নড়বড়ে শ্রীলঙ্কাকে হারাতে পারল না আফগানিস্তান, ম্যাচের সেরা প্রদীপ
নড়বড়ে শ্রীলঙ্কাকে হারাতে পারল না আফগানিস্তান, ম্যাচের সেরা প্রদীপ।
না, আর কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটল না।
অনুকূল পরিস্থিতি পেয়েও শ্রীলঙ্কাকে কবজা করতে পারল না আফগানিস্তান। রশিদ, নবিদের ৩৪ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপের উঠোনে লম্বা শ্বাস নেওয়ার অবকাশ পেল দ্বীপরাষ্ট্রের দল।
শ্রীলঙ্কার হয়ে বাজিমাত করলেন, বিশ্বকাপ শুরুর মুখে বিতর্কের কেন্দ্রে থাকা সেই অভিজ্ঞ লাসিথ মালিঙ্গা-ই। ম্যাচে ৩ উইকেট নিলেন ৩৫ বছরের ডান-হাতি। চমকপ্রদ পারফরম্যান্স করে দিমুথ করুণারত্নে ব্রিগেডকে ভরসা জোগালেন দলের আরো এক রাইট-আর্ম ফাস্ট নুয়ান প্রদীপও। ৪ উইকেট নিয়ে আফগানিস্তানের মেরুদণ্ড ভাঙলেন এই ৩২ বছরের শ্রীলঙ্কান। ম্যাচের সেরাও হলেন তিনি।
বোলাররা লড়লেও ব্যাটসম্যানদের ফর্ম নিয়ে কিন্তু চিন্তা রয়েই গেল লঙ্কান শিবিরে। কার্যত কুঁথে-কেঁকে আফগান বধ সম্ভব হলেও, ইংল্যান্ড, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে এই দলের কী হাল হবে, তা ভেবেই শঙ্কিত হচ্ছেন দ্বীপরাষ্ট্রের ক্রিকেট প্রেমীরা। শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানদের হতশ্রী ফর্মকে ক্ষমা করেনি নিউজিল্যান্ড। বাকি দলগুলিও যে কুশল পেরেরা, কুশন মেন্ডিস, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসদের জন্য স্যালাইন ওয়াটার তৈরি রাখবে, এমনটা ভাবা অর্থহীন।
ওয়েলসের কার্ডিফের মেঘাচ্ছন্ন সোফিয়া গার্ডেনের মাঠে টসে জিতে ছন্দহীন শ্রীলঙ্কাকে ব্যাট করতে পাঠায় আগ্রাসী আফগানিস্তান। আফগান অধিনায়ক গুলবাদিন নাইবের সিদ্ধান্ত যে ভুল, তা কিন্তু অতি বড় ক্রিকেট বিশেষজ্ঞও বলতে পারবেন না। তবু প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে লড়ে শুরুটা ভালোই করে শ্রীলঙ্কা। অধিনায়ক দিমুথ করুণারত্নে ও কুশল পেরেরার ওপেনিং জুটি ১৩ ওভারেই তুলে ফেলেন ৯২ রান। ব্যক্তিগত ৩০ রানের মাথায় মহম্মদ নবির বলে নাজিবুল্লাহ জারদানের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন করুণারত্নে।
এরপর লাহিরু থিরিমানের সঙ্গে জুটি বেঁধে শ্রীলঙ্কার ইনিংস বাঁধার কাজ চালিয়ে যান কুশল পেরেরা। দুই ব্যাটসম্যানের মধ্যে ৫২ রানের পার্টনারশিপও হয়। কিন্তু দলের ১৪৪ রানের মাথায় মহম্মদ নবির বলে উইকেট ছিটকে যায় থিরিমানের (২৫)। এরপরেই ধস নামে শ্রীলঙ্কান ব্যাটিংয়ে। থিরিমানের পিছু পিছু সাজঘরের দিকে হাঁটা লাগান কুশল মেন্ডিস (২) ও অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস (০)। ধনঞ্জয় ডি সিলভা (০) এবং থিসারা পেরেরাও (২) অচিরেই ক্রিজের মায়া ত্যাগ করেন। ৮১ বলে লড়াকু ৭৮ রান করে আউট হন ওপেনার কুশল পেরেরাও।
হঠাই-ই বর্ষাসুর সোফিয়া গার্ডেনের সাজানো বাগানে ভর করে। খেলা বন্ধ থাকে বেশ কয়েক ঘণ্টা। ফলে ডার্ক-ওয়াথ লুইসের নিয়ম অনুযায়ী দুই ইনিংসের দৈর্ঘ্য ৯ ওভার কমিয়ে দেওয়া হয়। টেনেটুনে ৩৭ ওভার ব্যাট করে ২০১ স্কোর খাড়া করতে সক্ষম হয় দ্বীপরাষ্ট্রের দল। জটিল পাটিগনিতের অঙ্ক কষে আফগানিস্তানকে ১৮৭ রানের লক্ষ্যে দেন ম্যাচ রেফারি। আফগানদের হয়ে বল হাতে কামাল দেখান মহম্মদ নবি (৪)। ২টি করে উইকেট নেন মিস্ট্রি স্পিনার রশিদ খান ও দৌলত জারদান।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে পর পর মহম্মদ শাহজাদ (৭), রহমত শাহ (২), হাসমাতুল্লাহ শাহিদি (৪) ও মহম্মদ নবির (১১) উইকেট হারায় আফগানিস্তান। ২৫ বলে ৩০ রান করা ওপেনার হাজরাতুল্লাহ জাজাইকে ফিরিয়ে দেন শ্রীলঙ্কার নুয়ান প্রদীপ। অধিনায়ক গুলাবদিন নাইবের সঙ্গে আফগানিস্তানের ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মরিয়া চেষ্টা চালান নাজিবুল্লাহ জারদান। ২৩ রান করে আউট হন গুলাবদিন। ৪৩ রানে থেমে যায় নাজিবুল্লাহর ইনিংস। টেলেন্ডার রশিদ খান (২), দৌলত জারদান (৬), হামিদ হাসানদের (৬) ফেরাতে লাসিথ মালিঙ্গাদের বিশেষ বেগ পেতে হয়নি। ৩২.৪ ওভারে ১৫২ রানে থেমে যায় আফগানদের ইনিংস।