সেই স্বপ্নের জুটি! তা নিয়ে কী বললেন কর্টনি ওয়ালস ও কার্টলে অ্যাম্ব্রোস
যে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এক সময় বলা হত পেস মেকার, সেই দেশেই প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ফাস্ট বোলারের খরা ক্রিকেট প্রেমীদের হতাশ করেছে।
টি-টোয়েন্টি, ওয়ান ডে ও টেস্ট সিরিজ খেলতে এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজে রয়েছে টিম ইন্ডিয়া। প্রথম দুই কুড়ি ওভারের ম্যাচে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের হাতে কার্যত তুলোধোনা হয়েছেন ক্যারিবিয়ান বোলাররা।
যে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এক সময় বলা হত পেস মেকার, সেই দেশেই প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ফাস্ট বোলারের খরা ক্রিকেট প্রেমীদের হতাশ করেছে। ম্যালকম মার্শাল, জোয়েল গার্নার, অ্যান্ডি রবার্টসের দেশে কেন এমন শূণ্যতা, তা এখন কোটি টাকার প্রশ্ন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলে বল হাতে সেই স্বর্ণযুগের কার্যত শেষ প্রতিনিধি কর্টনি ওয়ালস ও কার্টলে অ্যাম্ব্রোস নিজের মতো করে দেশের হৃত গৌরব পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। একই সঙ্গে এই দুঃসময়ে ক্রিকেট বল হাতে নিজেদের জুটির কথাও স্মরণ করেছেন কর্টনি ওয়ালস ও কার্টলে অ্যাম্ব্রোস।
রেকর্ড আর নেই
প্রায় ১২ বছর এক সঙ্গে বাইশ গজ শাসন করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান পেস ব্যাটারি কর্টনি ওয়ালস ও কার্টলে অ্যাম্ব্রোস। ২৩০টি টেস্ট ম্যাচে সম্বিলিত ভাবে ৯২৪টি উইকেট নিয়ে প্রায় দুই দশক সেই রেকর্ড ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন ওয়ালস (৫১৯টি) ও অ্যাম্ব্রোস (৪০৫টি)। মাত্র কয়েক বছর আগে তাঁদের সেই রেকর্ড ভাঙেন ইংল্যান্ডের জেমস অ্যান্ডারসন ও স্টুয়ার্ট ব্রড। ১২ বছরে ২৭৪টি টেস্ট ম্যাচ খেলে মোট ১০১২টি উইকেট নিতে সক্ষম হয়েছে ইংরেজ জুটি।
ক্যারিবিয়ানদের পিছনে
ইংল্যান্ডের জেমস অ্যান্ডারসন ও স্টুয়ার্ট ব্রড জুটি তাঁদের টপকে গেলেও পাকিস্তানের ওয়াসিম আক্রম-ওয়াকার ইউনিস (১৯১ ম্যাচে ৭৮৭ উইকেট), অস্ট্রেলিয়ার ডেনিস লিলি-জেফ থমসনদের (১২১ ম্যাচে ৫৫৫ উইকেট) থেকে এখনও এগিয়ে থাকায় নিজেদের জন্য গর্ববোধ করেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান পেস ব্যাটারি কর্টনি ওয়ালস ও কার্টলে অ্যাম্ব্রোস।
জুটিতে লুটি
একটা সময় ছিল যখন ২২ গজের দুই এন্ড থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে বোলিং অ্যাটাকের দায়িত্ব নিতেন কর্টনি ওয়ালস ও কার্টলে অ্যাম্ব্রোস। দীর্ঘদেহী দুই ক্যারিবিয়ান বোলারের পেস (ঘণ্টায় ১৪০ কিমির নিচে নয়) এবং সুইং ছিল তাবড় ব্যাটসম্যানদের ত্রাস। দুই রথি মিলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বহু গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট ম্যাচ জিতিয়েছেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্বর্ণযুগ
১৯৯৫ সাল পর্যন্ত টেস্ট ম্যাচ জয়ের সংখ্যায় অস্ট্রেলিয়ার পরেই ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্থান অর্থাৎ বিশ্বে দ্বিতীয়। সেই সাফল্যের ইতিহাসের খানিকটা অংশে কর্টনি ওয়ালস ও কার্টলে অ্যাম্ব্রোসের কৃতিত্বও জড়িয়ে আছে।
শুরুটা কেমন
১৯৮৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সি গায়ে অভিষেক হয়েছিল কর্টনি ওয়ালসের। চার বছর পর ক্যারিবিয়ান ক্রিকেট দলে যোগ দেন কার্টলে অ্যাম্ব্রোস। তা বলে ১৯৮৮ থেকেই যে দুই লেজেন্ডের মধ্যে সখ্যতা, তেমনটা ভাবার কিন্তু কোনও কারণ নেই। ১৯৯০ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ম্য়াচে একে অপরের সঙ্গে রুম শেয়ার করতে শুরু করেন ওয়ালস ও অ্যাম্ব্রোস। তখন থেকেই তাঁদের মধ্যে বোঝাপড়া তৈরি হয়। যার প্রভাব বাইশ গজেও পড়ে বলে স্বীকার করেছেন দুই রথি।
ব্যক্তিত্বের সংঘাত
১৯৯৪ সালে কর্টনি ওয়ালসকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের অধিনায়ক ঘোষণা করা হয়। শোনা যায়, সেই সময় নাকি ক্যারিবায়ান ড্রেসিং রুম দুই ভাগে ভাগ হয়েছিল। তার জেরে একের পর এক ম্যাচ হেরে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া সময়ে তাঁরা একে অপরের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বলে দাবি কর্টনি ওয়ালস ও কার্টলে অ্যাম্ব্রোসের। সেই সময় তাঁদের মধ্যে ব্যক্তিত্বের সংঘাত সংক্রান্ত যে খবর রটানো হয়েছিল, তা ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন দুই ক্যারিবিয়ান লেজেন্ড।