
মহিলাদের আইপিএলের দামামা বেজে গেল, দিনটি কেন স্মরণীয় হয়ে রইল স্মৃতি-দীপ্তির জন্য?
মহিলাদের এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে হরমনপ্রীত কৌরের নেতৃত্বাধীন ভারত। বিসিসিআইয়ের সভাপতি থাকাকালীন যে কাজগুলি তাঁকে তৃপ্তি দিয়েছে তার মধ্যে মহিলা ক্রিকেটের অগ্রগতিকেও চিহ্নিত করেছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। মহারাজ বারবারই বলেন, কমনওয়েলথ গেমসে হরমনপ্রীতরাই সোনা জয়ের দাবিদার ছিলেন বলে তাঁর উপলব্ধি। ভারতের মহিলা ক্রিকেট দল যেভাবে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলির বিরুদ্ধে দারুণ ক্রিকেট খেলছে তাতে বোর্ডকর্তারা সন্তুষ্ট। আরও উন্নতির জন্যই মহিলাদের আইপিএল শুরুর পরিকল্পনা।

মহিলাদের আইপিএলকে ছাড়পত্র
মহিলাদের টি ২০ চ্যালেঞ্জে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ক্রিকেটাররা অংশ নিয়ে থাকেন। ইংল্যান্ডে যেমন দ্য হান্ড্রেড রয়েছে কিংবা অস্ট্রেলিয়ায় মহিলাদের বিগ ব্যাশ, সেগুলিই ওই দেশগুলির মহিলা ক্রিকেটারদের খেলার মানকে আরও উঁচুতে নিয়ে যেতে সহায়কের ভূমিকা পালন করেছে বলে মনে করেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। ভারতে মহিলাদের টি ২০ চ্যালেঞ্জ আইপিএলের ফাঁকে হয়ে থাকে। তাতেও বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটাররা অংশ নেন। কিন্তু এবার থেকে ভারতেও শুরু হবে মহিলাদের ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, যা মহিলাদের আইপিএল নামে পরিচিত হতে চলেছে।

মার্চেই হবে প্রথম সংস্করণ
বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও সচিব জয় শাহ-ই মহিলাদের আইপিএল শুরুর মঞ্চ প্রস্তুত করে ফেলেছিলেন। আজ মুম্বইয়ে বিসিসিআইয়ের বার্ষিক সাধারণ সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলির মধ্যে অন্যতম হলো মহিলাদের আইপিএল শুরু করা। আগামী বছর থেকেই তা শুরু হচ্ছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া মিতালি রাজ, ঝুলন গোস্বামী মহিলাদের আইপিএলে খেলতে পারেন বলে সূত্রের খবর। ঠিক কবে থেকে মহিলাদের আইপিএল হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে পাঁচটি দলকে নিয়ে প্রথম মহিলা আইপিএল মার্চে হবে বলে জানা যাচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় মহিলাদের টি ২০ বিশ্বকাপ শেষ হলেই। উল্লেখ্য, আইপিএল চেয়ারম্যান হলেন অরুণ ধুমল। আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলে এলেন অভিষেক ডালমিয়া।

কেমন হবে নিয়ম?
জনপ্রিয় ক্রিকেট ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোর তথ্য অনুসারে, প্রতিটি দলে ১৮ জন ক্রিকেটারকে সর্বাধিক রাখা যাবে, সর্বাধিক বিদেশির সংখ্যা থাকবে ৬। প্রথম একাদশে সর্বাধিক ৫ বিদেশি রাখা যাবে, যা পুরুষদের আইপিএলের নিয়মের চেয়ে কিছুটা আলাদা। এই পাঁচজন ক্রিকেটারের মধ্যে একজন অ্যাসোসিয়েট দেশের ক্রিকেটার রাখা বাধ্যতামূলক।

স্মৃতি ও দীপ্তির স্মরণীয় উত্থান
এদিনই আবার আইসিসি মহিলা টি ২০ র্যাঙ্কিং প্রকাশিত হয়েছে। ব্যাটার ও বোলারদের তালিকায় কেরিয়ারের সেরা দ্বিতীয় স্থান দখল করেছেন স্মৃতি মান্ধানা ও দীপ্তি শর্মা। মহিলাদের একদিনের আন্তর্জাতিকে বিশ্বের ১ নম্বর ব্যাটার স্মৃতি ফাইনালে ২৫ বলে অপরাজিত ৫১ রানের ইনিংস খেলায় তাঁর রেটিং পয়েন্ট হয়েছে ৭৩০, এই তালিকার শীর্ষে থাকা অস্ট্রেলিয়ার বেথ মুনির চেয়ে ১৩ পয়েন্ট কম। বাংলার দীপ্তি শর্মা ফাইনালে ৪ ওভারে মাত্র ৭ রান দিয়েছিলেন. তার আগে তাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে সাত রানের বিনিময়ে তিন উইকেট নিয়েছিলেন। এই দুরন্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে তিনি এশিয়া কাপে ১৩ উইকেট নিয়ে যুগ্ম সর্বাধিক উইকেটশিকারী হন। তাঁর রেটিং পয়েন্ট ৭৪২, শীর্ষে থাকা ইংল্যান্ডের স্পিনার সোফি এক্লেস্টোনের চেয়ে মাত্র ১৪ পয়েন্ট কম। অলরাউন্ডারদের তালিকায় দীপ্তি রয়েছেন তিনে। ফাইনালে পাঁচ রানে তিন উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের সেরা হন রেণুকা সিং। তিনি পাঁচ ধাপ উঠে বোলারদের তালিকায় কেরিয়ারের সেরা তিনে পৌঁছে গিয়েছেন। স্নেহ রানা পাঁচ ধাপ উঠে ১০-এ রয়েছেন। ব্যাটারদের তালিকায় শেফালি ভার্মা রয়েছেন সাতে, হরমনপ্রীত ১৪ নম্বরে। বোলারদের তালিকায় রাজেশ্বরী গায়কোয়াড় ১৫ ধাপ উঠে চলে এসেছেন ১৭ নম্বরে।