অনুব্রত-গড়ে তৃণমূলে ভাঙন ধরালেন শুভেন্দু, ‘দলত্যাগী’ বিপ্লবের বিজেপি-যোগে খেলা শুরু
অনুব্রত-গড়ে তৃণমূলে ভাঙন ধরালেন শুভেন্দু, ‘দলত্যাগী’ বিপ্লবের বিজেপি-যোগে খেলা শুরু
অনুব্রত মণ্ডল-ঘনিষ্ঠ বীরভূমের তৃণমূল নেতা বিপ্লব ওঝা শুধু দলই ছাড়লেন না, শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে ঢুকে পড়লেন বিজেপিতে। পঞ্চায়েত ভোটের আগেই অনুব্রত-গড়ে খেলা শুরু করে দিল বিজেপি। বিপ্লবের নাটকীয় কায়দায় দল ছাড়ার পরই জল্পনা মাথাচাড়া দিয়েছিল। অবশেষে সেই জল্পনাই সত্যি হল।
বিজেপির পতাকা তুলে নিলেন তৃণমূলের বিপ্লব
মঙ্গলবার সকালে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিমান ও ক্ষোভ উগরে দিয়ে দল ছেড়েছিলেন জেলা সহ সভপাতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য বিপ্লব ওঝা। এদিনই আবার শুভেন্দু অধিকারী সভা ছিল বীরভূম জেলার নলহাটিতে। জল্পনা সত্যি করে সেই সভায় উপস্থিত হয়ে বিজেপির পতাকা তুলে নিলেন তৃণমূলের বিপ্লব।
সকালে তৃণমূলত্যাগে, বিকেলে বিজেপিতে যোগদান
তৃণমূলের এই দলত্যাগী নেতা বীরভূমের ডাকসাইটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ বলেই প্রচার। অনুব্রত মণ্ডলের নাম গরু পাচার মামলায় জড়ানোর পর থেকেই বিগত এক বছর ধরে বিপ্লব ওঝা দলে কোণঠাসা বলে অভিযোগ করেন। তাঁকে কোনও কর্মসূচিতে ডাকা হয় না বলে অভিযোগ করে দল ছেড়ে দেন সকালে। বিকেলেই তিনি শুভেন্দু অধিকারীর মঞ্চে গিয়ে যোগ দেন বিজেপিতে।
অনুব্রক-ঘনিষ্ঠ নেতা বিজেপির ঘরে
বিপ্লব ওঝা তৃণমূল ত্যাগ করে বলেছিলেন, দল ছেড়েছি, এখনও যোগদান নিয়ে ভাবিনি। তবে তা যে শুধু কথার কথা ছিল, বেলা গড়াতে স্পষ্ট হয়ে যায়। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে অনুব্রতহীন বীরভূমের জেলা রাজনীতিতে তাঁরই ঘনিষ্ঠ নেতাকে বিজেপি নিজেদের ঘরে তুলে নিল।
বিপ্লবকে স্বাগত জানান স্বয়ং শুভেন্দু অধিকারী
মঙ্গলবার বিকেলে বীরভূমের নলহাটিতে শুভেন্দুর সভায় গিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেন বিপ্লব। শুভেন্দু অধিকারীর একটি আসন পরে একেবারে প্রথমের সারিতে তিনি বসেছিলেন। শুভেন্দু অধিকারীর হাত থেকে তিনি পতাকা তুলে নেন। তাঁকে পুষ্পস্তবক দিয়ে স্বাগত জানান স্বয়ং শুভেন্দু অধিকারী। বিপ্লব ওঝা ছাড়াও এদিন বগটুই-কাণ্ডে অগ্নিসংযোগে মৃত মীনা বিবির স্বামী ফটিক শেখও বিজেপিতে যোগ দিলেন।
পরিকল্পনা করেই তৃণমূল ছেড়েছিলেন, প্রমাণিত
হঠাৎ তৃণমূল ছাড়ার পর বিপ্লব ওঝা পঞ্চায়েত ভোটের মুখে অন্য কোনও দলে পাড়ি দিতে চলেছেন কি না জিজ্ঞাসা করা হলেন সেই প্রশ্নের উত্তরে তাৎপর্যপূর্ণ জবাব দিয়েছিলেন। বলেছিলেন এখনই তাঁর কোনও পরিকল্পনা নেই। কিন্তু বিকেলে শুভেন্দু অধিকারীর সভায় তাঁর উপস্থিতি প্রমাণ করে দিল তিনি পরিকল্পনা করেই তৃণমূল ছেড়েছিলেন।
কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল হয়ে বিজেপিতে
অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ নেতাকে দলে নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর বীরভূমের মাটি থেকে খেলা শুরু করে দিলেন। ফের নির্বাচনের আগে যোগদান মেলা কার্যত শুরু হয়ে গেল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। পরিবর্তনের আগেই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। বীরভূম জেলা কংগ্রেসের রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লক সভাপতি তৃণমূল ঘুরে এবার বিজেপি নেতা বনে গেলেন।
নলহাটির পুরসভার চেয়ারম্যান থেকে জেলা পরিষদ সদস্য
২০০৭ সালে নলহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান হন বিপ্লব। ২০০৯ সালে বীরভূম লোকসভায় তৃণমূলের টিকিটে সাংসদ হন শতাব্দী রায়। তাঁর জেতার পরেই ওই সালেই সমস্ত কাউন্সিলরকে নিয়ে তৃণমূল যোগদান করেন বিপ্লব ওঝা। বিপ্লব ওঝা দলবদলের পরই রাজ্যে প্রথম পুরসভা হিসেবে নলহাটি তৃণমূলের দখলে আসে। পরবর্তী সময়ে তাঁকেই নলহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান করা হয়। এরপর নলহাটি বিধানসভার উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী করা হয়েছিল বিকাশ ওঝাকে। কিন্তু বামফ্রন্টের কাছে পরাজিত হন তিনি। পরবর্তীকালে তিনি তৃণমূলের টিকিটে জেলা পরিষদের সদস্য হন। কিন্তু তাঁকে কোনও কর্মাধ্যক্ষ পদে রাখা হয়নি।