নিউজিল্যান্ড সিরিজে ভারতীয় দলে সুযোগকে স্বপ্নপূরণ বলছেন আবেশ, বাবার মনে পড়ছে প্রথম দিনের কথা
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৭, ১৯ ও ২১ নভেম্বর যথাক্রমে জয়পুর, রাঁচি ও কলকাতায় তিনটি টি ২০ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলবে ভারত। গতকালই রোহিত শর্মাকে অধিনায়ক ও লোকেশ রাহুলকে সহ অধিনায়ক করে দল ঘোষণা করেছেন জাতীয় নির্বাচকরা। আইপিএল ও সৈয়দ মুস্তাক আলি টি ২০ ট্রফির পারফরম্যান্সকে গুরুত্ব দিয়ে। মধ্যপ্রদেশ থেকে ভেঙ্কটেশ আইয়ার ও আবেশ খান সুযোগ পেয়েছেন এই দলে। ভেঙ্কটেশের ঘরে গিয়ে সুখবরটি দিয়েছেন আবেশই।
সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফির ম্যাচে কেরলের কাছে পরাজয়ের কিছুক্ষণ পরই জাতীয় দলে সুযোগের খবর পান আবেশ। ১৬ ম্যাচে তিনি ২৪টি উইকেট পেয়েছেন এবারের আইপিএলে। সৈয়দ মুস্তাক আলি টি ২০ ট্রফির পাঁচটি ম্যাচে আবেশের ঝুলিতে রয়েছে ৯ উইকেট। গুজরাট ও কেরলের বিরুদ্ধে উইকেট না পেলেও অসমের বিরুদ্ধে ১৮ রানে তিনটি, রেলওয়েজের বিরুদ্ধে ২৩ রানে তিনটি ও বিহারের বিরুদ্ধে ৬ রানের বিনিময়ে তিনটি উইকেট দখল করেন আবেশ। ২০১৭ সাল থেকে আইপিএল খেলছেন। ২০১৭-র আইপিএলে এক ম্যাচে একটি এবং পরের বছরের আইপিএলে ৬ ম্যাচে ৪ উইকেট নেন। ২০১৯ ও ২০২০ সালের আইপিএলে একটি করে ম্যাচে সুযোগ পান, তবে কোনও উইকেট পাননি। এবারের আইপিএলে অবশ্য দিল্লি ক্যাপিটালসের ভালো পারফরম্যান্সের পিছনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল আবেশের। গড় ১৮.৭৫, ইকনমি ৭.৩৭, সেরা বোলিং ১৩ রানের বিনিময়ে তিন উইকেট।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২৭টি ম্যাচে তিনি ১০০টি উইকেট পেয়েছেন। ইনিংসে চার উইকেট নিয়েছেন ৬ বার, পাঁচ উইকেট ৪ বার, একবার ম্যাচে ৫৪ রান দিয়ে ১২ উইকেট নেন। সেরা বোলিং ২৪ রানের বিনিময়ে ৭ উইকেট। ৫০ ওভারের ফরম্যাটে ১৬ ম্যাচে নিয়েছেন ১০টি উইকেট। টি ২০-তে ৪৮টি ম্যাচে আবেশের উইকেট-সংখ্যা ৬৫, সেরা বোলিং ১৭ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট। একবার করে ইনিংসে চার ও পাঁচ উইকেট নিয়েছেন। আবেশের ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার খবরে তাঁর ইন্দোরের বাড়িতে উৎসবের মেজাজ। আত্মীয়, বন্ধু ও প্রতিবেশীরা এসে উপস্থিত হন, চলে মিষ্টিমুখের পালা। আবেশ বলেছেন, প্রত্যেক ক্রিকেটারেরই স্বপ্ন থাকে দেশের হয়ে খেলার। তা বাস্তবায়িত করতে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। আমার সেই স্বপ্নপূরণ হল। ডানহাতি পেসার আবেশ জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার জন্য কৃতিত্ব দিয়েছেন অময় খুরাশিয়া, চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত, দেবেন্দ্র বুন্দেলা ও আব্বাস আলিকে। তাঁরাই আবেশের প্রতিভাকে চিহ্নিত করে, উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিভার বিকাশের সুযোগ করে দিয়েছিলেন।
আবেশের বাবা আশিক খানের মনে পড়ছে প্রথম দিনের কথা। তিনি বলেন, আবেশ প্রথমে ইন্দোর কল্টস ক্রিকেট ক্লাবে খেলার সুযোগ পান। আবেশের প্রতিভাকে প্রথম চিহ্নিত করেন অময় খুরাশিয়া। নিয়ে যান নিজের আকাদেমিতে। এরপর আর আবশকে ফিরে তাকাতে হয়নি। তিন মাস পর আজ ইন্দোরে ফেরার পর বাবার সঙ্গেই আবেশ সোজা গিয়েছিলেন অময় খুরাশিয়ার বাড়িতে, তাঁর আশীর্বাদ নিতে। এরপর বাড়ি ফিরতেই আবেশ ভেসে যান অভিনন্দন ও শুভেচ্ছার জোয়ারে। অস্ট্রেলিয়ায় ২০২২ সালের টি ২০ বিশ্বকাপের দলে থাকতে আবেশ পারফরম্যান্সে নিজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারবেন তা স্পষ্ট হবে আগামী কয়েক মাসেই।