শোভন-বৈশাখীর রোড শো ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা, ঝাঁটা, জুতো হাতে এগিয়ে এলেন তৃণমূল কর্মীরা
শোভন-বৈশাখীর রোড শোয়ে ব্যাপক উত্তেজনা। আজ শনিবার মহেশতলাতে রোড শো ছিল বিজেপি নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মহেশতলার রাস্তা দিয়ে রোড শো এগোতেই একের পর এক জায়গায় কালো পতাকা দেখানো হয় শোভন এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, কোথাও ঝাঁটা আবার কোথাও জুতো হাতে তৃণমূল কর্মীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। আর র্যালি এগোতেই রাস্তার দুপাশ থেকে সেই সমস্ত ঝাঁটা, জুতো দেখানো হয় বিজেপি নেতৃত্বদের। আর তা দেখানো মাত্র অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। পালটা বিজেপি কর্মীদের স্লোগান দিতে থাকে। কার্যত রণক্ষেত্র এলাকা। পুলিশের বিরুদ্ধে নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ।
ঠিক কি ঘটেছিল?
বিধানসভা ভোটের আগে কোমর বেঁধে নেমেছে বঙ্গ বিজেপি নেত্রী। কার্যত গোটা বাংলা জুড়ে সংগঠনকে চাঙ্গা করার চেষ্টা বঙ্গ বিজেপির। একদিকে নাড্ডার সভা অন্যদিকে, কলকাতায় শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোড শো ছিল। শনিবার মহেশতলায় রোড শো ছিল তাঁদের। রোড শো কিছুটা এগোতেই শুরু হয় সমস্যা। এক নয়, একাধিক জায়গায় কালো পতাকা দেখানো হয় শোভন এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। শুধু তাই নয়, অশ্লীল কথাবার্তাও বলা হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূল মহিলা সেলের তরফে অন্যদিক থেকে ঝাঁটা, জুতো দেখানো হয় বলেও অভিযোগ। আর এই ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে একটা সময় বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল এবং বিজেপি কর্মীরা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ
পূর্ব পরিকল্পিত রোড শো ছিল এদিন। সেই মতো আগে থেকেই পুলিশের অনুমতি নেওয়া ছিল। কিন্তু ঘটনার সময় পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ। এমনকি, রোড শোয়ে পুলিশের তরফে বিশেষ কোনও নিরাপত্তার ব্যবস্থাই করা হয়নি বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, পুলিশের বিরুদ্ধে বিজেপির বাইক মিছিল আটকে দেওয়ার অভিযোগ। অভিযোগ, গোপালপুরের কাছে বাইক মিছিলে বাধা দেয় পুলিশ। পুলিশের দাবি, শোভন-বৈশাখীর রোড শোয়ে তাঁদের গাড়ি একেবারে প্রথম সারিতে রাখতে হবে। যদিও তাতে রাজি ছিলেন না বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে রোড শো'র একেবারে শুরুতে শোভন-বৈশাখীকে রাখা সম্ভব নয় বলেই পালটা জানায় গেরুয়া শিবির। তার ফলে পুলিশ এবং বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বচসা বাঁধে।
লাল বাতি জ্বলে গিয়েছে তৃণমূলের
এক নয়, একাধিক জায়গাতে শোভন এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে কালো পতাকা দেখানো হয়। গোটা রোড শোয়ে অন্তত ৭ জায়গায় এভাবে কালো পতাকা দেখানো হয়। এরপর তো বিভিন্ন জায়গায় জুতো, কোথাও আবার ঝাঁটা দেখানো হয় বলে অভিযোগ। বিজেপির অভিযোগ, মানুষকে ভুল বুঝিয়ে সাধারণ মহিলা, বাচ্ছাদের হাতে ঝাঁটা, জুতো তুলে দিয়েছে তৃণমূল। এটা কোন সংস্কৃতি? শুধু বিজেপি নেতৃত্বই নয়। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূলকে তীব্র কটাক্ষ করে তিনি বলেন, "রোড শো'তে বিপুল জনসমাগম দেখে আতঙ্কিত তৃণমূল। তাই কোথাও দেখানো হচ্ছে কালো পতাকা। আবার কোথাও বাইক মিছিল আটকে দেওয়া হচ্ছে।" তবে যারা এদিন কালো পতাকা দেখিয়েছেন তাঁদের জন্যেই তৃণমূলে লাল বাতি জ্বলে উঠবে বলে তোপ শোভনের। পাশাপাশি শাসকদলকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁর দাবি, "রংমিলান্তির খেলা শুরু করেছে তৃণমূল। আমার কালো শাড়ির সঙ্গে রং মিলিয়ে কালো পতাকা দেখানো হয়েছে। তাতে আমি যথেষ্ট খুশি হয়েছি।"
কলকাতায় শুভেন্দুর র্যালিতে ঢিল ছোঁড়ার অভিযোগ
এর আগেও কলকাতায় শুভেন্দু র্যালিতে ইট, ঢিল ছোঁড়ার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। দক্ষিণ কলকাতায় শুভেন্দুর রোড শোয়ে হামলার অভিযোগ উঠেছিল। যা ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল কলকাতা। পরে সভা থেকে শুভেন্দুর মন্তব্য ছিল, মোদীর মতো ঘরে ঢুকে মেরে আসার জন্যে ধন্যবাদ। গত কয়েকদিন আগে বারুইপুরেও রাজীব এবং শুভেন্দুকে কালো পতাকা দেখানো হয়।