মধ্যরাতে রতনপল্লীর গেস্ট হাউসে তৈরি ব্লু প্রিন্ট, ঠাকুর ঘরে লুকিয়ে থাকা বাহুবলী কেষ্টকে গ্রেফতার কীভাবে ?
মধ্যরাতে রতনপল্লীর গেস্ট হাউসে তৈরি ব্লু প্রিন্ট, ঠাকুর ঘরে লুকিয়ে থাকা বাহুবলী কেষ্টকে গ্রেফতার কীভাবে ?
একেবারে দক্ষিণি সিনেমার প্লট তৈরি হয়েছিল বোলপুরের কেষ্টর বাড়ির তারপাশে। রুদ্ধশ্বাস দেড় ঘণ্টার অভিযানে সিবিআইয়ের হাতে ধরা পড়লেন অনুব্রত মণ্ডল। বীরভূমের দোর্দণ্ড প্রতাপ টিএমসি জেলা সভাপতিকে ধরতে ১০০ কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে েযতে হয়েছিল সিবিআইকে। গতকাল মধ্যরাত থেকে তৈরি পরিকল্পনা চলেছে বীরভূমের রতন পল্লীর গেস্ট হাউসে। কলকাতা এবং আসানসোল থেকে ৩৫ জন সিবিআই অফিসার হাজির হয়েছিলেন বোলপুরে।
গ্রেফতার অনুব্রত মণ্ডল
অবশেষে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ টিএমসি নেতা অনুব্রত মণ্ডল। শুভেন্দু অধিকারীর কথা মিলে গিয়েছে। এক কাপড়েই গ্রেফতার করে তুলে আনা হল কেষ্টকে। প্রস্তুতি গতকাল থেকেই নিতে শুরু করেছিল সিবিআই। গতকাল দশমবার সিবিআই হাজিরা এড়িয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। তারপরেই একাধিক শারীরিক অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে হাজিরা এড়িয়ে যান তিনি। গতকালই দক্ষিণ ভারতে চিকিৎসা করাতে যাওয়ার কথা ছিলে তাঁর। এমনই পরিকল্পনা শুরু করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত তার পরের দিনই এক প্রকার বিনা বাধায় কেষ্টকে গ্রেফতার করলেন সিবিআই অফিসাররা।
কীভাবে গ্রেফতার
একেবারে কেষ্টর ডেরা থেকে গ্রেফতার। সিবিআইয়ের পক্ষে খুব একটা সহজ হবে না। সেটা আগে থেকেই জানত সিবিআই। সেকারণে গত ২ দিন ধরেই পরিকল্পনা করতে শুরু করেছিল তারা। গতকাল অনুব্রতর ডেরায় অভিযান চালাতে বোলপুরেই ঘাঁটি গেরেছিলেন সিবিআই অফিসাররা। গতকাল মধ্যরাতেই সেখােন পৌঁছে গিয়েছিলেন সিবিআইয়ের দুঁদে অফিসাররা। আসানসোল থেকে হাজির হয়েছিলেন সিবিআই অফিসাররা। রতন পল্লীর গেস্ট হাউসে রাত ভর চলেছে পরিকল্পনা। তৈরি হয়েছিল নীল নকশা। েসই পরিকল্পনা মতই ধাপে ধাপে কাজ করে এগিয়েছে সিবিআই অফিসাররা।
বিশাল কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রয়োগ
বীরভূমের বাহুবলী নেতাকে ধরতে বিশাল সিআরপিএফ বাহিনী নিয়ে আসা হয়েছিল বোলপুরে। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে কেষ্টর বাড়িতে ঘিরে ফেলে। রীতি মত জঙ্গি দমন অভিযানের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল সেখানে। সকাল থেকে কেষ্টর বাড়ির চারপাশ ছিল থমথমে। িনরাপত্তারক্ষীদের দেখা পাওয়া যায়নি। দরজা জানলা সব বন্ধ ছিল। একটি ছোট দরজা খোলা ছিল মাত্র। সেই দরজা দিয়েই প্রথমে একজন সিবিআই অফিসার ভেতরে ঢোকেন। সেখােন বসেছিলেন সিবিআই অফিসার। বেশ কিছুক্ষণ অনুব্রত মণ্ডলের জন্য অপেক্ষা করা হয়। তাঁর জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করা হয়। ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো যোগা যোগ করা যায়নি। তারপরেই তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।
ঠাকুরঘর থেকে গ্রেফতার
ঠাকুর ঘরে লুকিয়ে বসেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। সেখানে থেকেই এক প্রকার টেনে হিচড়ে বের করা হয় কেষ্টকে। ততক্ষণে গোটা বাড়ি ঘিরে ফেলেছেন সিআরপিএফ জওয়ানরা। অনুব্রতকে হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এরিয়া ডমিনেটিংও শুরু করেছিলেন তাঁরা। বোলপুরের অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ির চারপাশের এলাকা যেন তখন থমথম করছে। সব েথকে আশ্চর্যের বিষয় এদিন কিন্তু কোনও অনুগামীকে কেষ্টর বাড়ির চারপাশে দেখা যায়নি। এক প্রকার ফাঁকা মাঠেই গোল দিয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে প্রস্তুতিতে কোনো কসুর করেননি তাঁরা। কেষ্টকে হেফাজতে নিয়ে পাক্কা দেড় ঘণ্টা সময় লেগেছে সিবিআই অফিসারদের।