বীরভূমের ভোটের আগে বড় পদক্ষেপ কমিশনের, পুলিশ প্রশাসনে ফের ব্যাপক রদবদল
শেষ দফায় নির্বাচন বীরভূমে। আর তার আগে থেকেই বীরভূমের বিভিন্ন জায়গা থেকে অশান্তির খবর সামনে আসছে। গত কয়েকদিন ধরেই বোমাবাজি থেকে একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। একগুচ্ছ অভিযোগ স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
শেষ দফায় নির্বাচন বীরভূমে। আর তার আগে থেকেই বীরভূমের বিভিন্ন জায়গা থেকে অশান্তির খবর সামনে আসছে। গত কয়েকদিন ধরেই বোমাবাজি থেকে একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। একগুচ্ছ অভিযোগ স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
ইতিমধ্যে বীরভূমের পুলিশ সুপারকে বদল করেছে নির্বাচন কমিশন। এবার অনুব্রত গড়ে শান্তিপূর্ণ ভোট করাতে আরও কড়া ব্যবস্থা নিল নির্বাচন কমিশন। ভোটের মুখে বীরভূমের পুলিশ প্রশাসনের ব্যাপক রদবদল করল কমিশন।
দুই থানার ওসিকে বদল করল কমিশন
অনুব্রত গড়ে শান্তিপূর্ণ ভোট করানোটা কার্যত চ্যালেঞ্জ নির্বাচন কমিশনের কাছে। আর সেই লক্ষ্যেই ভোটের মুখেই সরিয়ে দেওয়া হল দুই থানার ওসিকে। সরানো হল দুবরাজপুর এবং নলহাটির ওসিকেও। দুই পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানায় বিজেপি। দুই থানার ওসির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ। তৃণমূলের হয়ে কাজ তাঁরা করছেন বলেও অভিযোগ বিরোধীদের। এই অভিযোগ পাওয়া মাত্র খতিয়ে দেখে কমিশন। এরপরেই দুই থানার ওসিকে বদল করে দিল কমিশন। দুবরাজপুর থানার নতুন ওসি হলেন প্রসেনজিত দত্ত। এই থানার ওসি ছিলেন দেব্ব্রত সিনহা। অপসারিত নলহাটি থানার ওসি শেখ মোহম্মদও। শুধু দুই থানার ওসিই নন, অপসারিত জয়দেব আউটপোস্টের ইনচার্জ রঞ্জিত বাউরিও। তাঁর বিরুদ্ধেও শাসকদলের হয়ে কাজ করার অভিযোগ।
কাজ করতে পারবেন না
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুসারে যে সমস্ত পুলিশ আধিকারিকদের সরিয়েদ দেওয়া হচ্ছে তাঁদের কোনও ভাবেই ভোটের কাজে ব্যবহার করা যাবে না। সেই মতো দুবরাজপুর, নলহাটির থানার ওসিদের ভোটের সমস্ত কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হল।
কমিশনের বিরুদ্ধে পালটা অভিযোগ তৃণমূলের
দুই থানার পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ। অভিযোগ জানায় বিজেপি। কমিশনের এই সিদ্ধান্ত ঘিরে ইতিমধ্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে বীরভূমের রাজনীতিতে। তৃণমূলের পালটা অভিযোগ বিজেপির কথা মতো চলছে নির্বাচন কমিশন। তদন্ত না করাই যা ইচ্ছা অভিযোগ তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের।
বীরভূমে আনা হল 'সিংহম' নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠীকে
অনুব্রত মন্ডলের জেলাতে ভোটের আগে বদল করা হল পুলিশ সুপারকে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে পুলিশ সুপারের দায়িত্বে আনা হল নন্দীগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠীকে। উল্লেখ্য, বাংলায় ভোট পর্ব শুরু হওয়ার আগে নির্বাচনী বিধি মেনে পুলিশ আধিকারিকদের রুটিন বদল করা হয়েছিল। সেই সময়ে বীরভূমের এসপি শ্যাম সিংকে বদলি করে আনা হয়েছিল মীরাজ খালিদকে। ভোটের মাঝেই আবার এই পদে বদল করল নির্বাচন কমিশন। মীরাজ খালিদকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হল IPS নগেন্দ্র ত্রিপাঠীকে। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মত, এই সিদ্ধান্ত থেকেই স্পষ্ট, উত্তেজনাপ্রবণ বীরভূম জেলাকে এবারের ভোটে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, গত কয়েকদিন ধরে একাধিক অশান্তির খবর সামনে আসছিল। বীরভূমের বিভিন্ন জেলাতে বোমাবাজির খবর সামনে আসছিল। অভিযোগ পাওয়া মাত্র বড়সড় পদক্ষেপ কমিশনের।
নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠীর উপর ভরসা কমিশনের
সকাল থেকে নন্দীগ্রামে সামনে আসছিল অশান্তির খবর। আর সেই খবর তাঁর কানে আসা মাত্র ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিলেন নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছেন। এমনকি শেষবেলায় একটু স্কুলের মধ্যে ক্রজত আটক অবস্থায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাইরে চরম অশান্তি। তৃণমূল সুপ্রিমোর চোখে চোখ রেখে নিজের দায়িত্বের পালনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়েছিলেন। ভোটে অশান্তি রুখতে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানিয়েছিলেন, খাকি উর্দিতে তিনি কোনও দাগ লাগতে দেবেন না। তাঁর জবাবের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়। আর সেই বীরভূমের ভোটের আগে দাবাং নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠীর উপরেই ভরসা রাখতে চাইছে কমিশন।