
পর্দায় ঝড় তুললেন মিতালি রাজ, তাপসী পান্নু একাই হিরো ‘সাবাস মিঠু’তে
ক্রিকেট নিয়ে বলিউড সর্বদাই একটু আবেগপ্রবণ। আর দর্শকরাও ক্রিকেট নিয়ে তৈরি সিনেমা দেখতে বেশি পছন্দ করেন। আসলে আমাদের শিরায় বয়ে চলেছে দেশপ্রেম। 'সাবাশ মিঠু' আপনাকে সেই অনুভূতিতাই দেবে। প্রকৃতপক্ষে তাপসী পান্নুর ঘাড়েই এই ছবির দায়িত্ব এবং এখানে মিতালি রাজের বায়োপিকে কোনও পুরুষ নায়ক নেই। তবে চিন্তা নেই সিনেমা একাই কাঁপিয়ে দিয়েছেন তাপসী ওরফে মিতালি রাজ। যার পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। সামান্য কিছু ত্রুটি থাকলেও এর জোরদার গল্পের কারণে 'সাবাস মিঠু' দর্শকদের ভালোই লাগবে।

সিনেমার গল্প
সাবাস মিঠু সিনেমায় ভারতীয় ক্রিকেটার মিতালি রাজের জীবনী ও তাঁর কাছে ক্রিকেটের অর্থকে তুলে ধরা হয়েছে। সিনেমা শুরু হয় ছোট্ট মিঠুকে দিয়ে, যেখানে তার প্রিয় বন্ধু নুরি তার শিরায় ক্রিকেট প্রেমকে ঢুকিয়ে দেয়। ক্লাসের দারুণ ভারতনাট্যম ডান্সার মিতালি তাঁর বন্ধুর সঙ্গে গিয়ে প্রথম হাতে ব্যাট ধরেন এবং পরবর্তীকালে দেশের সবচেয়ে কনিষ্ঠ ভারতীয় ক্যাপ্টেন হিসাবে জনপ্রিয় হন। কিন্তু আমাদের এই দেশে 'মেন ইড় ব্লু' দেখতে অভ্যস্ত তাঁরা মহিলাদের এই রঙে কী করে দেখবেন? মিতালি ও তাঁর দল সেই ব্রিজকে অতিক্রম করে 'ওম্যান ইড় ব্লু' হয়ে দেখান। কিন্তু গল্পের শেষে কী হল তা জানতে অবশ্যই আপনাকে সিনেমা হলে যেতে হবে।

অভিনয়
সাবাস মিঠু-তে একমাত্র নায়ক হলেন তাপসী পান্নু। সিনেমা যখন তাঁকে দিয়ে শুরু হয় পর্দায় প্রথম ৩০ মিনিট তাঁকে দেখে ভালো লাগবে। যদিও মিতালি রাজের শৈশবকে আরও একটু দেখালে মনে হয় ভালো ছিল। কিন্তু আমরা এই নিয়ে অভিযোগ করব না কারণ বিজয় রাজ এই সিনেমার অধিকাংশটাই চালনা করে নিয়ে গিয়েছেন। বিজয় রাজ যে অভিনেতা হিসাবে কত বড় মাপের তা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। এই সিনেমায় তিনি তাপসীর কোচ হয়েছেন এবং তিনি তাঁর চরিত্রে যথাযথ। তাপসীর পর এই সিনেমার আর এক কেন্দ্রীয় চরিত্র হল মিঠুর বন্ধু নুরি। যদিও তাঁর চরিত্রের মেয়াদ অল্প কিন্তু তাও গোটা সিনেমায় নুরি তাঁর অভিনয় দিয়ে দর্শকদের মন জয় করতে পারবেন। কারণ মিতালির একের পর এক ছক্কা দেখে নুরিতো তাঁকে শচিন তেন্ডুলকার বলে সম্বোধন করে।

পরিচালকের সফলতা
সাবাস মিঠুতে অপ্রয়োজনীয় সংগ্রামকে দেখানো হয়নি আবেগতাড়িত করে। বরং মিতালি ও তাঁর কোচের মধ্যে এক আলোচনায় মিতালিকে তাঁর কোচ জানান যে সে কত সহজে তাঁর বাড়ির লোকের সমর্থন পেয়েছেন, যা তাঁর অন্য দলের সদস্যদের কাছে বিলাসিতা ছাড়া কিছুই নয়। এই সিনেমায় একাধিক দৃষ্টান্তও ছিল যেখানে পুরুষদের ক্রিকেট দল এবং মহিলা ক্রিকেট দলের মধ্যেকার পার্থক্যকে সততার সাথে চিত্রিত করা হয়েছে। বিমানবন্দরে পুরুষ ক্রিকেটারদের সুবিধা থেকে শুরু করে মহিলা ক্রিকেটারদের মৌলিক চাহিদাগুলিকে অদেখা করার বিষয়গুলিকে পরিচালক যথাযথভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। আর তাই এখানে সফল পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়।

দেখা উচিত একবার
সৃজিত মুখোপাধ্যায় ও তাপসী পান্নু এই দু'জনই এই সিনেমার মূল কাণ্ডারি বলা চলে। তাপসী পান্নু এই চরিত্রে একেবারে ফিট ছিল। প্রফেশনাল স্কিপার হিসাবে নিজেকে তৈরি করা তাপসীর জন্যও অতটাও সহজ ছিল না। কিন্তু তাপসী তা পেরেছেন। দক্ষিণের সিনেমার মতো জাঁকজমক না থাকলেও দর্শকদের এই সিনেমাটি ভালো লাগবে অবশ্যই।
ললিত মোদীর সঙ্গে ডেট, নীরবতা ভাঙলেন সুস্মিতা সেন, প্রতিক্রিয়া জানালেন রোহমান শল