অনুব্রত ঘনিষ্ঠ বীরভূমের তৃণমূল নেতার দলত্যাগ, পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে বাড়ল জল্পনা
অনুব্রত ঘনিষ্ঠ বীরভূমের তৃণমূল নেতার দলত্যাগ, পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে বাড়ল জল্পনা
অনুব্রত ঘনিষ্ঠ বীরভূমের তৃণমূল নেতা বিপ্লব ওঝা দল ছাড়লেন পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে। তাঁর এই তৃণমূল ত্যাগে জল্পনা বাড়ল অনুব্রতহীন বীরভূমের জেলা রাজনীতিতে। বিপ্লব ওঝার অভিযোগ, তিনি বিগত এক বছর ধরে দলে ব্রাত্য হয়ে রয়েছেন। দল তাঁকে কোনও কর্মসূচিতে ডাকেনি। তাই দলত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলাম।
এক বছর ধরে দলে ব্রাত্য অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ নেতা
পঞ্চায়েত ভোটের মুখে দলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করে পদত্যাগ করলেন বিপ্লব ওঝা। একরাশ অভিমান ও ক্ষোভ ঝরে পড়ল দলের জেলা সহ সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্যের কণ্ঠে। গত এক বছর ধরে দলের কোনও মিটিং-মিছিলে ডাকা হয় না। আমাকে বাদ রেখেই তাঁরা সমস্ত কর্মসূচি পালন করছে।
খেদ ঝরে পড়ল অভিমানী বিপ্লব ওঝার গলায়
অভিমানী বিপ্লব ওঝা আরও বলেন, তৃণমূলের পদে থকালেও তাঁকে বাদ রেখে সমস্ত কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে বলে আমার মনে হয়েছে আমাকে আর তৃণমূলের দরকার নেই। তৃণমূল যেহেতু আমাকে চাইছে না, তাহলে শুধু শুধু সেই দলের পতাকা হাতে নিয়ে তৃণমূল তৃণমূল বলে চিৎকারের কোনও মানে হয় না। সেই কারণেই স্বেচ্ছায় দল থেকে সরে আসছি।
ভবিষ্যতের ব্যাপার ভবিষ্যৎই বলবে
এই অবস্থায় জল্পনা তৈরি হয়েছে, তবে কি পঞ্চায়েত ভোটের মুখে তিনি তৃণমূল ছেড়ে অন্য কোনও দলে পাড়ি দেবেন? এই প্রশ্নের উত্তরে বিপ্লব ওঝা বলেন, এমন কোনও পরিকল্পনা নেই। ভবিষ্যতের ব্যাপার ভবিষ্যৎই বলবে। এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি। সিদ্ধান্ত নিলে তা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়ে দেব।
অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ নেতার দলে যোগ্য মর্যাদা নেই!
অনুব্রত মণ্ডল গরু পাচার মামলায় জেলবন্দি। তার আগে থেকেই অনুব্রত ঘনিষ্ঠ নেতা দলে যোগ্য মর্যাদা পাচ্ছেন না। দলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করে তৃণমূল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। দলত্যাগী তৃণমূল নেতার বিপ্লব ওঝার এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অনুব্রতহীন বীরভূমে যে কমিটির হাতে ন্যস্ত দল পরিচালনার ভার সেই কমিটির প্রধান বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, এখন পর্যন্ত আমার কাছে কোনও খবর নেই। বিপ্লব ওঝার কাছ থেকে কোনও চিঠিও পাইনি, এই দলত্যাগের ব্যাপারে।
২০০৯-এ কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন
দল ছাড়ার পাশাপাশি তৃণমূলের টিকিটে জেতা বীরভূমের জেলা পরিষদের সদস্য পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করলেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন বিপ্লববাবু। একসময় বীরভূম জেলা কংগ্রেসের রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লক সভাপতি ছিলেন তিনি। ২০০৭ সালে নলহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান হন। ২০০৯ বীরভূম লোকসভায় তৃণমূলের টিকিটে সাংসদ শতাব্দী রায় জেতার পরেই ওই সালে সমস্ত কাউন্সিলর নিয়ে তৃণমূল যোগদান করেন বিপ্লব ওঝা। নলহাটি পুরসভা তৃণমূলের দখলে আসে সর্বপ্রথম। পরবর্তী সময়ে তাঁকেই নলহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান করা হয়।
আক্ষেপ নিয়েই দলত্যাগ করলেন বিপ্লববাবু
এরপর নলহাটি বিধানসভার উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী করা হয়েছিল বিকাশ ওঝাকে। কিন্তু বামফ্রন্টের কাছে পরাজিত হন তিনি। পরবর্তীকালে তিনি তৃণমূলের টিকিটে জেলা পরিষদের সদস্য হন। কিন্তু তাঁকে কোনও কর্মাধ্যক্ষ পদে রাখা হয়নি। বছরখানেক ধরে দলে তাঁকে ব্রাত্য করে রাখা হয়। সেই আক্ষেপেই তিনি দলত্যাগ করলেন বলে জানিয়েছেন বিপ্লববাবু।
রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নিচ্ছেন না, তাহলে...
তিনি মুখে কোন দলে যোগদান করছেন সে কথা না জানালেও, জল্পনা চড়েছে তাঁর বিজেপিতে যোগদান নিয়ে। এদিনই নলহাটিতে আসছেন বিজেপির বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ওই মঞ্চেই বিপ্লববাবুর বিজেপিতে যোগদান করার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি রাজনীতি থেকে যে সন্ন্যাস নিচ্ছেন না, সেকথা পরিষ্কার। পঞ্চায়েতের মুখে তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতেই যেতে চলেছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।