ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ শক্তি হারালেও উত্তাল সমুদ্র, প্রবল জলোচ্ছ্বাসে মুড়িগঙ্গায় ডুবল নৌকা
ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ শক্তি হারালেও উত্তাল সমুদ্র, প্রবল জলোচ্ছ্বাসে মুড়িগঙ্গায় ডুবল নৌকা
গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ। এ খবর শনিবারই আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছিল। স্বভাবতই স্বস্তি ফিরেছিল বাংলায়। কিন্তু রবিবার অমাবস্যার কোটাল আর ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল হয়। জলস্তরও বেড়ে যায় প্রবল। সমুদ্রের সঙ্গে নদীতেও জলস্তর বাড়তে থাকে। এই পরিস্থিতিতে বৃষ্টির তোড় আর ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে কাকদ্বীপের মুড়িগঙ্গায় ডুবল নৌকা।
কচুবেড়িয়া ঘাটের কাছে বেঁধে রাখা পণ্যবাহী নৌকা ডুবে যায় নদীতে। এদিন দুর্যোগের আশঙ্কা করেই নৌকাটি কচুবেড়িয়া ফেরিঘাটের কাছে নোঙর করা ছিল। সেই নৌকা ডুবে যাওয়ায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়। নৌকায় কেউ ছিলেন না। কী করে বেঁধে রাখা নৌকা ডুবে গেল, তা খতিয়ে দেখছে প্রশাসন। প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে দুর্যোগের কারণেই এই ঘটনা।
ঘূর্ণিঝড়ের ভ্রুকুটি মিটলেও দুর্যোগের আশঙ্কা থেকেই প্রশাসন সতর্কতামূলক সমস্ত ব্যবস্থা নিয়েছিল। পাথরপ্রতিমায় নৌকায় করে মাইকে প্রচার চালাচ্ছিল পুলিশ। ঝোড়ো হাওয়া উত্তরোত্তর বেড়েছে রবিবার। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সমুদ্র সৈকত খালি করে দেওয়া হয়েছে। সমুদ্রের পাড় থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে সমস্ত পর্যটকদের।
সাগরে প্রভূত ক্ষতি হয়েছে। সাগর মেলার অস্থায়ী ছাউনি ঝোড়ো বাতাসে এবং জলোচ্ছ্বাসের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত। লাখ টাকার জিনিসপত্র নষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ। উত্তরোত্তর বেড়ে বৃষ্টি। হাওয়ার দাপটও বেড়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপ না থাকলেও নিম্নচাপের শক্তি কিন্তু বেশ জোরদারই। ক্রমেই ঘোরালো হচ্ছে উপকূলের পরিস্থিতি।
গঙ্গাসাগর, বকখালি থেকে শুরু করে দিঘা, মন্দারমণি, শঙ্করপুর, তাজপুরে অনেক পর্যটক নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ভিড় জমিয়েছিলেন ঘূর্ণিঝড় আসছে না শুনে। কিন্তু পরিস্থিতির অবনতি হতেই ফের পুলিশ তৎপর হয়ে সৈকত খালি করে দিয়েছে। উপকূল সংলগ্ন এলাকা থেকেও সরানো হয়েছে লোকজনদের।
বিজেপিতে চলছে দোষারোপের পালা, কলকাতা পুরভোটে ছন্নছাড়া দেখাচ্ছে গেরুয়া শিবিরকে
ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ শক্তি হারালেও গভীর নিম্নচাপের জেরে যেমন জলোচ্ছ্বাস হবে, তেমনই ঝোড়ো বাতাস বইবে। ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো বাতাস বইবে। নিম্নচাপ উপকূল সংলগ্ন সমুদ্রে আসার পর ৫৫-৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে পারে তীরবর্তী এলাকায়। আগে থেকেই সমস্তরকম সাবধানতা অবলম্বন করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ মাঝসমুদ্রে শক্তিক্ষয়ের পর গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে রবিবার পুরীর কাছে অবস্থান করছে। তারপর আরও শক্তিক্ষয় করে তা সরতে শুরু করবে উত্তর-পূর্ব দিকে। বাংলার উপকূলের দিকে এগনোর সময় নিম্নচাপ আরও শক্তি হারিয়ে ফেলবে বলেই মনে করছে আবহাওয়া দফতর। কিন্তু তার আগেই সমুদ্র যেভাবে উত্তাল হয়ে পড়ছে, তাতে দুর্যোগ বড়সড় আকার নিতে পারে।