বিরাট কোহলির অস্বস্তি বাড়িয়ে বর্ষবরণের রাতেই বিস্ফোরণ ঘটালেন চেতন, অধিনায়কত্ব বিতর্কে ভাঙলেন হাটে হাঁড়ি
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিরাট কোহলির সংঘাত অন্য মাত্রা পেল বর্ষশেষের রাতে। নতুন বছরের শুরু থেকেই অন্য খাতে বইতে পারে ভারতীয় ক্রিকেটে বর্তমানের সবচেয়ে আলোচিত বিতর্ক। অধিনায়কত্ব ইস্যুতে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্যই আরও জোরালো করল জাতীয় নির্বাচকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান চেতন শর্মার দাবি। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের একদিনের দল ঘোষণার ফাঁকে সাফ জানালেন, সৌরভ একা নন, সকলেই বিরাটকে টি ২০ বিশ্বকাপের আগে ক্যাপ্টেন্সি ছাড়তে বারণ করেছিলেন।
সৌরভ-বিরাট সংঘাত
বিরাট কোহলিকে একদিনের অধিনায়কত্ব থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, তিনি নিজে বিরাট কোহলিকে টি ২০ ক্যাপ্টেন্সি না ছাড়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু বিরাট কোহলি কারও অনুরোধ না মেনে নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন। এরপর নির্বাচকরাও সাদা বলের ক্রিকেটে আলাদা অধিনায়ক রাখতে চাননি। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে রওনা হওয়ার আগে সৌরভকে মিথ্যাবাদী প্রতিপন্ন করতে গিয়ে বিরাট দাবি করেন, অধিনায়কত্ব ছাড়ার কথা তিনি বিসিসিআইকে প্রথমে জানিয়েছিলেন। কী কারণে, কোন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে তিনি ক্যাপ্টেন্সি ছাড়ছেন তার সবটাই তিনি বোর্ডকে বলেন। তাঁর বক্তব্যকে সকলেই গ্রহণ করেছিলেন। কেউ তাঁকে অধিনায়কত্ব ছাড়তে বারণ করেননি বলেই দাবি ছিল বিরাটের।
নজিরবিহীন বিতর্ক
বিরাট কোহলির সঙ্গে বোর্ড সভাপতির বক্তব্যে এমন ফারাক, সংঘাত নজিরবিহীন। কোনও কোনও মহল থেকে দাবি তোলা হচ্ছিল, এবার সৌরভের কিছু বলা উচিত। অনেকের বক্তব্য ছিল নির্বাচকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান অন্তত একবার সাংবাদিকদের সামনে এসে সত্যিটা স্পষ্ট করুন। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, বোর্ড গোটা বিষয়টি দেখে নেবে। বিসিসিআইয়ের কেউ প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও অনেকেই ঠারেঠোরে বলছিলেন, সৌরভই সত্যি কথা বলছেন, মিথ্যাচার করছেন বিরাটই!
প্ল্যানমাফিক প্রেস কনফারেন্স?
এমনিতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রেস রিলিজ পাঠিয়ে ভারতীয় দলের ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ব্যতিক্রম হলো আজ। টি ২০ বিশ্বকাপের দল ঘোষণার পর এই প্রথম সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন চেতন শর্মা, ভারতের দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের একদিনের দল ঘোষণা করতে। তা চলার পথেই হলো বিস্ফোরণ। প্রশ্ন উড়ে গেল সৌরভের দাবিকে বিরাটের খণ্ডন প্রসঙ্গে। চেতন শর্মা বললেন, এই প্রশ্নটার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম। এরপর তিনি সাফ বলেন, বিরাট কোহলি যখন টি ২০ বিশ্বকাপের আগে নেতৃত্ব ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন তখন বোর্ডকর্তাদের পাশাপাশি নির্বাচকরাও তাঁকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বলেছিলেন। দল নির্বাচনের আগে বিরাটের এই ঘোষণা আমাদের সকলকেই অবাক করেছিলাম। স্বাভাবিকভাবেই তাঁকে সকলে বলেন, এখন এই নিয়ে সিদ্ধান্ত না নিতে। বিশ্বকাপ হয়ে যাক, তারপর না হয় আলোচনা করা যাবে। আমরা চেয়েছিলাম, ভারত সেরা খেলাটা খেলুক। কোনও বিতর্কের আঁচ যেন না পড়ে।
চেতনের বিস্ফোরণ
চেতন শর্মার দাবি, টি ২০ বিশ্বকাপে ভারতের পারফরম্যান্সে যাতে নেতৃত্ব ছাড়ার বিষয়টি প্রভাব না ফেলে সে কথা ভেবেই বিরাটকে অনুরোধ করেছিলেন নির্বাচকরা। একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে সেটা করাই স্বাভাবিক। নির্বাচকরা আশঙ্কা করেছিলেন, বিরাট-সিদ্ধান্ত ভারতের খেলায় প্রভাব ফেলতে পারে। তাই টি ২০ বিশ্বকাপের আগে এই সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকার অনুরোধ। দল নির্বাচনী বৈঠকের সকলেই বিরাটকে বলেছিলেন। উপস্থিত আহ্বায়ক, বোর্ডের আধিকারিক, নির্বাচক সকলেই। এমন খবর এলে কে সেটা না করবেন? কিন্তু তিনি নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন। তাঁর সিদ্ধান্তকে আমরা সম্মান জানাই। তিনি তাঁর সিদ্ধান্তের কথা সংবাদমাধ্যমেও জানান, আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চলাকালীনই তিনি নাকি এই সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু আমরা সকলেই তাঁকে ক্যাপ্টেন্সি বিশ্বকাপের আগে ছাড়তে বারণ করি।
বিরাটের মিথ্যাচার?
টেস্ট দল ঘোষণার আগে একদিনের দলের অধিনায়কত্ব হারানোর কথা তিনি জানতে পারেন বলে জানিয়েছেন বিরাট। কিন্তু চেতন দাবি করেন, ভারতীয় ম্যানেজমেন্ট, অধিনায়ক, বোর্ড এমনকী ঘরোয়া ক্রিকেটারদের সঙ্গেও নির্বাচকদের কোথাও বোঝাপড়ার অভাব নেই। একদিনের দল ঘোষণা হলো শুক্রবার। অথচ টেস্ট সিরিজের আগেই ক্যাপ্টেন্সি নিয়ে বিরাটকে নির্বাচকদের সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছিল যাতে সিরিজের মাঝে তিনি এই খবর না পান। বিরাটের সঙ্গে প্রস্তুত হওয়ার পর্যাপ্ত সময়ও যাতে রোহিত শর্মা পান। টেস্ট দল নির্বাচনের আগেই বিরাটকে আমরা জানিয়েছিলাম।
অন্য মাত্রায় বিতর্ক
বিরাট-রোহিতের
মধ্যে
কোনও
সংঘাত
নেই
বলে
দাবি
করে
চেতন
বলেন,
বিতর্ক
সব
পড়ে
থাকুক
২০২১
সালে।
এবার
সেরা
দল
কীভাবে
হওয়া
যায়
তা
নিয়ে
আলোচনা
চলুক।
সত্যি
তা
হবে
কি?
সেটাই
এখন
লাখ
টাকার
প্রশ্ন।
দক্ষিণ
আফ্রিকায়
গিয়ে
সেঞ্চুরিয়ন
টেস্টের
আগে
ও
পরে
সাংবাদিকদের
সামনে
আসেননি
বিরাট।
জোহানেসবার্গেও
কি
তেমন
কিছু
হবে?
নাকি
বিরাট
বিস্ফোরণের
পালা?