এশিয়া কাপ ২০১৮, শেষ লড়াইয়ে আঘাতে জর্জরিত বাংলার বাঘেদের বিরুদ্ধে এগিয়ে ভারত
এশিয়া কাপ ২০১৮ ফাইনাল, ভারত বনাম বাংলাদেশ ম্যাচের প্রিভিউ এবং কোথায়, কখন এই ম্যাচ দেখা যাবে।
এশিয়া কাপের শুরুর থেকে স্পনশরদের লাগাতার প্রচারে, ভারত-পাক ফাইনাল প্রায় পাকাই হয়ে গিয়েছিল। সমর্থকদের আর স্পনশরদের সেই ছকে জল ঢেলে দিয়েছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানকে ৩৭ রানে হারিয়ে ২০১৪ সালের পর আবারও শুক্রবার এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি বাংলাদেশ। সেইবার টি২০ ফর্ম্যাটে জিতেছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির ভারত। এবার রোহিত শর্মার নেতৃত্বেও জিততে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
টুর্নামেন্টের সুপার ফোর পর্বেই বাংলাদেশকে বিশাল ৭ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়েছিল ভারত। টুর্নামেন্টে এখনও পর্যন্ত ভারতই অপরাজিত দল (আফগানিস্তানের সঙ্গে অমীমাংসিত)। তার উপরে চোট আঘাতের তীব্র সমস্যায় ভুগছে বাংলাদেশ।
টুর্নামেন্টের প্রথমদিনই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলায় হাত ভেঙে এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে যান বাংলাদেশি ওপেনার তামিম ইকবাল। তিনি বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকে এখনও ওপেনিং স্লট গুছিয়ে নিতে পারেনি বাংলাদেশ। তার উপর আঙুলের পুরনো চোট ভোগানোয় দেশে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন বাংলাদেশ দলের আরেক প্রধান ভরসা সাকিব আল হাসান। কাজেই খাতায় কলমে ফাইনালে অবশ্যই ভারত বাংলাদেশের থেকে কয়েক যোজন এগিয়ে আছে।
কিন্তু ক্রিকেট মহা অনিশ্চয়তার খেলা। খাতা-কলমের হিসেব সবসময় মেলে না। এখনও পর্যন্ত এশিয়া কাপে ভারতের দুই ওপেনার শিখর ধাওয়ান ও রোহিত শর্মা দুর্দান্ত সাফল্য পেয়েছেন। ৪ ইনিংসে ৮১.৭৫ গড় নিয়ে শিখরের রান ৩২৫ আর ১৩৪.২৫ গড় নিয়ে সমসংখ্যক ইনিংসে রোহিতের রান ২৬৯।
সপ্তাহের শুরুতে আফগানিস্তান ম্য়াচে তাঁরা দুজনেই বিশ্রামে ছিলেন। সেই ম্যাচে ওপেন করেছিলেন লোকেশ রাহুল। সমস্যা হয়েছে তিনিও ৬০ রান করে দিয়েছেন। কাজেই ফাইনালের আগে ভারতের টিম ম্য়ানেজমেন্ট তাঁকে খেলাবে কি খেলাবে না, এই নিয়ে দ্বিধায় রয়েছে। বিশেষ করে ভারতের মিডল অর্ডার এখনও সেভাবে পরীক্ষিত নয়।
অধিকাংশ ম্যাচে ওপেনাররাই এমন মারকাটারি ব্যাট করেছেন যে মিডল অর্ডারের বিশেষ, কিছু করতে হয়নি। তিন নম্বরে নেমে আম্বাতি রায়ডু ৫ ইনিংসে ৭০.৩৩ গড়ে ১৭৩ রান করেছেন। চারে নামা কার্তিকও মোটামুটি ভালই রান পেয়েছেন। কিন্তু যদি ওপেনাররা তাড়াতাড়ি আউট হয়ে যান, এই দুজন ইনিংস টানতে পারবেন এরকম ভরসা দেওয়ার মতো কিছু করে দেখাতে পারেননি।
আর এই ভাবনা থেকেই লোকেশ রাহুলকে ফাইনালে দলে রাখার সম্ভাবনা আরও জোরালো হচ্ছে। তবে তিনি দলে সুযোগ পেলেও পছন্দের এপেনিং স্লট তিনি পাবেন না। তাঁকে নামতে হবে ৩ নম্বরে। সেক্ষেত্রে রায়ডু আসবেন চারে।
ভারতের সামনে অপর প্রশ্ন টা হল মহেন্দ্র সিং ধোনি। এশিয়া কাপে ভারতের অন্যতম লক্ষ্য ছিল ধোনির ব্য়াটিং পজিসন ঠিক করা। বিশ্বকাপের দলের ভাবনায় তিনি আছেন। এশিয়া কাপে কিন্তু এখনও অবধি নিষ্প্রভই আছেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক। তাঁকে একটি ম্যাচে ৬ নম্বর থেকে তুলে ৪ নম্বরেও নামানো হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও ৩ ইনিংসে তাঁর মোট রান মাত্র ৪৪।
যদি দ্রুত ভারতের প্রথম কয়েকটি উইকেট পড়ে যায় সেক্ষেত্রে ধোনিকে কোথায় নামানো হবে সেদিকটা ঠিক করতে হবে টিম ম্যানেজমেন্টকে। ধোনিকে ৪ নম্বরে ব্যাট করতে পাঠিয়ে মাঝের ওভারে বেশি বল খেলিয়ে সেট হওয়ার জন্য সময় দেওয়া হবে না কি ৬ নম্বরেই নামিয়ে দ্রুত রান তুলে ম্য়াচ ফিনিশ করার দায়িত্ব দেওয়া হবে - কোন ভূমিকায় তাঁকে ব্যবহার করলে বেশি লাভবান হবে দল, সেটা ঠিক করাই বড় চ্যালেঞ্জ।
এশিয়া
কাপ
ফাইনাল
ভারত
বনাম
বাংলাদেশ
দুবাই,
ভারতীয়
সময়
বিকেল
৫টা
থেকে
সরাসরি
সম্প্রচার
-
স্টার
স্পোর্টস
লাইভ
স্ট্রিমিং
-
হটস্টার
অন্যদিকে ফাইনালে বাংলাদেশের দলের ভরসা সেই মুশফিকুর রহিম। এখনও পর্যন্ত টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী তিনি। ৪ ইনিংসে ৭৪.২৫ গড়ে তিনি ২৯৭ রান করেছেন। বুধবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ১২ রানে ৩ উইকেট পড়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে তিনি ৯৯ রানের ইনিংস না খেললে লড়াই করার মতো রানেই পৌঁছতো না বাংলাদেশ। ফাইনালে তিনি বাংলাদেশের তরফে ভারতের সামনে সবচেয়ে বড় বাধা।
এই বাংলাদেশ দলে আরও একজন আছেন, যিনি একক দক্ষতায় খেলা ঘুরিয়ে দিতে পারেন। তিনি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। আফগানিস্তান ম্যাচে শেষ ওভারে মাত্র ৪ রান দিয়ে দলকে জিতিয়েছিলেন মুস্তাফিজ আর পাকিস্তান ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়ে পাক দলকে আটকে দিয়েছেন ২০২ রানে। আরব আমিরশাহির মন্থর পিচে তিনি কিন্তু ক্রমশঃ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছেন। কাজেই তাঁর বল কিন্তু ভারতকে সাবধানে খেলতে হবে।