খোঁজ মিলছে না 'নজরবন্দি' অনুব্রত মন্ডলের! হন্যে হয়ে গোটা বীরভূম জুড়ে খোঁজ কমিশনের
খোঁজ মিলছে না নজরবন্দি অবস্থায় থাকা অনুব্রত মন্ডলের। সকাল বেলায় কমিশনের নজরবন্দি অবস্থাতেই বাড়ি থেকে বের হন তিনি। এরপর কিছুটা যাওয়ার পর আর তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে খবর। তাঁর খোঁজে হন্যে হয়ে খুঁজছেন এখন কমিশনের আধিকা
খোঁজ মিলছে না নজরবন্দি অবস্থায় থাকা অনুব্রত মন্ডলের। সকাল বেলায় কমিশনের নজরবন্দি অবস্থাতেই বাড়ি থেকে বের হন তিনি। এরপর কিছুটা যাওয়ার পর আর তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে খবর। তাঁর খোঁজে হন্যে হয়ে খুঁজছেন এখন কমিশনের আধিকারিকরা।
বিষয়টির উপর নজর রাখছে নির্বাচন কমিশনও। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বীরভূমের বিভিন্ন জায়গাতে।
কমিশনের নজরবন্দি অনুব্রত মন্ডল
বৃহস্পতিবার বীরভূমের ১১ আসনে ভোট। তার আগেই শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য কড়া পদক্ষেপ করে নির্বাচন কমিশন। ভোটের আগে থেকেই বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে নজরবন্দি করার সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবাত বিকেল ৫টা থেকে শুক্রবার সকাল ৭টা পর্যন্ত কমিশনের নজরবন্দি থাকবেন অনুব্রত মণ্ডল। এই সময়কালে তাঁর গতিবিধি নজরে রাখবে কমিশন। করা হবে ভিডিওগ্রাফি। দোর্দদণ্ডপ্রতাপ এই তৃণমূল নেতার সঙ্গেই থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও একজন ম্যাজিস্ট্রেট। সেই মতো সন্ধ্যাতেই পৌঁছে যান কমিশনের আধিকারিকরা। যান আটজন আধা সামারিক বাহিনী। সন্ধ্যা থেকে নজরবন্দি করা হয় তাঁকে।
সকালে বাড়ি থেকে বের হন কেষ্টা
ভোটের আগের দিন বাড়ি থেকে বেরিয়ে কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। বিভিন্ন জায়গাতে যান। কর্মীদের মনোবল বাড়ানোর চেষ্টা করে। সেই মতো সকালে বের হন অনুব্রত মন্ডল। সেই মতো সকাল থেকেই ক্যামেরাবন্দি করা হয় অনুব্রত মন্ডলের প্রতিটি পদক্ষেপ। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে সবকিছু গণ্ডগোল হয়ে যায়।
খোঁজ নেই অনুব্রতের
কিছুটা যাওয়ার পরেই অনুব্রত মন্ডলের সঙ্গে কমিশনের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বীরভূমের বেতাজ বাদশাকে হন্যে হয়ে খুঁজতে শুরু করেন নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা। প্রায় ১ ঘন্টারও বেশি সময় হয়ে গিয়েছে কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না তাঁর। কমিশনের নিযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেট জানাচ্ছেন, পথ বিভ্রাট ঘটেছে। হঠাত করেই রাস্তা পরিবর্তন করে যায় অনুব্রত মন্ডলের কনভয় । সেই সময় থেকেই আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না অনুব্রত মন্ডলের। কোথায় তিনি? কোনও উত্তর দিতে পারছেন না কেউ।
কমিশনকে জানানো হয়েছে
ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনকে পুরো বিষয়টি জানানো হয়েছে। প্রায় ১ ঘন্টারও বেশি সময় হয়ে গিয়েছে পাত্তা নেই অনুব্রত মন্ডলের। কমিশনের তরফে ইতিমধ্যে পুলিশ প্রশাসনের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছে সূত্রের খবর। তবে সূত্রের খবর, কার্যত সবার চোখে ধুলো দিয়ে সাইথিয়ার উদ্দেশ্যে চলে গিয়েছেন কেষ্টা মন্ডল। কমিশনের আধিকারিকরা এখন সেখানে যাচ্ছেন।
রুটিন ডিউটি, কটাক্ষ অনুব্রত
২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনের পরে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের সময়েও অনুব্রত মণ্ডলকে নজরবন্দি করেছিল নির্বাচন কমিশন। ফলে এবারের সিদ্ধান্ত অনুব্রত মণ্ডলের কাছে নতুন কিছু নয়। তাই নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত জানার পরে অনুব্রত মণ্ডল জানিয়েছেন, এটা কমিশনের রুটিন ডিউটি। এবারও অনুব্রত মণ্ডলকে নজরবন্দি করা হতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি উপদেশ দিয়েছিলেন, যদি নির্বাচন কমিশন নজরবন্দি করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে যেন অনুব্রত মণ্ডল সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যান। এদিন অনুব্রত মণ্ডল বলেছেন, আদালতে যাবেন, তবে তার খবর পাওয়া যাবে বুধবার।
ফাইন খেলা হবে, বলেছিলেন অনুব্রত
নির্বাচন কমিশন তাঁকে নজরবন্দি করার সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার বিরুদ্ধে বীরভূমের মানুষ ব্যালটে জবাব দেবে বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ছিলেন তিনি। তিনি আরও জানিয়েছিলেন যে, মানুষ বিচার করবে, চিন্তাভাবনা করবে। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, নজরবন্দি করার তাঁর লাভ হবে। লোকসান নেই। তিনি যেখানে যাবেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীও সেখানে যাবেন। ফাইন খেলা হবে। ভয়ঙ্কর খেলা হবে। এবারের লোকসভা নির্বাচন শুরু হওয়ার আগেই অবশ্য অনুব্রত মণ্ডল বলেছিলেন ভয়ঙ্কর খেলা হবে। কমিশনের চোখে ধুলো দিয়ে এখন কি খেলা খেলছেন অনুব্রত সেটাই বড় প্রশ্ন বিরোধীদের।