গুমনামী রিভিউ: নেতাজীর অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে শারদীয় সৃজিতের পুজোর উপহার
কিছু সিনেমা থাকে যা আমাদের মাথায় গেঁথে যায়, আর কিছু সিনেমা থাকে যা হৃদয় ছুঁয়ে যায়।শারদীয় সৃজিতের পুজোর উপহার 'গুমনামী' এর মধ্যে কোনটা!
কিছু সিনেমা থাকে যা আমাদের মাথায় গেঁথে যায়, আর কিছু সিনেমা থাকে যা হৃদয় ছুঁয়ে যায়।শারদীয় সৃজিতের পুজোর উপহার 'গুমনামী' এর মধ্যে কোনটা!
ভারতীয় রাজনীতির অন্যতম বিতর্কিত বিষয় নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর অন্তর্ধান রহস্য।মৃত্যু অথবা মৃত্যু নয়! সেই রহস্য নিয়েই তৈরি সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের 'গুমনামী। তবে এই সিনেমা নিয়ে সত্যিই কি এত বিতর্কের প্রয়োজন ছিল!
পর্দায় নেতাজীর অন্তর্ধান রহস্যের ঐতিহাসিক দলিল গুমনামী
সত্যিই কি ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্ট বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজী মারা গিয়েছিলেন? ঘটনার ৭৪ বছর পরও সেই বির্তক আজও থামেনি। পরিচালক সৃজিত অবশ্য সেই বিতর্কে ঢোকেননি। শুধুমাত্র নেতাজীর অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে বিভিন্ন সময়ে তৈরি শাহনওয়াজ(১৯৫৬), খোসলা (১৯৭০) এবং মুখার্জি(১৯৯৯), তিন কমিশনের তথ্যগুলো সিনেমার মাধ্যমে তুলে ধরে এক ঐতিহাসিক দলিল তৈরি করে রাখলেন।এই তিন কমিশনের রিপোর্টকেই ছবির পরতে পরতে তুলে ধরেছেন সৃজিত।
তিন সম্ভাবনাকেই তুলে ধরা হয়েছে
ছবি দেখে বোঝা গেল, এই নিয়ে অযথা বিতর্কের কোনও প্রয়োজন ছিল না। দুই নেতাজী গবেষক অনুজ ধর ও চন্দ্রচূড় ঘোষের লেখা বইয়ে 'Coundrum: Subhas Bose's life after death' তে নেতাজীর অন্তর্ধান রহস্যের বিরুদ্ধে যুক্তি দিয়ে গুমনামি তথ্য তুলে ধরা হয়েছিল। সিনেমায় সেই উল্ল্যেখ যেমন রয়েছে। ঠিক তেমনিই রাশিয়া থিওরি ও মুখার্জী কমিশনের তত্ত্বকেও তুলে ধরা হয়েছে। সিনেমা জুড়ে পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে, তিন সম্ভাবনাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
তবে, চন্দ্রচূড়ের গবেষণায় নেতাজীর অন্তর্ধান রহস্য কোন দিনে মোড় নিয়েছিল সেই দিকটা দারুণভাবে দেখিয়েছেন সৃজিত। দর্শকরা ছবি দেখবেন রিপোর্টার চন্দ্রচূড়ের চোখ দিয়ে। ছবিতে নেতাজির রাশিয়ায় পালিয়ে যাওয়া তত্ত্বের পাশাপাশি গুমনামী তত্ত্বকেও দারুণভাবে দেখানো হয়েছে। বাকি শেষটুকু না হয় না জেনেই হলে গেলেন!
পরিচালনা
বিতর্কিত বিষয় নিয়ে ছবি তৈরির সাহস যেমন দেখিয়েছেন, ঠিক তেমনি ডিটেলিংয়ের দারুণ জোড় দিয়েছেন। সৃজিতের হোমওয়ার্কের জন্য তাঁর প্রশংসা প্রাপ্য। অনেক দিন পর নিজের থ্রিলার গণ্ডি থেকে বেড়িয়ে ভালো ছবি উপহার দিলেন সৃজিত। তবে পাকা থ্রিলার মেকার কিন্তু এছবিতেও তার ছাপ রাখলেন। রঙিন ও সাদা-কালোর মধ্যে দিয়ে বর্তমান সময় ও ফ্ল্যাশব্যাককে দারুণভাবে থ্রিলার ভঙ্গিতে জুড়ে দিয়েছেন সৃজিত।
অভিনয়
পর্দায় নেতাজী ও গুমনামীর চরিত্রে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়।চন্দ্রচূড়ের ভূমিকায় অনির্বাণ অসম্ভব ভালো। পুজোতে এ সিনেমা 'মাস্ট সি' লিস্টের মধ্যে পড়তে বাধ্য।