রহস্যে মোড়া ‘রাত আকেলি হ্যয়’, সমাধান করতে একাই ময়দানে নামলেন নওয়াজউদ্দিন
বলিউডে প্রথম ছবি 'রাত আকেলি হ্যয়'-এর মাধ্যমে ঘরোয়া খুনের রহস্য সমাধান করে নেটফ্লিক্সে দারুণ কাজ দেখিয়েছেন বলিউডের কাস্টিং ডিরেক্টর হানি ত্রেহান। টানটান উত্তেজনা, আলো-আঁধারির খেলা, রহস্যের পর রহস্য পরত জমা সবই এই ছবিতে দেখানো হয়েছে নিখুঁতভাবে। আড়াই ঘণ্টার সিনেমা ছেড়ে যেন একবিন্দুর জন্যও উঠতে ইচ্ছে করবে না দর্শকদের। ইনস্পেক্টর জটিল যাদবের চরিত্রে নওয়াজকে এক অন্যভাবেই দেখতে পাওয়া গিয়েছে এই ছবিতে। যিনি এই রহস্য উদঘাটনে বদ্ধ পরিকর।

ছবির গল্প
বিয়ের ফুলসজ্যার রাতে বর খুন। ইনি ছিলেন প্রভাবশালী মন্ত্রী রঘুবীর সিং। সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী (রাধিকা আপ্তে) ফুলশয্যার রাতেই বিধবা হন। তদন্ত, জেরা, জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন জটিল যাদব। বড় হাভেলি, ক্ষমতা দখলের লড়াই, মন্ত্রীরাজ, কমবয়সি স্ত্রী, রহস্যে মোড়া টানটান উৎকন্ঠা নিয়ে এগোতে থাকে গল্প।
প্রথম থেকেই রাধিকা আপ্তের মধ্যে একটা রাগী মেজাজের প্রকাশ দেখা যায়। যা রহস্যকে তরান্বিত করতে থাকে। জানা যায় বিয়ের আগেই থেকেই তাঁর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক ছিল মন্ত্রীর। চলত শারিরিক নির্যাতন। তাহলে দোষী কি রাধিকা আপ্তে? কিন্তু রাধিকার স্পষ্ট জবাব গল্পের মোড় ঘোরাতে থাকে। জানা যায় ,মৃতের ভাইপোর সঙ্গেও সম্পর্ক ছিল তাঁর। যিনি পরিবারের সম্পত্তি, ব্যবসা সামলাতেন। তাহলে খুনি কে?
অন্যদিকে, পাঁচ বছর আগের জোড়া খুনের সঙ্গে যোগ সূত্র খুঁজতে থাকেন জটিল যাদব। এরমধ্যে চলে আসে রাজনৈতিক চাপ। একের পর এক রাঘব বোয়ালদের সঙ্গে লড়তে থাকে সে। পরিবারের সদস্যদেরও এক একটি ভিন চরিত্রে দেখা গিয়েছে ছবিতে। তাদেরকে জেরা করা হয়। উল্লেখ্য, মৃতের ঘরে ও বিবিধ জায়গায় মহিলাদের নগ্ন শরীরের ছবি দেখা যায়। সেখান থেকে জোড়াল হতে থাকে পুলিশের সন্দেহ।

অভিনয়
নওয়াজউদ্দিন জটিলের চরিত্রে খুবই যথাযথ ছিলেন। তাঁর চরিত্রটা খুবই মজাদার ছিল। তিনি একাই গোটা ছবিতে নিজের অভিনয় দক্ষতা দেখিয়ে গিয়েছেন। মায়ের সঙ্গে খুনসুটি থেকে সাহসী ইনস্পেক্টর হিসেবে সত্যের খোঁজ, আবার মুহূর্তে প্রেমিক হয়ে ওঠা, সবক্ষেত্রেই তিনি একেবারে ঠিকঠাক। রাধিকা আপ্তেও সুন্দরভাবে সব হারিয়েও বেঁচে থাকার সাহসকে ফুটিয়ে তুলেছেন। উপরতলার মানুষদের কাছে মাথা নত না করার জেদ মন ছুঁয়ে যায়। নওয়াজের মায়ের ভূমিকায় বেশ ভাল ইলা অরুণ।

পরিচালকের কৃতিত্ব
ত্রেহান সত্যিই তাঁর প্রথম ছবিতে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেখিয়েছেন। কারণ তিনি তাঁর প্রথম ছবিতেই প্রতিভাবান অভিনেতাদের দিয়ে কাজ করাতে সফল হয়েছেন। নওয়াজ থেকে শুরু করে রাধিকা বা শ্বেতা ত্রিপাঠি ও তিগমাংশু ধুলিয়া সকলেই অসাধারণ অভিনেতা। প্রথম ছবিতে এত ভালো কাজের পর এই পরিচালকের থেকে অবশ্যই আরও ভালো ছবির প্রত্যাশা দর্শকদের বেড়ে গেল

দৃশ্যায়ন
সিনোমাটোগ্রাফার পঙ্কজ কুমারের কাজ আমরা আগেও তলোয়ার ও টুম্বাদে দেখেছি। প্রত্যেকটা দৃশ্যায়নই অত্যন্ত নিখুঁতভাবে দেখানো হয়েছে। রাতের অন্ধকারে গায়ে আগুন লাগা ব্যক্তির ল্যাম্প পোস্টে ধাক্কা খেয়ে চিৎকার করে পড়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখে গায়ে যেমন গায়ে কাঁটা দেবে তেমনি সিনেমায় নারীর বিভিন্ন রূপকে যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে তাও এক কথায় অনবদ্য।
