
বিধায়কের দলবদলের দিনে আরও এক ধাক্কা বিজেপির! প্রভাবশালী সংখ্যালঘু নেতার যোগদান তৃণমূলে
রায়গঞ্জের বিজেপি (BJP) বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর দলবদলের দিনেই দলবদল করলেন বসিরহাটের সংখ্যালঘু নেতা। গত ডিসেম্বরে বাবু মাস্টার (Babu Master) তৃণমূল (Trinamool Congress) ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। সেই সময় দলে কাজ করতে না পারার কথা জানিয়েছিলেন। নির্বাচনের আগে তাঁর ওপরে হামলাও হয়।

বিজেপিতে যাওয়া হঠকারী সিদ্ধান্ত
রাজ্যে বিজেপির হেরে যাওয়ার পরে ইঙ্গিত করেছিলেন সেই দলে থাকবেন না। পাশাপাশি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশও করেছিলেন। এদিন বাবু মাস্টার সাংবাদিকদের জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছএন তিনি। বলেছেন, বিজেপিতে যাওয়া হঠকারী সিদ্ধান্ত ছিল। তিনি বলেছেন, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই তাঁর মনে হয়েছিল, ভুল জায়গায় এসে পড়েছেন। এই দল তার পক্ষে সুইটেবল নয়। বিভাজনের রাজনীতি বিপজ্জনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সমবাদ মাধ্যমের সামনে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সর্বভারতীয় নেত্রী বলে মন্তব্য করেছেন। কেন তৃণমূল ছেড়েছিলেন, তা দিদি (মমতা) জানতে চাইলে, বলবেন, বলে জানিয়েছেন।

বিজেপির প্রক্রিয়া
রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, ভোটের আগে, কিছুদিনের জন্য যাঁরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁরা কোনও না কোনও উদ্দেশ্য নিয়েই এসেছিলেন। অন্যদিকে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং দাবি করেছেন, বাবু মাস্টারকে ভয় দেখিয়ে দল ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।

ডিসেম্বরে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে
শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার দিনেই গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন বাবু মাস্টার। তার পুরো নাম ফিরোজ কামাল গাজি। হাসনাবাদ মডেল হাইস্কুলের শিক্ষক। ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটে জেলা পরিষদে তৃণমূল সদস্য হিসেবে জিতেছিলেন। জয়ের পরে শিক্ষা ও পরিবহণ কর্মাধ্যক্ষও হন। তবে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে তিনি তৃণমূলের সব পদ ছেড়ে দেন।

তাঁর ওপরে হামলা হয়েছিল ফেব্রুয়ারিতে
গত ফেব্রুয়ারিতে বসিরহাটে সভা ছেড়ে কলকাতায় যাওয়ার পথে বাসন্তী হাইওয়ের ওপরে লাউহাটি পুলিশ ফাঁড়ির কাছে তাঁর ওপর হামলা হয়। তাঁর গাড়ির ওপরে হামলাও হয়। বোমা-গুলির হামলায় আহত হয়ে তাঁকে ভর্তি করানো হয় বাইপাসের ধারের বেসরকারি হাসপাতালে। তাঁকে সেখানে দেখতে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। পরে কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া নিরাপত্তা নিয়ে বাড়ি ফেরেন।

ক্ষমতায় আসতেই তৃণমূলে যোগ দেন
বাবু মাস্টারের দল বদলের ইতিহাস বেশ পুরনো। একটা সময়ে তিনি এলাকার প্রভাবশালী সিপিএম নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। নির্বাচনী রাজনীতিতে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। বাম জমানায় তাঁর মূল প্রতিপত্তি ছিল হাসনাবাদের ভবানীপুর এলাকায়। তবে বাম জমানাতেই ভেড়ি দখল-সহ তোলাবাজির অভিযোগও উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। হাওয়া বুঝে ২০১১-তে মুকুল রায় ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হাত ধরে তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন।