ক্রিকেটার যারা অন্য খেলাতেও সমান দক্ষ, খেলেছেন জাতীয় স্তরে
ক্রিকেটার যারা অন্য খেলাতেও সমান দক্ষ, খেলেছেন জাতীয় স্তরে
ক্রিকেট ছাড়াও আরও ১১টি খেলাতে দক্ষ এবি ডিভিলিয়ার্স! দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন ডিভিলিয়ার্স নাকি রাগবি, বেসবল, ব্যাটমিন্টন, হকিতেও ততটাই সাবলীল যতটা ব্যাটহাতে বাইশগজে! এমনকি এগুলোর কয়েকটিতে নাকি দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্বও করে ফেলেছেন ডেভিলিয়ার্স! কয়েকবছর আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় এমনই বক্তব্য। যদিও পরে নিজের আত্মজীবনীতে এই গল্পগুলোকে গল্প বলেই উল্লেখ করেছেন এবি। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন ক্রিকেট ছাড়া আর অন্য কোনও খেলায় দেশের প্রতিনিধিত্ব করেননি।
তবে এবি ডেভিলিয়ার্স ক্রিকেট ছাড়া অন্য খেলা না খেললেও এরকম প্রচুর ক্রিকেটার রয়েছেন যারা ক্রিকেট ছাড়াও অন্য খেলাতে পারদর্শী।
যুজবেন্দ্র চাহাল
এই তালিকায় প্রথম নামই নেওয়া যায় যুজবেন্দ্র চাহালের। মেন ইন ব্লু-র ডানহাতি প্রতিভাবান এই স্পিনারের সঙ্গে দাবা খেললেও আপনাকে সামলাতে হতে পারে বড় মাপের গুগলি৷ ২০০২ সালে কলকাতায় অনূর্ধ্ব-১২ জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ জেতেন চাহাল। অনুর্ধ্ব-১২ এশিয়ান দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ এবং অনুর্ধ্ব-১২ দাবা বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপেও দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন চাহল।
অ্যান্ড্রু ফ্লিনটপ
শেষ দশকে যে ক'জন অলরাউন্ডার বাইশগজে ছাপ রেখেছে তার মধ্যে অবশ্যই একজন ইংল্যান্ডের অ্যান্ড্রু ফ্লিনটপ। ৬ফুট ৪ইঞ্চির এই ক্রিকেটার ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর প্রতিপক্ষকে কাত করছেন স্ট্রেট পাঞ্চে! ২০০৯ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে নিজেকে বক্সিংয়ে রিংয়ে নিয়ে আসেন ফ্লিনটপ। আর শুধু সখের খেলা নয় ২০১২ সালে আমেরিকান বক্সার রিচার্ড ডসনকে রিং পরাজিত করেন। তাও বার চার রাউন্ডে।
ইয়ান বোথাম
তালিকায় পরের নামটাও একজন ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডারের। বিশ্বের সর্বাকালের সেরা দশজন অলরাউন্ডারের তালিকায় উপরের দিকে থাকবেন ইয়ান বোথাম। বাইশগজে অগনিত রেকর্ড গড়ার পর বোথানের পায়ের জাদুতেও মুগ্ধ হয়েছিল ইংল্যান্ডবাসী৷ ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৫ এই বছরগুলোতে ইংল্যান্ডের ক্লাব ফুটবলে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন বোথাম। সেন্টার-হাফ হিসেবে জিতেছেন একাধিক ম্যাচ।
এলিস পেরি
অস্ট্রেলিয়ার এই বোলার অলরাউন্ডারকে চেনেনা এরকম ক্রিকেটপ্রেমী খুব কমই রয়েছে। কিন্তু তার ফ্যানদের মধ্যেও অনেকে জানেন না প্রথম জীবনে অস্ট্রেলিয়ার পেশাদার ফুটবলার হিসেবেই কেরিয়ার শুরু করেন পেরি৷ খেলতেন মতিলদা ক্লাবের হয়ে।
ন্যাথন অ্যাস্টেল
নিউজিল্যান্ডের এই ব্যাটসম্যানের রয়েছে ৭০০০ টেস্ট রান। একদিনের ম্যাচে ন্যাথনের সংগ্রহে রয়েছে ৪০০০ রান৷ পাশাপাশি টেস্ট-ওয়ানডে মিলে ২৭টি সেঞ্চুরির মালিক নাথান৷ ২০০৭ এ ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর কার রেসিং-কে পেশা হিসেবে নেন নাথন। ২০১৩ সালে সাউথ আইল্যান্ড চ্যাম্পিয়নশিপও জেতেন৷
স্যার ডন ব্র্যাডম্যান
পৃথিবীতে যতদিন ক্রিকেট নামক খেলা থাকবে, ডন ব্র্যাডম্যানের ঈশ্বরত্ব বজায় থাকবে৷ ডন শুধুই কিংবদন্তি নন, নিজেই এক প্রবহমান ক্রিকেটিয় ধারা। বিশ্বের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান, ৯৯.৯৪ এভারেজ, ১২ টা দ্বি-শতক, ২টো ত্রিপল সেঞ্চুরি সহ মোট ২৯টি সেঞ্চুরির মালিক ডনও যে ক্রিকেট ছাড়া অন্য আরও খেলায় মজেছিলেন তা হয়ত অনেকেই জানেন না। স্কোয়াশ, বিলিয়ার্ড, গল্ফেও ছাপ রেখেছেন ডন৷ মাউন্ট ওসমন্ড গল্ফ চ্যাম্পিয়নশিপ ১৯৩৫ এবং১৯৪৯ জেতেন স্যার ডন৷
জন্টি রোডস
বাইশ গজ তাঁর নাম দিয়েছিল উড়ন্ত বাজপাখি। শুধু ফিল্ডিং দিয়েও যে ক্রিকেটের কিংবদন্তি হওয়া যায় তা প্রমাণ করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার জন্টি রোডস। ইনজামামুল হককে করা তাঁর রান আউটের ছবি এখনও শোভা পায় ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বড় হওয়া ছেলে/মেয়ের বাড়ির দেওয়ালে৷ বিশ্ববিখ্যাত এই ক্রিকেটার ১৯৯২ সালে নিজের দেশের অলিম্পিক হকি টিমের সদস্য ছিলেন। যদিও এই দল অলিম্পিকে কোয়ালিফাই করতে পারেনি৷ ১৯৯৬ সালে আবার দেশের হয়ে অলিম্পিক দলে ডাক পান জন্টি, কিন্তু হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটের জন্য আর যোগ দেননি দলে।
স্যার ভিভ রিচার্ডস
তাঁর সম্পর্কে প্রচলিত গাথাদের একটি হল তিনি ব্যাট হাতে বাইশগজে নামলে বোলারদের অনেকেই খেই হারিয়ে ফেলতেন, কেরিয়ার শেষ হওয়ার ভয় জাঁকিয়ে বসত বোলারদের হৃদয়ে। তিনি ওয়েস্টইন্ডিজের বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান স্যার ভিভ রিচার্ডস। ক্রিকেট যেসব রূপকথার রাজপুত্রদের জন্ম দিয়েছে তাঁর একজন। ৫০.২৪ এভারেজ, ২৪ শতক, ৮৫৪০ টেস্ট রান, একদিনের ম্যাচে ৬০০০ রান, ১৯৭৫ ও ১৯৭৯ এ দেশকে দুবার বিশ্বকাপ জেতানো, এরকমঅগুন্তি রেকর্ড রয়েছে রিচার্ডের ঝুলিতে। আবার এটা শুনলে অনেক হয়ত অবাক হবেন যে দু'বার ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়ী এই ক্রিকেটার ১৯৭৪ সালেই অ্যান্টিগুয়ার হয়ে ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপের কোয়ালিফাইং ম্যাচ খেলেছেন৷