ভারতীয় ক্রিকেটকে ঘুরে দাঁড়াতে মোক্ষম দাওয়াই দিলেন কুম্বলে, ইংল্যান্ডকে অনুসরণের পরামর্শ ভনের
ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের খরা অব্যাহত রইল অস্ট্রেলিয়ায় টি ২০ বিশ্বকাপে। ২০১১ সালের বিশ্বকাপই শেষবার এসেছে মেন ইন ব্লু-র ঝুলিতে। ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর আর কোনও আইসিসি ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি ভারত। এবারের টি ২০ বিশ্বকাপের ব্যর্থতার পর ঘুরে দাঁড়ানোর উপায় বের করতে হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড়, অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে নিয়ে বৈঠকে বসবে বিসিসিআই। তার আগে প্রাক্তনরাও দিচ্ছেন নানাবিধ পরামর্শ।
কুম্বলের দাওয়াই
ভারতের প্রাক্তন কোচ অনিল কুম্বলে ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট জানিয়েছেন, ভারতের টেস্ট ও সীমিত ওভারের ফরম্যাটগুলির জন্য আলাদা দল রাখা উচিত। কুম্বলের কথায়, অবশ্যই আলাদা দল রাখতে হবে। টি ২০ বিশেষজ্ঞদের দরকার। এবারের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড এবং গত বছর টি ২০ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়াও দেখিয়েছে বেশি সংখ্যক অলরাউন্ডারের উপস্থিতির গুরুত্বের কথা। ইংল্যান্ডের ব্যাটিং অর্ডারের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে কুম্বলে বলেন, লিয়াম লিভিংস্টোন সাতে ব্যাট করেন। সাত নম্বরের কথা ধরলে লিভিংস্টোনের চেয়ে ভালো প্লেয়ার কোনও দলে নেই। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে মার্কাস স্টইনিস ব্যাট করেন ছয়ে। এমন দল তৈরি করাই দরকার।
ভনের পরামর্শ
ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক মাইকেল ভন বিসিসিআইকে পরামর্শ দিয়েছেন ইংল্যান্ডকে অনুসরণ করার জন্য। ইংল্যান্ডই প্রথম দল যাদের দখলে একসঙ্গে রয়েছে ৫০ ওভার ও টি ২০ বিশ্বকাপ। ভনের মতে, ইংল্যান্ডের বর্তমানে সাদা বলের ক্রিকেটাররা অসাধারণ। ইংল্যান্ড যেভাবে খেলছে তেমনভাবেই বিশ্বের বাকি দেশগুলি খেলতে চাইবে। আমি যদি ভারতীয় ক্রিকেট চালাতাম তাহলে গরিমাকে সরিয়ে রেখে ইংল্যান্ডের থেকেই প্রেরণা নিতাম। ভন দ্য টেলিগ্রাফে আরও লিখেছেন, প্রথমবার বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দিতে গিয়েই জস বাটলার বিশ্বকাপ জিতেছেন। ৩২ বছর বয়সে তাঁর সামনে এখন ঐতিহ্যের নতুন ধারা তৈরির সুযোগ। ভারত অধিনায়ক হিসেবে মহেন্দ্র সিং ধোনি যে সাফল্য পেয়েছেন বাটলারও তেমনই কিছু করতে পারেন। বাটলার এখন একটি ফরম্যাটেই মনোনিবেশ করছেন। বাটলারের প্রত্যয় সম্পর্কে নিশ্চিত ভন তাঁর প্রতি অগাধ আস্থাই রাখছেন। বৈচিত্র্যময় বোলিং আক্রমণ, ১ থেকে ১১ অবধি ইংল্যান্ডের ম্যাচ উইনার থাকাকেই সাফল্যের চাবিকাঠি হিসেবে চিহ্নিত করছেন তিনি।
টি ২০-তে অভিজ্ঞতার খামতি
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দু-বার টি ২০ বিশ্বকাপ জিতেছে ড্যারেন স্যামির অধিনায়কত্বে। তিনি মনে করেন, আইপিএল বড় লিগ হলেও ভারতীয় ক্রিকেটারদের টি ২০ অভিজ্ঞতার খামতি রয়েছে। সেটা মিটতে পারে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে টি ২০ লিগ খেললেই। তিনি বলেন, অ্যালেক্স হেলস, ক্রিস জর্ডনের মতো প্লেয়াররা বিগ ব্যাশে খেলেন। অস্ট্রেলিয়ায় খেলার অভিজ্ঞতা তাঁরা কাজে লাগিয়েছেন। চাপের ম্যাচগুলিতে সেরা অলরাউন্ড পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে যোগ্য় দল হিসেবেই তারা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
ইংল্যান্ডের এই দল সর্বকালের সেরা নয়
ইংল্যান্ডের এই দলকে সর্বকালের সেরার তকমা এখনই দিচ্ছেন না অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অলরাউন্ডার ও কোচ টম মুডি। তবে ইংল্যান্ড সাদা বলের ক্রিকেটে যেভাবে খেলছে তার প্রশংসা করেছেন তিনি। মুডির কথায়, যদি গত বছর সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে ইংল্যান্ড টি ২০ বিশ্বকাপ জিততে পারতো তাহলে তাদের সর্বকালের সেরা বলা যেত। কিন্তু তা হয়নি। ফলে আরও কিছুটা উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু স্প্লিট ক্যাপ্টেন্সি, দুই রকমের বলে দুই হেড কোচ রাখার সুফল যেভাবে ইংল্যান্ড পাচ্ছে তা অন্য দলগুলির কাছে শিক্ষণীয় বলে উপলব্ধি মুডির।