এশিয়া কাপ, পাকিস্তান বনাম আফগানিস্তান, আরও এক উত্তেজক এশিয় প্রতিদ্বন্দ্বিতা
আজ শুরু হচ্ছে এশিয়া কাপ ২০১৮-র সুপার ফোর পর্ব। আবু ধাবিতে পাকিস্তান খেলবে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচটির প্রিভিউ এবং দুপক্ষের সম্ভাব্য এগারো ।
এশিয়াতে ভারত বনাম পাকিস্তান, ভারত বনাম বাংলাদেশ - এরকম বেশ কিছু জমজমাট ক্রিকেট-প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে। সেই তালিকায় সম্প্রতি জুড়েছে আরো একটি পাকিস্তান বনাম আফগানিস্তান। এর পিছনে রয়েছে দুই দেশের রাজনৈতিক টানাপোড়েন।
অথচ দুই প্রতিবেশী দেশের ক্রিকেটিয় সম্পর্ক কিন্তু আজকের নয়, বেশ কয়েক দশকের পুরনো। ৯০-এর দশকে যেসব আফগান নাগরিক পাক শহর পেশওয়ারে উদ্বাস্তু হিসেবে ছিলেন তাঁদের মধ্যেই প্রথম ক্রিকেট জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। আবার ২০১১-১২'তে আইসিসি-র পূর্ণ সদস্য দেশ হিসেবে পাকিস্তানই প্রথম আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটট খেলেছিল। দুই বোর্ডের সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত ভাল।
কিন্তু সেই সম্পর্ক কিন্তু সাম্প্রতিক অতীতে যতেষ্ট তিক্ত হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে গত বছর কাবুলে একটি বোমো বিস্ফোরণকে কেন্দ্র করে আফগানিস্তান, পাকিস্তানের সঙ্গে টি২০ সিরিজ খেলতে অস্বীকার করার পর থেকে এই দুই বোর্ডের সম্পর্কের চরম অবনতি হয়েছে। কাজেই শুক্রবারের এই ম্যাচ ঘিরে যথেষ্ট উত্তেজনা রয়েছে দুই দেশে।
এশিয়া কাপের সুপার ফোর পর্বের ওঠার পথটা কিন্তু দুই দলের সম্পূর্ণ দুইরকম গিয়েছে। একদিকে শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের মতো ক্রিকেটের প্রতিষ্ঠিত দলগুলিকে ছিটকে দিয়ে এশিয় ক্রিকেটে নতুন শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটেছে আফগানিস্তানের। আর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিরুদ্ধে ৮ উিকেটে জঘন্য হার হয়েছে পাকিস্তানের।
আফগান বোলিংকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাঁদের দুই সুপার স্পিনার রশিদ খান ও মুজিব উর রহমান। দুই ম্যাচে এই দুই স্পিনার মিলে ৬ উইকেটই তোলেননি তাঁদের দুর্দান্ত নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে ইনিংসের মাঝের ওবারগুলোতে প্রতিপক্ষের রান আটকে যাচ্ছে। তাদের সঙ্গে উদ্দীপ্ত বোলিং করছেন গুলবদিন নইম ও আফতাব আলম।
বোলিং নিয়ে তারা এতটাই আত্মবিশ্বাসী যে তাঁরা বলছেন বোর্ডে ২৫০ রান থাকলেই তাদের বোলাররা যে কোনও দলকে হারিয়ে দিতে পারেন। সেই রান তোলার জন্য তাদের ভরসা মহম্মদ শাহজাদ, রহমত শাহ ও হাসমতুলাল শহিদি। তবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচে তাদের লোয়ার অর্ডারও কিন্তু দেখিয়ে দিয়েছে প্রয়োজনে তারা কী করতে পারে।
পাকিস্তান অবশ্যই গ্রুপের ভারত ম্যাচের ব্যার্থতা ঝেড়ে নতুন করে শুরু করতে চাইবে সুপার ফোর পর্বে। পাক থিঙ্ক-ট্যাঙ্কের প্রধান চিন্তায় জায়গা তাদের ব্যাটিং। ভারতের বিরুদ্ধে মাত্র ৭৭ রানের মধ্যে তাদের ৮ উইকেট চলে গিয়েছিল। ফখর জামান তাদের একটা ভল শুরু দিন এটাই চাইছে তারা।
পাকিস্তানের হাতে অবশ্য বিশ্বের যে কোনও দলকে ঘায়েল করার মতো পেস আক্রমণ রয়েছে। জুনেইদ খানের মতো বোলারকে দলের বাইরে থাকতে হচ্ছে, এতেই তাদের শক্তি বোঝা যায়। তবে আজ জুনেইদ মাঠে নামতেও পারেন। কারণ হাসান আলি বা উসমান খানকে নিয়ে চিন্তা না থাকলেও দিন কে দিন মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছেন তাদের বোলিং আক্রমণের প্রধান ভরসা মহম্মদ আমির।
একের পর এক ম্যাচে তিনি উদ্যমী বল করছেন। কিন্তু কোনও এক অদ্ভুত কারণে তাঁর ঝুলিতে উইকেট আসছে না। এই বছর একদিনের ম্যাচ থেকে তাঁর সংগ্রহ মাত্র তিনটি উইকেট। তাই আজ পাকিস্তান তাঁকে বসিয়ে জুনেইদকে খেলাতে পারে। আরও একটি বদল হতে পারে পাক দলে। ভারতের বিরুদ্ধে ম্যআচে পিঠে চোট পেয়েছিলেন পাক স্পিনার শাদাব খান। তাণর হদলে দলে আসতে পারেন মহম্মদ নওয়াজ।
দেখে নেওয়া যাক দুই দলের সম্ভাব্য প্রথম একাদশ -
পাকিস্তান: ইমাম উল-হক, ফখর জামান, বাবর আজম, শোয়েব মালিক, সরফরাজ আহমেদ, আসিফ আলি, শাদাব খান / মহম্মদ নওয়াজ, ফাহিম আশরাফ, জুনেইদ খান / মহম্মদ আমির, হাসান আলি, উসমান খান।
আফগানিস্তান: মহম্মদ শাহজাদ, ইহসানউল্লা জানাত, রহমত শাহ, হাশমতুল্লা শহিদি, আসগর আফগান, সামিউল্লাহ শেনওয়ারী, মহম্মদ নবি, গুলবদিন নইব, রশিদ খান, আফতাব আলম, মুজিব উর রহমান।
[আরও পড়ুন:এশিয়া কাপ, সুপার ফোরে আজ ভারত বনাম বাংলাদেশ, হার্দিকের বিকল্প খুঁজছে দল]