সৌরভ ও ধোনির অধিনায়কত্বে পার্থক্য কোথায়, বললেন বিশ্বকাপজয়ী ফাস্ট বোলার
সৌরভ ও ধোনির অধিনায়কত্বে পার্থক্য কোথায়, জানালেন দেশের বিশ্বকাপজয়ী ফাস্ট বোলার
একদিকে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। যাঁর নেতৃত্বে ২০০৩ বিশ্বকাপ ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছেছিল ভারতীয় ক্রিকেট দল। জিতেছিল ঐতিহাসিক ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি। অন্যদিকে মহেন্দ্র সিং ধোনি। যাঁর অধিনায়কত্বে ২০১১-র বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারতীয় ক্রিকেট দল। এই দুই ভারতীয় অধিনায়কের মধ্যে কাকে সেরা বাছলেন দেশের প্রাক্তন বাঁ-হাতি ফাস্ট বোলার আশিষ নেহরা।
অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়
২০০০ সালে ম্যাচ ফিক্সিং কাণ্ডে যখন জর্জরিত ভারতীয় ক্রিকেট, তখন টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়কত্বের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছিল অনভিজ্ঞ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের হাতে। এরপরেই ভারতীয় ক্রিকেটে আসে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। টিম ইন্ডিয়াকে ১৪৬টি ওয়ান ডে-তে নেতৃত্ব দেন মহারাজ। ৭৬টি ম্যাচ জেতে ভারত। ৬৫টি ম্যাচে হার হজম করতে হয়। অন্যদিকে সৌরভের নেতৃত্বে ৪৯টি টেস্ট খেলে ২১টি ম্যাচ জেতে ভারতীয় ক্রিকেট দল। তার মধ্যে ১১টি জয় আসে বিদেশের মাটিতে। অধিনায়ক হিসেবে দেশকে ২০০২-র চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও ঐতিহাসিক ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি উপহার দিয়েছেন মহারাজ। তরুণ টিম ইন্ডিয়াকে ২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনাল পর্যন্ত নিয়ে গিয়েও দুর্ধর্ষ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হার হজম করতে হয়েছিল। সেই অস্ট্রেলিয়াকেই তাদের মাটিতে টেস্ট সিরিজ ড্র করিয়েছিল সৌরভ ব্রিগেড।
অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের হাতে গড়া যুবরাজ সিং, হরভজন সিং, জাহির খান, আশীষ নেহরা, বীরেন্দ্র শেহওয়াগ সম্বৃদ্ধ এক শক্তিশালী ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। তিনি নিজেও মহারাজের হাতে গড়া বললে ভুল হবে না। সেই সঙ্গে মাস্টার ব্লাস্টার সচিন তেন্ডুলকর, গৌতম গম্ভীরের মতো ক্রিকেটারদের পেয়ে ২০১১-র ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ জিতেছিলেন মাহি। দেশকে ২০০৭-র টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০১৩-র চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও তুলে দিয়েছেন এমএস। যদিও তাঁরই নেতৃত্বে ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তাদেরই মাটিতে টেস্ট সিরিজে হোয়াইট ওয়াশ হতে হয়েছিল ভারতকে। তুলনামূলক বেশিদিন দেশের অধিনায়ক থাকা ধোনি ৬০টির মধ্যে ভারতীয় দলকে ২৭টি টেস্ট ম্যাচে জয় এনে দিয়েছেন। অন্যদিকে এমএস-র নেতৃত্বে ১৯৯টি ওয়ান ডে-র মধ্যে ১১০টিতে জিতেছে ভারত। ৭২টি টি-টোয়েন্টির মধ্যে ৪১টি ম্যাচে দেশকে জয় উপহার দিয়েছেন মাহি।
যুবশক্তি
তরুণ বয়সে ভারতীয় ক্রিকেট দলে সুযোগ পাওয়া দেশের প্রাক্তন ফাস্ট বোলার তথা বিশ্বকাপজয়ী আশিষ নেহরা, অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছ থেকে পূর্ণ সমর্থন পেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন। শুধু তিনি নন, তাঁর মতো অন্যান্য যুব তারকাদের কেরিয়ারের বিকাশ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে হয়েছে বলে দাবি নেহরার। মহারাজের নেতৃত্বেই ভারতীয় ক্রিকেট দল অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষি আফ্রিকার মতো শক্তির বিরুদ্ধে অদম্য লড়াই করার সাহস পেয়েছিল বলে দাবি নেহরার। একই ভাবে মহেন্দ্র সিং ধোনির অধিনায়কত্বেও ক্রিকেট বিশ্ব বেশকিছু যুব তারকার উত্থান ঘটলেও, মাহিকে তুলনামূলক অভিজ্ঞ দলকে পরিচালনা করতে হয়েছে বলে মনে করেন আশু।
ভারতীয় ক্রিকেটের মানচিত্রে বদল
আশষ নেহরার কথায়, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং এমএস ধোনি দীর্ঘ সময় ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ছিলেন। প্রথম জন ভারতীয় ক্রিকেটের মানচিত্রে বদল ঘটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। 'দাদা'র নেতৃত্বেই প্রতিপক্ষের চোখে চোখ রেখে জবাব দিতে শিখেছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা। মহেন্দ্র সিং ধোনি সেই ধারাকেই এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন বলে দাবি নেহরার। ধোনির নেতৃত্বেও ভারতীয় ক্রিকেটে উল্লেখযোগ্য বদল এসেছে বলে মনে করেন আশু।
হিসেবি ধোনি
আশিষ নেহরার কথায়, অত্যন্ত ঠাণ্ডা মাথায়, হিসেব ছকে ভারতীয় ক্রিকেট দল চালাতেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। কোচ গ্যারি কার্স্টেন ও দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে মাহি দুর্দান্ত সংযোগ স্থাপন করতেন বলেও জানিয়েছেন আশু। দলে সামঞ্জস্য থাকার দৌলতেই ধোনির নেতৃত্বে টিম ইন্ডিয়া সফল হয়েছে বলে মনে করেন আশিষ নেহরা।