিয়েছিলেন মহম্মদ সিরাজ, জসপ্রীত বুমরাহ পেয়েছিলেন তিনটি উইকেট, দু'টি উইকেট পান মহম্মদ শামি।
প্রথম ইনিংসে ১৩২ রানের লিড পাওয়ার ফলে এই ম্যাচে আরও মজবুদ স্থিতি তৈরি হয় ভারতের। তবে, নিজেদের মাঠে ভারতের এই দাপট মেনে নেয়নি ইংল্যান্ড। বোলাররা ঝড় তোলেন ম্যাচের তৃতীয় ইনিংসে। বেন স্টোকস, স্টুয়ার্ট ব্রড, ম্যাটি পটসের দাপটে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের ইনিংসের পতন ঘটে ২৪৫ রানে। এই ইনিংসে চেতেশ্বর পূজারা এবং প্রথম ইনিংসে শতরান করা ঋষভ পন্থ ছাড়া কেউই ক্রিজে টিকতে পারেননি। ঋষভ করেন ৪৭ রান এবং পূজারা করেন ৬৬ রান। দুই ইনিংসে ব্যর্থ হয়েছেন এই মুহূর্তে ভারতীয় দলের বোঝা হয়ে ওঠা বিরাট কোহলি। তাঁর ব্যাট থেকে দুই ইনিংসে এসেছে যথাক্রমে ১১ এবং ২০ রান।
ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বেন স্টোকস একাই নেন চার উইকেট, দু'টি করে উইকেট পান ম্যাটি পটস এবং স্টুয়ার্ট ব্রড। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতকে অল্প রানে আটকে দেওয়ার ফলে ম্যাচ জয়ের একটা সুযোগ চলে আসে ইংল্যান্ডের কাছে। ম্যাচ জেতার জন্য ব্রিটিশ দলটির কাছে ৩৭৮ রানের টার্গেট রাখে ভারত। বিশ্বের সেরা টেস্ট দলের বিরুদ্ধে এত রান তোলা মোটেই সহজ বিষয় নয়। কিন্তু যে ভাবে চতুর্থ ইনিংসে ইংল্যান্ড খেলল তাতে কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। প্রথম উইকেটে ১০৭ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ইংল্যান্ড। অ্যালেক্স লিস করেন ৫৬ এবং জ্যাক ক্রলি করেন ৪৬। ওলি পোপ রান না পেলেও ইংল্যান্ডকে ফিনিশিং লাইনে পৌঁছে দেন জো রুট এবং জনি বেয়ারস্টো। প্রথম ইনিংসে এজবাস্টন কাঁপানো জনি দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ১১৪ রানের ইনিংস খেলেন। সব সময়েই ছন্দে থাকা জো রুট করেন অপরাজিত ১৪২ রান। এই টেস্ট জয়ের ফলে ২-২ ব্যবধানে পাঁচ ম্যাচে টেস্ট সিরিজ ড্র হল।