বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত তৃতীয় দিনের খেলা, জুটিতে ৫ উইকেট তুলে অজিদের চাপে রাখলেন জাদেজা-কূলদীপ
অস্ট্রেলিয়া বনাম ভারত চতুর্থ ও শেষ টেস্টের তৃতীয় দিনে প্রতিবেদন। খারাপ আলো ও বৃষ্টির জন্য তাড়াতাড়ি শেষ করে দেওয়া হল দিনের খেলা।
খারাপ আলো ও বৃষ্টিতে ১৬ ওভার বাকি থাকতেই বন্ধ হয়ে গেল ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া সিডনি টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা। দিনের শুরুটা অস্ট্রেলিয়া বেশ ভালভাবে করলেও মধ্যাহ্নভোজের পর থেকে জাদেজা ও কূলদীপ জুটি ৫টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার উপর চাপ বজায় রাখলেন। দিনের শেষে স্কোর ২৩৬/৬। ২৮ রানে হ্যান্ডসকম্ব ও ২৫ রানে কামিন্স অপরাজিত আছেন।
এদিন সকাল থেকেই সিডনির আকাশ ছিল মেঘলা। চা-বিরতির পর খেলা শুরু হলে আলো ক্রমশ কমতে থাকে। তখন থেকেই যে কোনও সময় খেলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হয়েছিল। তা এড়াতে বিরাট কোহলি দুপ্রান্ত থেকে টানা স্পিনারদের দিয়ে বল করিয়ে যান। এমনকী তৃতীয় নতুন বলও নেয়নি ভারত। তা সত্ত্বেও প্রথমে খারাপ আলোর জন্য খেলা বন্ধ রাখা হয়। পরে জোরে বৃষ্টি নামলে এদিনের মতো খেলা শেষ ঘোষণা করেন আম্পায়াররা। তবে এদিন যে কটি ওভার করা যায়নি তা আগামী দুদিন ৩০ মিনিট আগে খেলা শুরু করে পুষিয়ে দেওয়া হবে।
তবে তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনটা কিন্তু ছিল অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে। সিডনির পাটা পিচে ভারতীয়দের শিবিরে লড়াইটা পৌঁছে দিতে শুরু করেছিলেন মার্কাস হ্যারিস। কেবলমাত্র উসমান খোয়াজা (২৭)-র উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া তুলেছিল ৯৮ রান। শামি জাদেজার বিরুদ্ধে বেশ আগ্রাসী খেলা শুরু করেছিলেন খোয়াজা। কিন্তু অতিরিক্ত মারতে গিয়েই কুলদীপের গুগলিতে পরাস্ত হন তিনি।
এরপর এই টেস্টেই দলে আসা মার্নুস লাবুসচাঙ্গে ও হ্যারিস-ও লম্বা জুটি গড়ার সম্ভাবনা দেখিয়েছিলেন। তবে ক্রিকেটে প্রবাদ আছে বিরতি ব্য়াটসম্য়ানদের মনোসংযোগ নষ্ট করে দেয়। এদিনও ঠিক তাই হয়েছে। মধ্য়াহ্নভোজের পরেই খেলা ঘুরিয়ে দেন জাদেজা ও কুলদীপ। এই সময়ে শামি রিভার্স সুইং-ও পেতে শুরু করেন। নিটফল ভারত চা বিরতির আগেই ভারত অস্ট্রেলিয়ার আরও ৪ উইকেট ফেলে দেয়।
প্রথমে জাদেজার বলে ফিরে যান ভয়ঙ্কর হতে যাওয়া হ্যারিস (৭৯)। জাদেজার একটি অফস্টাম্পের বাইরের বল খোঁচা মেরে উইকেটে টেনে আনেন তিনি। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি শন মার্শও। জাদেজারই বলে খোঁচা মেরে তিনি স্লিপে ক্য়াচ দিয়ে ফিরে যান মাত্র ৮ রানে। এর কিছু পরেই শামির বলে পতন হয় আরেক সেট ব্যাটসম্য়ান লাবুসচাঙ্গে (৩৮)-রও। মিডউইকেটে ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়েঅসাধারণ ক্য়াচ নেন রাহানে।
এরপর অল্প কিছু সময়ের জন্য হলেও অজি ইনিংসকে থিতু করেছিলেন হ্যান্ডসকম্ব ও ট্রাভিস হেড। নিজেদের মধ্যে ৪০ রানের জুটি গড়ে ভালই এগোচ্ছিলেন দুজনে। কিন্তু, কুলদীপের একটি নিচু ফুলটস সোজা তাঁর হাতেই তুলে দিয়ে ২০ রান করে ফেরেন হেড।
এরপর চা-বিরতির ওপাড়ে কুলদীপের চাতুর্যের কাছে হার মানেন অস্ট্রেলিয় অধিনায়ক টিম পেইন (৫)। প্রথমে কুলদীপ একটি গুগলি দিয়েছিলেন যা স্পিন করেনি। এরপর অফস্টাম্পের বাইরে একটি ফ্লাইটেড ডেলিভারি করেন, যা অনেকটা ঘুরে পেইনের উইকেট ভেঙে দেয়। বলটি বুঝতেই পারেননি পেইন।
কিন্তু তারপর সিরিজের শেষ টেস্টেও আরও একবার ভারতের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছেন প্য়াট কামিন্স। হ্যান্ডসকম্ব-কামিন্সই অস্ট্রেলিয়ার শেষ প্রতিষ্ঠিত ব্য়াটিং জুটি। সিডনির পিচ এখনও ভাঙেনি। তবে শেষ দুদিনে পিচ এতটা পাটা থাকবে বলে মনে হয় না।