আইপিএলে ম্যাচ বাড়ায় আন্তর্জাতিক সূচিতে বদল আনছে আইসিসি! ভারতীয় দল নিয়ে বিশেষ পদক্ষেপ বিসিসিআইয়ের
আইপিএলের মিডিয়া স্বত্ব এবার রেকর্ড ৪৮,৩৯০ কোটি টাকায় বিক্রি হয়েছে। এতে খুশি হলেও অবাক নন বিসিসিআইয়ের কর্তারা। ২০২৩ থেকে ২০২৭ অবধি আইপিএলে হবে মোট ৪১০টি ম্যাচ। ২০২৩ ও ২০২৪ সালে আইপিএলে থাকবে ৭৪টি করে ম্যাচ। ২০২৫ ও ২০২৬ সালে থাকবে ৮৪টি করে এবং ২০২৭-এ ৯৪টি। আইপিএলের জন্য আড়াই মাস সময় বরাদ্দ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সূচি আইসিসি ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছেন বিসিসিআই সচিব জয় শাহ।
ডিজিটাল মাধ্যমে জনপ্রিয়তা
আইপিএলের ডিজিটাল স্বত্বে যে রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি হয়েছে তাতে খুশি জয়। তিনি জানিয়েছেন, ২০১৭ সালে যেখানে ডিজিটাল মাধ্যমে আইপিএল দেখেছেন প্রায় ৫৬০ মিলিয়ন দর্শক, গত বছরই সেই সংখ্যা বেড়ে হয় ৬৬৫ মিলিয়ন। ২০২৪ সালে ভারতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়াবে ৯০০ মিলিয়ন এবং বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দরে ডাটা পাওয়া যাবে ভারতে। ফলে টিভিতে আইপিএল যেমন দর্শকরা দেখেন তেমন দেখবেন, কিন্তু আইপিএল ডিজিটাল মাধ্যমে দেখার ক্ষেত্রেও বিরাট পরিবর্তন আসবে বলে নিশ্চিত জয়।
টিভি দর্শক নিয়ে
চলতি বছরের আইপিএলে টিভি দর্শকের সংখ্যা ৩০ শতাংশ কমেছে। অনেকে মনে করছেন, দীর্ঘ সময় ধরে টুর্নামেন্ট চলার ফলেই এমনটা হয়েছে। তবে এই তত্ত্ব মানতে রাজি নন জয় শাহ। তাঁর যুক্তি, ২০২০ ও ২০২১ সালে লকডাউন চলাকালীন মানুষ যখন বাইরে বেরোতে পারছিলেন না, তখন তাঁদের কাছে আইপিএল ছিল বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম। সে কারণে আইপিএলে টিভি ভিউয়ারশিপ এক লাফে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু করেছেন। জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হওয়ায় তাঁদের বাইরে বেরোতে হচ্ছে। বিকেলের ম্যাচগুলি অনেকে পাব বা রেস্তোরাঁয় বসে দেখেছেন। অনেকে ডিটিএইচ কানেকশন নিয়ে দেখেছেন। তারপরও টিভির দর্শকের সংখ্যা তুলনা করতে হলে তা করা উচিত ২০১৯ সালের সঙ্গে ২০২২ সালের।
আইপিএলের জন্য আইসিসির পদক্ষেপ
জয় শাহ জানিয়েছেন, আইসিসি পরবর্তী যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সূচি বা এফটিপি ঘোষণা করবে তাতে আড়াই মাসের উইন্ডো রাখা হবে। বিশ্বের তারকা ক্রিকেটাররা যাতে তাতে অংশ নিতে পারেন সে কারণেই এই পদক্ষেপ। এ ব্যাপারে বিসিসিআই অন্যান্য দেশের বোর্ডের সঙ্গেও কথা বলছে। আইপিএল প্রতি বছর দুই ধাপে হতে পারে যে জল্পনা চলছে তা উড়িয়ে না দিয়ে জয় শাহ বলেছেন, বিদেশেও কিছু ম্যাচ আয়োজনের প্রস্তাব রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কথা বলেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ভারতীয় দল নিয়ে পরিকল্পনা
আইপিএলের ব্যাপ্তি বাড়লেও তার প্রভাব আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পড়বে না বলেই দাবি করেছেন জয় শাহ। তিনি বলেছেন, ভারত শুধু অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্যান্ডের সঙ্গে নয়, সব দেশের সঙ্গে খেলতে অঙ্গীকারবদ্ধ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সূচি মেনেই চলবে ভারত, গুরুত্ব দেবে দ্বিপাক্ষিক সিরিজকেও। ঠাসা ক্রীড়াসূচিতে ফিটনেস বা মানসিক ক্লান্তি এড়াতে ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টও করা হচ্ছে। জয় ইতিমধ্যেই এনসিএ প্রধান ভিভিএস লক্ষ্মণের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাতে ঠিক হয়েছে ৫০ জন ক্রিকেটারের পুল থাকবে। ফলে এমনও হবে একটা দেশে হয়তো ভারতের টেস্ট দল খেলছে, তখনই অন্য কোনও দেশে ভারত সাদা বলের সিরিজ খেলবে। উল্লেখ্য, গত বছরও ভারতের টেস্ট দল ইংল্যান্ডে থাকাকালীন ভারত সাদা বলের সিরিজ খেলে শ্রীলঙ্কায়। এ মাসেও ভারতের টেস্ট দল ইংল্যান্ড যাবে বৃহস্পতিবার। টেস্ট দল ইংল্যান্ডে থাকাকালীন ভারতের টি ২০ দল যাবে আয়ারল্যান্ডে।
মহিলাদের আইপিএল
সামনের বছর থেকে শুরু হচ্ছে মহিলাদের আইপিএলও। জয় শাহ জানিয়েছেন, প্রথম বছরের মহিলাদের আইপিএল হবে পাঁচ বা ছয়টি দলকে নিয়ে। আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিদের অনেকেই মহিলাদের আইপিএলের দল কেনার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছেন। বিদেশ থেকেও অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। সব বোর্ডের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে কখন তারকাদের পাওয়া যাবে। মহিলাদের আইপিএলও সব দিক দিয়ে চরম সাফল্য পাবে বলে আশাবাদী বোর্ড সচিব।