ছবির নাম কেন 'ময়ূরাক্ষী'! উত্তর খুঁজেনিন ছবির এই গল্পে
যেভাবে একটি নদী সরলভাবে বয়ে চলে, সেভাবেই একটি সম্পর্কও নিজের মতো করে এগিয়ে চলে।
যেভাবে একটি নদী সরলভাবে বয়ে চলে, সেভাবেই একটি সম্পর্কও নিজের মতো করে এগিয়ে চলে। অনেকটাই স্বচ্ছনদীর কুলকুল শব্দে বয়ে চলার মতো হয় কিছু কিছু সম্পর্ক। যার গভীরতা উপর থেকে দেখে বোঝার মতো নয়। এরকমই এক সম্পর্কের গল্প লিখেছে অতনু ঘোষের ছবি 'ময়ূরাক্ষী'।
[আরও পড়ুন:পিতা পুত্রের সম্পর্কে আবেগতাড়িত কৌশিক, আপ্লুত প্রসেনজিৎ ]
ছবির কাহিনি বিন্যাস
কোনও সম্পর্কই নির্ভুল হয়না, বা কোনও রূপকথা হয় না। এর একটা বিস্তবিক রূপ থাকে। যে বাস্তবিক রূপে নিজের মতো করে জটা বাঁধে কিছু নেতিবাচক দিক। একজন বাবা আর তাঁর ছেলের মধ্যে সম্পর্কও সেরকমই। এই সম্পর্ক ঘিরেই এক কাহিনির জাল বুনেছেন পরিচালক। যে জালের প্রতিটি গিঁট খুললেই উদ্ধার করতে পারবেন ছবির নাম কেন 'ময়ূরাক্ষী'। আর এই উত্তর খোঁজার এক অনন্য সফর হল এই ছবি।
ছবির গল্প
৮৪ বছরের সুশোভন(সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়) এক নার্ভজনিত সমস্যায় ভুগছেন। এদিকে, তাঁর ছেলে আর্যনীল (প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়) মধ্যবয়সে এক অস্থির জীবনযাপনের জটাজালে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছে। সে থাকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। আর বাবার সঙ্গে দেখা করতে সে কিছুদিনের জন্য এসেছে এদেশে। আর্যনীল আর সুশোভনএর এই কয়েকটি দিনই যেন উত্তর খুঁজে দিয়েছে তাঁদের জুজনের মনে জমা হওয়া নানা প্রশ্নের।
পরিচালনা
গোটা ছবিতে ভায়োলিনের সুরে এক চেনা গল্পকে অদ্ভুত শৈল্পিক ভাবনা নিয়ে গেঁথেছেন পরিচালক। অতনু ঘোষের গল্প বলার ধরণ চিরকালই দৃষ্টি নান্দনিক। আর এই ছবিতেও তা বাদ যায়নি।
অভিনয়
ছবিতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও প্রসেনজিৎকে একসঙ্গে দেখার মধ্যে একটা আলাদা পাওনার ভাগ রয়েছে বাঙালির কাছে। বাংলা চলচ্চিত্রে দুই যুগের দুই দক্ষ অভিনেতাকে একসঙ্গে এক ফ্রেমে পাওয়াটা বড় বিষয়। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে নতুন করে আবিষ্কার করা গিয়েছে এই ছবিতে। এছাড়াও ইন্দ্রাণী হালদার, গার্গী রায়চৌধুরী নিজের মত করে মন ছুঁয়েছেন দর্শকদের। অভিনয় নিয়ে এক চুলও জায়গা ছাড়েননি সুদীপ্তা চক্রবর্তীও।
সঙ্গীত
ছবির সঙ্গীত পরিচালক দেবজ্য়োতি মিশ্র। ছবির ভাবনার সঙ্গে তাঁর গানের মধ্যে নিহিত সংবেদনশীলতা শ্রোতাদের অনেক আগেই স্পর্শ করতে পেরেছে।
সবশেষে
উৎসব মুখর শীতের বিকেলে, এই ছবি যদি সন্তানের মনে বাবা স্নেহকে আরও উস্কে , দু'ফোঁটা চোখের জল ফেলে দিতে পারে, তাহলে মন্দ কী! পরিবারের সঙ্গে কিংবা বিশেষ করে বাবা বা পিতৃস্থানীয় কারোর সঙ্গে এই ছবি উপভোগ করাই যেতে পারে।