নামমাত্র বিধায়ক, নেই সাংগঠনিক ক্ষমতা! অনুব্রত গড়ে তৃণমূল বিধায়কের মন্তব্যে নিশানায় কে
দিদির দূত কর্মসূচিতে বেরিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক বিধানচন্দ্র মাঝি। যা নিয়ে কটাক্ষ করেছিল সিপিআইএম। তার উত্তর দিতে গিয়ে দলের বিরুদ্ধেই মন্তব্য করে বসলেন ওই নেতা।
দলের অন্য জনপ্রতিনিধিদের মতোই দিদির দূত কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন নানুরের তৃণমূল বিধায়ক বিধানচন্দ্র মাঝি। ১৪ জানুয়ারির পরে ১৫ জানুয়ারিতে তিনি বিক্ষোভের মুখে পড়েন।
সেই ঘটনায় স্থানীয় সিপিআইএম নেতৃত্ব বিধায়কের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হয়। তারই জবাব দেন বিধানচন্দ্র মাঝি। তবে সেই মন্তব্য দলের অনেকের বিরুদ্ধে চলে যায়।
বিধানচন্দ্র মাঝির অভিযোগ
সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে নানুরের তৃণমূল বিধায়ক বলেন, নানুর বিধানসভা এলাকার খবর যাঁরা রাখেন, তাঁরা খুব ভাল করেই জানেন, তিনি নামমাত্র বিধায়ক। জেলা থেকে তাঁকে কোনও সাংগঠনিক ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। গ্রামে হওয়া রাস্তা নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে অভিযোগ বিরোধীরা তুলেছিলেন, তারই প্রেক্ষিতে এই মন্তব্য করেন শাসক বিধায়ক। তিনি আরও বলেন, কন্ট্রাক্টরির কাজ কে পাবে, কে না পাবে, তাও ঠিক করে দেন অবজার্ভার। সেখানে বিধায়কদের কিছু করার থাকে না। কোন অঞলের কোথায় কী কাজ হবে, সেব্যাপারেও নাক গলানোয় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সিপিআইএম-এর অভিযোগ
১৪ জানুয়ারির পরে ১৫ জানুয়ারি দিদির দূত কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে এলাকায় বিক্ষোভের মুখে পড়েন তৃণমূল বিধায়ক বিধানচন্দ্র মাঝি। তারই প্রেক্ষিতে রাস্তা তৈরিতে দুর্নীতির অভিযোগ তোলে সিপিআইএম। স্থানীয় সিপিআইএম নেতৃত্বের তরফে অভিযোগ করা হয়, রাস্তায় পাথ উঠে যাচ্ছে। কোথাও কোনও কাজ হচ্ছে না। কাজ শেষ হওয়ার আগেই স্থানীয় বিধায়ক কমিশনের টাকা নিয়ে চলে যান। সেই কারণেই এই বিক্ষোভ। সেই সময় বিজেপির তরফেও বিক্ষোভ নিয়ে কটাক্ষ করা হয়।
কার্যত দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ
সিপিআইএম-এর অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে ওড়াতে দিয়ে শাসক বিধায়ক কার্যত দলীয় নেতৃত্বকেই দায়ী করলেন। এমনটাই বলছে জেলার রাজনৈতিক মহল। কেননা তিনি দলের অবজার্ভারদের দিকে নিশানা করেছেন। আদতে তৃণমূলে অবজার্ভার পদ তুলে দেওয়া হয়েছে। তাহলে কি তা এখনও অলিখিতভাবে বজায় রয়েছে অনুব্রতহীন বীরভূমে, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
জেলা তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া
জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চাননি। তিনি বলেছেন, অভিযোগ যে কেউ করতে পারে। তবে ঘটনা সত্যি নয়। নানুরে দলের বিধায়কের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ বলেও দাবি করেছেন তিনি। তবে বিধানচন্দ্র মাঝির বাকি মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, দলের নিয়ন্ত্রণ সব জায়গায় থাকে। তবে তৃণমূল বিধায়কের এই মন্তব্যে দলের কোনও কোনও নেতাকে নিশানা করে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে শাসক বিধায়কের মন্তব্য বিরোধীদের কতটা সুবিধা করে দেয়, এখন সেটাই দেখার।
(ছবি সৌজন্য: বিধানচন্দ্র মাঝির ফেসবুক অ্যাকাউন্ট)