সাড়ে চারশো বছরের ঐতিহ্য সঙ্গে বিভূতিভূষণের স্মৃতি বিজরিত বসিরহাটের এই পুজো
সাড়ে চারশো বছরের ঐতিহ্য সঙ্গে বিভূতিভূষণের স্মৃতি বিজরিত বসিরহাটের এই পুজো
সাড়ে চারশো বছরে বসিরহাটের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে পানিতর গ্রামে কথা সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম স্ত্রী গৌরী দেবী বাপের বাড়ির পুজো। সেই থেকেই এভাবেই চলে আসছে সীমান্তে বিভূতিভূষণের ঘুনির ঘরের পুজো।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিতা মহাআনন্দ বন্দোপাধ্যায়ের পূর্বপুরুষ তারিণীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় এখানেই বসবাস করছেন। সেই সুবাদে সাহিত্যিক এখানে আসতেন। সেই সূত্রে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে গৌরিদেবী সঙ্গে আলাপচারিতা। এখানেই বসে সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বকুল বাসর লিখেছিলেন ইচ্ছামতীর পাড়ে।
সেই সময় এখানের সীমান্তবর্তী মানুষের মনোরঞ্জনের জন্য দুর্গাপুজোর শুভ সূচনা করেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন তা বেশ পুরনো এবং জাকজমকের সাথে হয়ে আসছে। ৪৫০ বছরের গৌরী দেবী বাড়ির পুজোকে এলাকার মানুষ সম্প্রীতির পুজোই বলে জানাচ্ছেন। হিন্দু মুসলমান দুই সম্প্রদায়ের মানুষ মিলেমিশে এই পুজোর আয়োজন করে। দুই সম্প্রদায়ের মানুষ মিলে মিশেই পুজোর কটা দিন একসঙ্গে কাটায়।
সমাজসেবী শরিফুল মন্ডল, ফারুক বিল্লা, মজনু মন্ডল, প্রলয় মুখার্জিরা জানান, সময়কালে আজ এই পুজো সার্বজনীন পুজো হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুজোর চারদিন পাশেই বাংলাদেশ ওপার বাংলা থেকে দর্শনার্থীরা এই পুজো দেখতে ভিড় জমান। গৌরী দেবী দালানকোঠায় বহুরূপতার ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রয়েছে এই জমিদার বাড়ি।
পাশাপাশি, পুজোর পঞ্চমী থেকে দশমী পর্যন্ত সম্প্রদায়ের মানুষ মিলিত হয়ে একসঙ্গে প্রসাদ বিতরণ থেকে ভজুরাম অর্থাৎ খিচুড়ি ভোগ সবাই মিলিত ভাবে এক জায়গায় বসে খাওয়া হয়। সব সম্প্রদায়ের কাছে পানিতরের গৌরিদেবী বাড়ির পুজো সম্প্রীতির এক অনন্য মেলবন্ধন। হিন্দু মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে প্রতি বছর দেবী দুর্গার মহাপুজো এক আলাদা অনুভূতি।
বর্তমানে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় শ্বশুরবাড়ি গৌরী দেবীর বাড়ী বেহাল ও ভগ্নদশা ছিল। সংস্কার জন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ইতিমধ্যে সতেরো লক্ষ টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে। শুরু হয়েছে কথা সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের শ্বশুরবাড়ি সংস্কারের কাজ চলছে। নতুন রূপে পেতে চলেছে সীমান্তে মানুষ।
ভাদ্র নবমীর ঘটপুজো দিয়ে শুরু হয় জেনারেল শংকর রায়চৌধুরীর বাড়ির দুর্গাপুজো