IPL Auction 2022: সহজ ছিল না জীবন, কতটা কণ্টকাবৃত পথ অতিক্রম করে আজ স্বপ্নের পথে হাঁটছেন সাকারিয়া, দেখে নিন
IPL Auction 2022: অন্যান্য তরুণের মতো সহজ ছিল না জীবন, কতটা কণ্টকাবৃত পথ অতিক্রম করে আজ স্বপ্নের পথে হাঁটছেন স
অনেক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে, অনেক প্রতিকূলতাকে কাটিয়ে নতুন ভোরের আলো দেখেছেন চেতন সাকারিয়া। আর্থিক অনটন যে কখনও প্রতিভার সামনে বাধা ধরে দাঁড়াতে পারে না তার জ্বলন্ত উদাহরন সাকারিয়। অতি দরিদ্র পরিবারের সন্তান নিজের অধ্যাবসা এবং কঠিন অনুশীলনের মধ্যে দিয়ে উঠে এসেছেন ভারতীয় ক্রিকেটের মূলস্রোতে। রাজস্থান রয়্যালসের জার্সিতে গত বছর আইপিএল-এ নজরটানা সাকারিয়া এই বারও দল পেয়েছেন তবে গত বারের চেয়ে অনেক বেশি মূল্যে।
প্রথম আইপিএল ব্রেক:
১.২ কোটি টাকা খরচ করে ২০২১ সালে আইপিএল-এর নিলামে চেতন সাকারিয়াকে তুলেছিল রাজস্থান রয়্যালস। তরুণ এই পেসারের পারফরম্যান্স অভিভূত করেছিল ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের।
২০২২ আইপিএল নিলাম:
১.২ কোটি টাকায় ২০২১ নিলামে রাজস্থানের জার্সি গায়ে চাপানো চেতনের পারফরম্যান্স থেকেই পরিষ্কার ছিল এই বারের নিলামে দর পাবেন তিনি। এই বারও চেতনকে দলে নেওয়ার জন্য ঝাঁপিয়েছিল রাজস্থান রয়্যালস। চার কোটি টাকা পর্যন্ত লড়াইয়ে ছিল তারা। কিন্তু দিল্লি ক্যাপিটলস ৪.২ কোটি টাকা দর হাঁকায় সরে আসে রাজস্থান। গত আইপিএল-এ রাজস্থানের জার্সিতে ১৪ ম্যাচে ১৪টি উইকেট পেয়েছিলেন সাকারিয়া।
ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক ছন্দ:
ঘরোয়া ক্রিকেটে সৌরাষ্ট্রের হয়ে খেলেন চেতন সাকারিয়া। ২০১৭-১৮ তে বিজয় হাজারেতে খেলে ডোমেস্টিকে ক্রিকেটে নিজের অভিষেক করেছিলেন তিনি। ২০১৮-১৯ রঞ্জি ট্রফিতে সৌরাষ্ট্রের হয়ে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। সৈয়স মুস্তাক আলি টি ২০-তেও নজরকাড়েন তিনি।
উঠে আসার লড়াই:
গুজরাতের ভাবনগর জেলা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে ভারতেজ নামে একটি ছোট গ্রামে জন্ম তাঁর। চেতনের বাবা পেশায় টেম্বো চালক। অতি কষ্টে চেতনকে বড় করে তোলেন তিনি। ক্রিকেট খেলতে অনেক খরচ, সেই খরচ বহন করার সমর্থ ছিল না তাঁর বাবা কাঞ্জিভাইয়ের। চেতনের মামা ব্যবসায়ী। চেতনকে তিনিই ক্রিকেট নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সাহায্য করেছেন তবে তার পরিবর্তে মামাকে ব্যবসার কাজে সাহায্য করতে হত চেতনকে। এতটাই পরিবারের আর্থিক দুর্দশা ছিল যে বাড়িতে একটি পর্যন্ত ছিল না গত বছর পর্যন্ত। আর পাঁচটা বাবা-মায়ের মতো চেতনের বাবা চাইতেন খেলার থেকে বেশি মনযোগ পড়াশোনায় দিক ছেলে কারণ তাঁর পক্ষে পাঁচ জনের সংসার চালানো সম্ভব ছিল না।
শেলডন জ্যাকসনের থেকে জুতো উপহার:
ক্রিকেট খেলার জন্য উপযুক্ত জুতো ছিল না চেতন সাকারিয়ার। সৌরাষ্ট্রের হয়ে যখন অনূর্ধ্ব-১৯ দলে যখন সুযোগ পান তখন সতীর্থদের জুতো ধার করে খেলতেন তিনি। পরে একদিন অনুশীলনের সময়ে ঘরোয়া ক্রিকেটের তারকা মুখ শেলডন জ্যাকসনের সঙ্গে পরিচিতি হয় তাঁর। চেতনকে একটি চ্যালেঞ্জে শেলডন জানিয়েছিলেন যদি নেটে আউট করতে পার তা হলে জুতো কিনে দেব। শেলডনকে বোল্ড করে প্রথমবার স্পাইক জুতো পুরস্কা হিসেবে পান চেতন।
বুকে পাথর চাপা রেখে আইপিএল খেলতে নামা:
কেরিয়ারের উন্নতির সময়েই এক মর্মান্তিক ঘটনা তাঁর জীবনকে ঘেটে দিয়েছিল। সৌরাষ্ট্রের হয়ে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফি খেলার সময়ে অজ্ঞাত কারণে আত্মহত্যা করেন তাঁর দাদা। খেলার মাঝে যদিও কিছুই তাঁকে জানায়নি পরিবার। বাড়িতে ফিরে সবটা জানতে পারেন। দাদার অকাল প্রয়াণের পর বুকে পাথর চাপা দিয়ে মাঠে নেমেছিলেন আইপিএল-এ। দাদার সঙ্গে বন্ধুর মতো সম্পর্ক ছিল চেতনের। আজও মাঝে মধ্যেই তাঁর কথায় উঠে আসে দাদার প্রসঙ্গ।