৭৩ বছরেও বিদ্যুত এল না ঝাড়গ্রামের শিমুলপাল এলাকায়
৭৩ বছর আগে এদেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিল ইংরেজরা। কিন্তু তার পরেও স্বাধীনতার স্বাদ পায়নি ঝাড়গ্রাম জেলার বিনপুর দুই নং ব্লকের বেলপাহাড়ি থানার শিমুলপাল এলাকার। আজও পর্যন্ত পৌঁছয়নি বিদ্যুতের আলো, নেই পানীয় জলের কোন ব্যবস্থা। দুই কিলোমিটার দূর থেকে খাওয়ার জন্য পানীয় জল আনতে হয় গ্রামবাসীদের। স্বাধীনতার কোন ছাপ দেখা যায়নি বলেই দাবিই গ্রামবাসীদের।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, একসময় কংগ্রেসের সরকার ছিল, রাজ্যে ৩৪ বছর বামেদের সরকার ছিল, তারপর ২০১১ সাল থেকে রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার রয়েছে। তাদের কথায় কান দেয়নি কোনও সরকারই। তাই তারা স্বাধীন ভারতবর্ষের নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও স্বাধীনতার কোন স্বাদ পায়নি। চরম অবহেলায় দিন কাটছে ওই এলাকার বাসিন্দাদের।
এক সময় অনুন্নয়নের অভিযোগ তুলে মাওবাদীরা ওই এলাকায় আন্দোলন করেছিল। বাংলা ঝাড়খন্ড সীমান্তবর্তী এলাকাগুলি ছিল মাওবাদীদের শক্ত ঘাঁটি। তারপরে ঘটে যায় আমলা শোল গ্রামে অনাহারে মৃত্যুর ঘটনা। তাতেও প্রশাসনের টনক নড়েনি। গ্রামবাসীরা স্থানীয়গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলাশাসককে জানিয়েছেন। গ্রামে বিদ্যুৎ নেই, নেই পানীয় জলের কোন ব্যবস্থা। ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে দুই কিলোমিটার দূর থেকে গ্রামের মহিলারা জল এনে ব্যবহার করেন। কবে তাদের সুদিন ফিরবে তারা এখনো জানে না। তাই তারা সুদিন ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন।
তাদের বক্তব্য, প্রশাসনের কেউ তাদের কথা শুনেনি যখনই জানানো হয় বিদ্যুতের আলো আসবেই জলের ব্যবস্থা হবে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় । কিন্তু কোনদিনই সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবে রূপায়িত হয়নি। স্বাধীনতার ৭৩ বছরের পর ও তারা মনে করেন এখনও তারা পরাধীন রয়েছেন। ইংরেজ আমলের পর ওই এলাকায় কোনো উন্নয়ন কাজ হয়নি বলে গ্রামবাসীরা জানান। প্রতিবছর উন্নয়নের সাফাই গায় ক্ষমতাসীন সরকার। তাই চোখের জল ফেলেও কোনো লাভ হয়নি। গ্রামবাসীদের দাবি আমাদের এলাকায় পানীয় জলের ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক, সেই সঙ্গে দেওয়া হোক বিদ্যুতের সংযোগ । বিদ্যুৎ এর আলো থাকলে ছেলেমেয়েরা যেমন পড়াশোনা করতে পারবে, তেমনি এলাকা অন্ধকার মুক্ত হবে।