মহেন্দ্র সিং ধোনিকে সুপ্রিম কোর্টের নোটিশ! আম্রপালি গ্রুপের বাণিজ্যিক মুখের বিড়ম্বনা বাড়ল
আম্রপালি গ্রুপের দ্বারা প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ এনেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশে চলছিল আরবিট্রেশন প্রক্রিয়া। যদিও সেই প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ জারি করে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ককে নোটিশ পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট। আম্রপালি গ্রুপের তৈরি ফ্ল্যাটের টাকা দিয়েও যাঁরা ফ্ল্যাট পাননি সেই ভুক্তভোগীদের স্বার্থরক্ষাতেই এই পদক্ষেপ শীর্ষ আদালতের।
আজ এই মামলার শুনানিতে আদালত নিযুক্ত ফরেনসিক অডিটররা জানান, আম্রপালি গ্রুপের সঙ্গে মহেন্দ্র সিং ধোনির সংস্থা রীতি স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেডের চুক্তি হয়েছিল। সেই মোতাবেক মহেন্দ্র সিং ধোনিকে বাণিজ্যক মুখ করতে চেয়ে ৪২.২২ কোটি আরএসএমপিএলকে দেয় আম্রপালি গ্রুপ। ফ্ল্যাট কেনার জন্য যাঁরা টাকা জমা করেছিলেন সেই টাকার অংশই ধোনিকে সংস্থার তরফে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি ফরেনসিক অডিটরদের। ২০০৯ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে এই টাকা আম্রপালি গ্রুপের তরফে দেওয়া হয়। আরএসএমপিএল ধোনিকে প্রোমোট করে। ফলে আম্রপালি গ্রুপের হয়ে প্রচারের মুখ করা হয় প্রাক্তন ভারত অধিনায়ককে।
আম্রপালির দ্বারা প্রতারিত গ্রাহকরা যখন বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এবং আইনি রাস্তায় হাঁটেন তখন ধোনির বিরুদ্ধেও জোরদার প্রচার চলেছিল। ২০১৯ সালের অক্টোবরে ধোনি দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। আদালত প্রাক্তন বিচারপতি বীণা বীরবলকে আরবিট্রেটর নিয়োগ করে ধোনি ও রিয়াল এস্টেট ফার্মের মধ্যে আরবিট্রেশন প্রক্রিয়া চালুর নির্দেশ দেয়। আজ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ইউ ইউ ললিত ও বেলা এম ত্রিবেদীর বেঞ্চে শুনানি ছিল। গ্রাহকদের স্বার্থ সুরক্ষার নির্দেশ দিয়ে আজ শীর্ষ আদালত একজন কোর্ট রিসিভার নিয়োগ করেছে। আবাসন প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়ে গ্রাহকদের হাতে অ্যাপার্টমেন্ট তুলে দেওয়া হয়েছিল কিনা তা খতিয়ে দেখবেন রিসিভার। বিচারপতি বীরবলকে আরবিট্রেশন প্রক্রিয়া স্থগিত রাখতেও বলা হয়েছে।
ধোনি নিজে সাড়ে পাঁচ হাজার বর্গফুটের একটি পেন্টহাউস আম্রপালি গ্রুপের কাছ থেকে বুক করেছিলেন ১০ বছর আগে। সেটির প্রোটেকশনের জন্যও আদালতের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন ধোনি। আম্রপালি গ্রুপের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবেও তিনি প্রতিশ্রতিমতো অর্থ পাননি বলে অভিযোগ। ফরেনসিক অডিটে দাবি করা হয়েছে, ধোনির রীতি স্পোর্টসের সঙ্গে আম্রপালির ২৪টি চুক্তি হয়েছিল। একটি আবাসন প্রকল্প জয়েন্ট ভেঞ্চারে হওয়ার কথা ছিল। ধোনির বকেয়ার পরিমাণ নেহাত কম নয়। এমনকী কিছু চেক বাউন্সও করেছিল। আম্রপালি সংস্থার কর্তারা এখন জেলে। ২০১৯ সালে ওই সংস্থার রিয়াল এস্টেটের লাইসেন্স বাতিল করে শীর্ষ আদালত। শুনানি চলাকালীন এমন কথাও ওঠে, গ্রাহকদের যে টাকা ঘুরপথে ধোনির কাছে গিয়েছে তাও উদ্ধার করা হোক। স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তি বাড়ল ধোনির। সুপ্রিম কোর্টে পরবর্তী শুনানি অগাস্টের ৮ তারিখ।