
কেন ১০ দিন পর হয় গণেশ বিসর্জন? এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক পৌরাণিক কাহিনী
সিদ্ধিদাতা গণেশের অপর নাম বিঘ্নহর্তা। তিনি জীবনের সব রকমের বাধা-বিঘ্ন দূর করেন বলেই শাস্ত্রে তাঁকে বিঘ্নহর্তা নামে অবিহিত করা হয়েছে। প্রতিবছর ভাদ্রপদ মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থীতে ভগবান গণেশ ঘরে ঘরে বিরাজমান হন। আর এর ঠিক ১০ দিন পর অনন্ত চতুর্দশীর দিন গণেশ বিসর্জন হয়। যদিও অনেক জায়গায় দেড়দিন , পাঁচদিন পরই গণেশ বিসর্জন হয়ে যায়। দেশের মধ্যে মহারাষ্ট্রে গণেশ উৎসব জাঁক-জমকের সঙ্গে পালন করা হয়। কিন্তু কখনও কি এটা ভেবেছেন যে গণেশজি কেন ১০ দিন পর্যন্ত বিরাজ থাকেন। ১০ দিন পর গণেশ বিসর্জনের পিছনে এক বিশেষ কারণ রয়েছে, যার সম্পর্ক মহাভারতের সঙ্গে রয়েছে।

মহাভারতের সঙ্গে সম্বন্ধ
কথিত আছে যে ভাদ্রপদ মাসের শুক্লপক্ষে গণেশ চতুর্থীর দিন গণেশজির জন্ম হয়েছিল। এর সঙ্গে পৌরাণিক বইতে এও উল্লেখ রয়েছে যে গণেশ চতুর্থীর দিন থেকেই মহাভারত লেখার কাজ শুরু হয়েছিল। মহর্ষি বেদব্যাস মহাভারত রচনার জন্য গণেশজির কাছে প্রার্থনা করেছিলেন এবং গণেশজি জানিয়েছিলেন যে তিনি লিখতে শুরু করলে তাঁর কলম থামবে না। যদি কলম থেমে যায় তাহলে ওখানেই লেখা বন্ধ করে দেওয়া হবে। তখন মহর্ষি বেদব্যাস জানিয়েছিলেন যে গণেশ ভগবান পণ্ডিতদের মধ্যে সবার আগে আর তিনি একজন সাধারণ ঋষি। যদি শ্লোক লেখার সময় কোনও ভুল হয়ে যায় তাহলে গণেশজি সেটা ঠিক করে লিপিবদ্ধ করে দেবেনয এইভাবে মহাভারত লেখার কাজ শুরু হয় যা টানা ১০দিন পর্যন্ত চলে।

গণেশজির শরীরে জমে গিয়েছিল ধূলো–মাটি
অনন্ত চতুর্দশীর দিন যখন মহাভারত লেখার কাজ সম্পূর্ণ হয় তখন গণেশজির শরীর জড় হয়ে যায়। একেবারে নড়াচড়া না করার কারণে তাঁর শরীরে ধূলো-মাটি জমে গিয়েছিল। তখন গণেশজি সরস্বতী নদীতে স্নান করে নিজেকে পরিষ্কার করেন। এইজন্য গণেশজির স্থাপনা ১০দিনের জন্য করা হয় এবং তারপরই বিসর্জন দেওয়া হয়।

মনের ময়লা দূর করার পর্ব
গণেশ উৎসবকে যদি আমরা আধ্যাত্মিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি, তাহলে এই ১০ দিন আমাদের জন্য সংযত হওয়ার এবং আমাদের মন ও আত্মার ময়লা দূর করে পরিষ্কার করার সময়। এই সময়, একজন ব্যক্তির নিজেকে সংযত হয়ে ভগবান গণেশের ভক্তির প্রতি পূর্ণ মনোযোগ দেওয়া উচিত।

এই বছর গণেশ উৎসব কবে
এ বছর ৩১ অগাস্ট গণেশ চতুর্থী পালন করা হবে দেশজুড়ে। চতুর্থী তিথি শুরু হবে ৩০ অগাস্ট, দুপুর ৩টে ৩৩ মিনিটে এবং চতুর্থী তিথি শেষ হবে ৩১ অগাস্ট, দুপুর ৩টে ২২ মিনিটে। মধ্যাহ্নে গণেশ পুজোর মুহূর্ত হল সকাল ১০টা ২১ মিনিট থেকে দুপুর ১২টা ৫২ মিনিট পর্যন্ত।
(এই সকল তথ্য সম্পূর্ণ পৌরাণিক তথ্যের উপর নির্ভরশীল)