শুভেন্দু আতঙ্কে ভুগছেন, মানসিক অবস্থার প্রমাণ দেখিয়ে পাল্টা অভিষেকের
শুভেন্দু আতঙ্কে ভুগছেন, মানসিক অবস্থার প্রমাণ দেখিয়ে পাল্টা অভিষেকের
শুভেন্দু অধিকারীর মানসিক অবস্থা নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিল তৃণমূল। তাই 'গেট ওয়েল সুন' মেসেজ পাঠিয়ে শুভেন্দুকে বার্তা দেওয়ার এক অভিযান শুরু করা হয়েছিল তৃণমূলের পক্ষ থেকে। এবার সেই কর্মসূচিতে শুভেন্দু অধিকারীর 'রিপ্লাই'কে প্রকাশ্যে তুলে ধরে পাল্টা দিলেন অভিষেক। শুভেন্দুবাবুর মানসিক অবস্থার প্রমাণ দেখিয়ে খোঁচা দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন তাঁর বক্তব্যের সমর্থনে একটি স্ক্রিন শটের প্রিন্ট আউট প্রমাণ আকারে দেখিয়ে বলেন, সোমবার বিকেল সাড়ে চারটের প্রেস করে শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন মমতাকে বেগম বলিনি। তিনি গায়ে মাখছেন কেন? তারপর ৬টা ৪৭-এ তাঁর মানসিক সুস্থতা কামনা করে টুইট করেন এক ব্যক্তি। তাঁকে রিপ্লাই করে শুভেন্দু অধিকারী লেখেন, তোর বেগম মমতা যেমন আছে।
এরপর অভিষেক আর একটি স্ক্রিন শটের প্রিন্ট আউট দেখিয়ে ফের একজন মহিলা লিখেছেন- গেট ওয়েল সুন, শুভেচ্ছা রইল। তাঁকে লিখেছেন, তোর বর কয়লা ভাইপোর চোখ ঠিক হল? এরপর অভিষেকের প্রশ্ন, এরা আবার মহিলা সম্মান নিয়ে কথা বলে? একজন মহিলা সুস্থতা চেয়ে শুভেচ্ছা লিখছেন। হোয়াটসঅ্যাপে রিপ্লাই করছে তোর মা মমতা বেগম কেমন আছে!
অভিষেকের কথায়, যে লোকটা সকালে উঠে এক কথা বলছে, আর রাতে এক কথা বলছে, তার মানসিক সুস্থতা নিয়ে তো কথা উঠবেই। আসলে ওনার অভিষেকে আতঙ্ক হয়ে গিয়েছে। আমি ঘর থেকে বেরোলেই আতঙ্ক। ভাবে, আমি ঘরে বসে থাকি। আমি যা ইচ্ছে বলব। আর লোক চুপ করে বসে থাকবে।
অভিষেক বলেন, জঙ্গলমহলের মেয়ে বীরবাহা, তাঁকে কী বলেছেন? তাঁকে বলছেন জুতোর তলায় থাকে। একজন জঙ্গল-কন্যা, জঙ্গলমহলের গর্ব, তাঁকে বলছে জুতোর তলায় থাকে। আবার বলছে আমি বলিনি। ভিডিও রয়েছে, নিজে মুখে একথা বলছে তারপরও মিথ্যাচার! আমরা অখিল গিরিকে সমর্থন করি না। তার জন্য আমাদের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ক্ষমা চেয়েছেন। সেখানে বিরোধী দলনেতা বলছেন জুতোর তলায় থাকে। তার জন্য বিজেপির সর্বোচ্চ নেতা ক্ষমা চাইতে পারবেন? ক্ষমতা আছে? প্রধানমন্ত্রী আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পারবেন শুভেন্দু যা বলেছেন, তার জন্য দেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতে।
অভিষেক বলেন, আদিবাসী নিয়ে যাঁরা এত কথা বলেন, ভালোবাসা উছলে পড়ে, কিন্তু এনসিআরবি-র ডাটা বলছে, এদের উপর অত্যাচার সবথেকে বেশি হয়েছে কেন্দ্রের এই সরকারের আমলে। এরা এমনই যে তিন বছরের ছেলেকেও ছাড়ে না। এখন বলছেন আমি অভিষেকের ছেলের জন্মদিন নিয়ে কিছু বলিনি। মানুষের টাকা অপচয় নিয়ে বলেছি। আমার সঙ্গে লাগল পারল না, আমার স্ত্রী, শ্যালিকার বিরুদ্ধেও লাগল, এবার আমরা তিন বছরের সন্তানকেও ছাড়ছে না।
শুভেন্দুকে কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন, কাল ৪টে লোক গেছে, তাতেই বলছে সিবিআই চাই। কেউ গান গাইতে পারবে না? আর নিজে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে ঘুরছে। লজ্জা নেই, দু'কান কাটা। আগে নিজের সিকিউরিটি ছাড়ো, তারপর বলো। বাড়ির বাইরে গান গাইলে যারা এসব বলে, তাদের কী বলা যায়!
অভিষেক বলেন, ৫০০০ লোকের জন্য বিজেপি সিকিউরিটি দিয়ে রেখেছে। আনুন বিল, দল যাদের সিকিউরিটি দিয়েছে, দল পে করবে। তৃণমূল তাদেরটা পে করবে। নিজে ৫০০ পুলিশ নিয়ে ঘুরবে। যাদের সীমান্ত পাহারা দেওয়ার কথা, কয়লাখনি পাহারা দেওয়ার কথা, তারা এই চার আনার নেতাদের পিছনে ঘুরছে।
আগামীকাল পঞ্চায়েত হলেও তৈরি দল! নতুন তৃণমূলের ব্যাখ্যা দিয়ে কি বললেন অভিষেক?
অভিষেক বলেন, শুভেন্দু অধিকারীকে আগে বলুন নিজের পার্টিতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে। নিজের পার্টিতে সভাপতিকে পুতুল করে রেখেছে। তাই আগে নিজের পার্টিকে আগে দেখুন। যে আন্দোলন করবে সে সিবিআই ইডি থেকে বাঁচতে বিজেপি যাবে? আমি তো বলছি যদি কেউ কিছু পাও, আমায় বলো ফাঁসির মঞ্চে যাবো। এটা আন্দোলনের মানসিকতা। আর মেদিনীপুরের মতো একটা জায়গার লোক, যেখানে মানুষ শিখেছে আত্মমর্যাদা, সেখানকার লোক হয়ে অমিত শাহের পায়ে হাত দিয়েছেন শুভেন্দু।
অভিষেক এরপর নারদ-কাণ্ডের কথা স্মরণ করিয়ে বলেন, আমায় টাকা নিতে দেখেছেন কখনও? আমার ভয়েস ক্লিপ পাবেন? ৩ বার ইডি-সিবিআই ডেকেছে। বার্থ সার্টিফিকেট ছাড়া সব দিয়ে এসেছি। আমার ভিতরটা স্বচ্ছ। ভিতরে যা বাইরেও তা। কিন্তু যাঁরা কাদা ছুঁড়ছেন, তাঁরা কি স্বচ্ছ?