যৌনতা, সম্পর্কের জটিলতার বুনোটে কোন বার্তা দিল সৃজিতের 'শাহজাহান রিজেন্সি'
'শঙ্করের চৌরঙ্গী পড়েছেন? ২০১৭ এ এসে আমার গল্পটা চৌরঙ্গীর জাতিস্মর... ' এভাবেই ছবির ট্রেলারে কিছুটা উত্তম-শুভেন্দু অভিনীত ছবির স্মৃতি উস্কে দিয়েছিল 'শাহজাহান রিজেন্সি'।
'শঙ্করের চৌরঙ্গী পড়েছেন? ২০১৭ এ এসে আমার গল্পটা চৌরঙ্গীর জাতিস্মর... ' এভাবেই ছবির ট্রেলারে কিছুটা উত্তম-শুভেন্দু অভিনীত ছবির স্মৃতি উস্কে দিয়েছিল 'শাহজাহান রিজেন্সি'। শঙ্করের লেখা 'চৌরঙ্গী' অবলম্বনে ১৯৬৮ সালের তারকাখচিত ছবিকে ফের একবার সেলুলয়েড বন্দি করে বাঙালির মনে জায়গা করে নেওয়া নিঃসন্দেহে কছিন বিষয়। তবে সৃজিত মুখোপাধ্যায় নিজের ছকে গল্প বলতে ভালোবাসেন। আর 'শাহজাহান রিজেন্সি' ফের তাঁর চেনা ছকের একটা প্রমাণ হয়ে রয়ে গেল।
চিত্রনাট্য
গল্পকে মোট ছয় আধ্যায়ে আলাদাভাবে বাগ করে তুলে ধরেছেন সৃজিত। এই ছবিতে স্যাটা বোসের সঙ্গে খানিকটা মিল পাওয়া যাবে সমীরণ বোসের (আবির)। রুদ্র (পরমব্রত) সমস্ত কিছুতেই সাক্ষীর ভূমিকায় রয়েছেন।স্বস্তিকার চরিত্রটি কমলিনীর ,যিনি এসকর্ট সার্ভিসের সঙ্গে যুক্ত। সমীরণের সঙ্গে এখানে বিমান সেবিকা সুপ্রীতার (ঋত্বিকা) প্রেম হয়। অন্যদিকে মিসেস সরকার (মমকা শঙ্কর) শহরের প্রভাবশালীদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর ছেলে অর্ণব (অনির্বাণ)এর প্রেমে পড়ে কমলিনী। চলতে থাকে সম্পর্কের বহু রকমের পথ চলার গল্প। শুরু হয় লাল আলোয় যৌনতার এক অন্য মানবিক চাওয়া পাওয়ার খেলা।এই সমস্ত কিছুই দেখা যায় রুদ্র (পরমব্রত)র চোখ দিয়ে। কিন্তু শেষে...?রঙমিলান্তি কি হয়..? উত্তর বাঁধা রয়েছে ক্লাইম্যাক্সে!
পরিচালনা
এই ছবি আপাদমস্তক সৃজিতের ছবি ! শঙ্করের গল্পের কেবল আদলটাই রয়েছে 'শাহজাহান রিজেন্সি' তে। বাকি চরিত্রদের নাম হদল করে তাঁদের পর্বগুলিকেও নিজের ছকে সাজিয়ে নিয়েছেন সৃজিত। কিছু মন ছুঁয়ে যাওয়া ফ্রেম এই ছবির বিশেষ পাওনা হলেও, প্রেমের গল্প সেভাবে মর্মস্পর্শী হয়ে উঠতে পারেনি।
অভিনয়
বাংলা চলচ্চিত্র জগতের এই মুহূর্তের দুই নামী অভিনেতা এক ছবিতে! আবির ও পরমব্রতর একসঙ্গের স্ক্রিন প্রেজেন্স যে কতটা নান্দনিক হতে পারে, তা সৃজিতের শিল্পসত্ত্বায় উঠে এসেছে। পাশাপাশি, এই ছবি কার্যত একাই মাত করে দিয়েছেন স্বস্তিকা। বলা যেতে পারে ,অভিনয়ের দিক থেকে আবারও তিনি যেভাবে ফিরলেন তা .. 'ব্যাং অন' পেতে বাধ্য! তবে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে সেভাবে সাবলীল ঘরানায় এই ছবি তুলে ধরতে পারেনি। অন্যদিকে চেনা মোড়কের বাইরে মমতা শংকর আরও একবার নজর কাড়লেন।
সবশেষে
শংকরের লেখা 'চৌরঙ্গী'কে পর্দায় দেখার আশা নিয়ে না গেলে 'শাহজাহান রিজেন্সি' খুব একটা হতাশ করবে না। চেনা কলকাতার বুকে জেগে থাকা এক অচেনা শহরের সন্ধান দিচ্ছে সৃজিতের 'শাহজাহান রিজেন্সি'।