ঝুলনের মাইলস্টোন ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে মহিলা বিশ্বকাপের সেমিতে অস্ট্রেলিয়া, মিতালিদের সামনে কোন সমীকরণ?
চলতি আইসিসি মহিলা বিশ্বকাপে পাঁচ ম্যাচে অপরাজেয় থেকে প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনালে জায়গা নিশ্চিত করল অস্ট্রেলিয়া। আজ অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে মেগ ল্যানিংয়ের অধিনায়কোচিত ৯৭ রানের দৌলতে ভারতকে অজিরা হারাল ৬ উইকেটে, ৩ বল বাকি থাকতে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে রেকর্ড রান তাড়া করে এসেছে এদিনের জয়। আর তাতেই সেমিফাইনালে যাওয়ার অঙ্কটা কিছুটা কঠিন হয়ে গেল মিতালি, হরমনপ্রীতদের।
|
অজিদের দাপট
অস্ট্রেলিয়ার সামনে জয়ের জন্য ২৭৮ রানের লক্ষ্যমাত্রা রেখেছিল ভারত। শতরানের ওপেনিং জুটি অস্ট্রেলিয়ার ভিত মজবুত করে দেয়। ১৭তম ওভারে রাজেশ্বরী গায়কোয়াড়কে দিয়ে ভুলবশতঃ ৭ বলের ওভার করান আম্পায়ার শরফুদ্দৌল্লা। ১৯.২ ওভারে অ্যালিসা হিলি ৯টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৬৫ বলে ৭২ রান করে আউট হন দলের ১২১ রানের মাথায়। স্নেহ রানা অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে প্রথম আঘাতটি হানেন। ২১তম ওভারের শেষ বলে পূজা বস্ত্রকার ফেরান রাচেল হেইন্সকেষ তিনি ৫৩ বলে ৪৩ রান করেন। অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় উইকেটটি পড়ে ১২৩ রানের মাথায়।
|
ল্যানিংয়ের ব্যাটে শেষ চারে
এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১০৩ রান যোগ করেন অধিনায়ক মেগ ল্যানিং ও এলিস পেরি। ৪১তম ওভারে বৃষ্টিতে খেলা বন্ধের সময় ডাকওয়ার্থ-লুইস নিয়মে অস্ট্রেলিয়া এগিয়েই ছিল। তখন অজিদের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ২২৫। বৃষ্টির কারণে বিরতির পর খেলা শুরুর পর তৃতীয় বলেই এলিস পেরির উইকেট তুলে নেন পূজা বস্ত্রকার। পেরি ৫১ বলে ২৮ রান করে আউট হন দলের ২২৬ রানের মাথায়। তবে এরপর বেথ মুনিকে নিয়ে দলকে জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেন ল্যানিং। ১৩টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১০৭ বলে ৯৭ রানে তিনি যখন মেঘনা সিংয়ের বলে আউট হন, তখন অজিদের জিততে ৮ বলে দরকার ৮ রান। তিন বল বাকি থাকতেই জয় নিশ্চিত করে সেমিফাইনালে পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া। বেথ মুনি ২০ বেল ৩০ রান করে অপরাজিত থাকেন। কেরিয়ারের ২০০তম একদিনের আন্তর্জাতিকে ঝুলন গোস্বামী ৯.৩ ওভারে ৬৪ রান খরচ করে কোনও উইকেট পাননি। ৪৩ রানে ২ উইকেট নেন বস্ত্রকার। স্নেহ রানা ৫৬ রানে ১টি এবং মেঘনা সিং ৬৮ রানে ১টি উইকেট পান। রাজেশ্বরী গায়কোয়াড় ১০ ওভারে ৪৮ রান দিয়ে কোনও উইকেট পাননি।
|
মিতালির টার্গেট
দলের পরাজয়ের পর ভারত অধিনায়ক মিতালি রাজ বলেন, হারার পর মনে হয় আরও ১০-১৫ রান বেশি করলে ভালো হতো। অস্ট্রেলিয়া ভালো শুরুর পর আমাদের ফিল্ডাররা বোলারদের সাহায্য করতে পারেননি। ফিল্ডিং ভালো হলে কাজটা সহজ হতো। এই ম্যাচে বোলাররা কাঙ্ক্ষিত পারফরম্যান্স দেখাতে না পারলেও আগের ম্যাচগুলিতে তাঁরা ভালো খেলেছেন। বাকি ম্যাচগুলিতে সব বিভাগেই ভালো করতে হবে। সেমিফাইনালে উঠতে বাকি দুটি ম্যাচই আমাদের জিততে হবে। ফাস্ট বোলার হিসেবে ঝুলন গোস্বামী ২০০তম একদিনের ম্যাচ খেলায় আপ্লুত মিতালি বলেন, ঝুলন আমাদের দেশের মেয়েদের কাছে নিশ্চিতভাবেই রোল মডেল।
|
পয়েন্ট তালিকা
এই নিয়ে টানা ১৭টি ম্যাচে রান তাড়া করে জিতে ভারতের পুরুষ দলের নজির স্পর্শ করল অস্ট্রেলিয়ার মহিলা দল। ভারতের পুরুষ দলও ২০০৫ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে রান তাড়া করে টানা ১৭টি একদিনের আন্তর্জাতিক জিতেছিল। ৫ ম্যাচে ৫টিতেই জিতে ১০ পয়েন্ট নিয়ে অস্ট্রেলিয়া সেমিফাইনালে উঠে গিয়েছে। চার ম্যাচের চারটিতেই জিতে ৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৫ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ভারত ৫ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে রইল চতুর্থ স্থানে। ৫ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়েই পাঁচে নিউজিল্যান্ড, ভারতের চেয়ে নেট রান রেটে পিছিয়ে তারা। ৪ ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে ইংল্যান্ড। ২২ মার্চ ভারতের পরের ম্যাচ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। ২৭ মার্চ প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা।