ভয় না হাসি কোনওটাই পারল না, অক্ষয়ের অভিনয় অসাধারণ হলেও দিওয়ালি ব্লাস্ট হতে ব্যর্থ ‘লক্ষ্মী’
ভয় না হাসি কোনওটাই পারল না, অক্ষয়ের অভিনয় অসাধারণ হলেও দিওয়ালি ব্লাস্ট হতে ব্যর্থ ‘লক্ষ্মী’
সব চরিত্রেই তিনি যে দক্ষ এবং অসাধারণ তা ফের প্রমাণ করলেন 'লক্ষ্মী’ সিনেমায় অক্ষয় কুমার। অভিনেতার নিজের অভিনয় জীবনেরও এটি একটি দারুণ প্রতীক্ষিত ছবি ছিল। এই ছবির আসল নাম 'লক্ষ্মী বোম্ব’ হলেও, নাম নিয়ে আপত্তি ওঠায় সিনেমার নাম বদলে 'লক্ষ্মী’ রাখা হয়। ভৌতিক ও হাস্যরসে ভরপুর এই ছবি দর্শকদের হাসতে হাসতে আসন থেকে উঠিয়ে দেবে। তবে এই ছবিতে মশলা অনেক কম ছিল এবং এটি কোনওভাবেই দিওয়ালি ব্লাস্ট হতে পারে না। তবে ছবির অভিনেতা–অভিনেত্রীরা তাঁদের অভিনয় দক্ষতা দেখাতে কোনও কার্পণ্য রাখেননি। ছবিতে অক্ষয় কুমারের চরিত্রের নাম আসিফ/লক্ষ্মী, কিয়ারা আদবানী তথা রশ্মি, শরদ কেলকার আসল লক্ষ্মী এই ছবিতে এবং অন্যান্যরা হলেন রাজেশ শর্মা, আয়েশা রাজা মিশ্র ও মনু ঋষি চাড্ডা।
কাঞ্চনা বনাম লক্ষ্মী
লক্ষ্মী ছবির প্রধান সমস্যা হল এটি বুদ্ধিহীনভাবে তৈরি হয়েছে। এই ছবিটি অতটাও হাসির খোরাক জোগাড় করতে পারেননি, যতটা দরকার ছিল। পরিচালক রাঘব লরেন্সের বলিউডে এটাই প্রথম ছবি। ২০১১ সালে তামিল হট মুনি ২: কাঞ্চনা-এই ছবির হিন্দি রিমেক ‘লক্ষ্মী'। ন'বছর আগে তামিল এই ছবি যে মজার পরিস্থিতি তৈরি করেছিল তা হিন্দি রিমেক তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। হ্যাঁ এই ছবির মাধ্যমে সামাজিক বার্তা। লক্ষ্মী চেষ্টা করেছেন তথাকথিত সমাজের রীতিনীতি ও প্রথার বিরুদ্ধে যাওয়ার, কিন্তু তাঁর এই প্রচেষ্টা যেভাবে ব্যাখা হয়েছে ছবিতে তা ব্যর্থ হতে দেখা দিয়েছে। এই ছবিটি রূপান্তরকামীদের সম্প্রদায়দের নিয়ে রাজনৈতিক শোরগোর করার চেষ্টা করা হয়েছে এবং হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতি দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
ছবির গল্প
ছবির গল্পে দেখানো হয়েছে, ছবির প্রধান দুই চরিত্র আসিফ ও রশ্মি একে-অপরকে ভালোবাসেন এবং বিয়ে করতে চান। কিন্তু আসিফ মুসলিম হওয়ায় রশ্মির মা ও বাবা (আয়েশা রাজা মিশ্র ও রাজেশ শর্মা) বেঁকে বসেন এবং আসিফকে জামাই হিসাবে গ্রহণ করতে চান না। ছবিতে টুইস্ট আসে যখন আসিফের ওপর ভর করেন রূপান্তরকামী আত্মা লক্ষ্মী (শরদ কেলকার), যিনি প্রতিহিংসার মিশনে ব্রতী হয়েছেন। ভৌতিক-কমেডি হিসাবে ছবির প্রচার করা হলেও, লক্ষ্মীকে দেখে না ভয় লেগেছে না মজার। ছবির কাহিনী একেবারে খিচুড়িতে পরিণত হয়েছে।
অভিনয়
ছবিটি সেভাবে সফলতা না পেলেও অক্ষয় কুমার সহ প্রত্যেকজন অভিনেতাই যাঁর যাঁর চরিত্রে যথাযথ ছিলেন। কেউই অতিরিক্ত অভিনয় দেখাননি। অক্ষয় কুমারের অভিনয় নিয়ে নতুন করে বলার কিছুই নেই। তিনি অন্যান্য ছবির মতোই এই ছবিতেই নিজের শতকরা ভাগ দিয়েছেন। অক্ষয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছেন কিয়ারাও। বাকি অভিনেতারাও নিজেদের চরিত্র সঠিকভাবে পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন।
ব্যর্থ পরিচালক
তামিল ছবি কাঞ্চনা যেভাবে হিট হয়েছিল সেভাবে মন ভোলাতে পারেনি লক্ষ্মী। ভৌতিক-কেমডি ছবি হওয়ার পরও দর্শকরা নিজেদের এই ছবির সঙ্গে সেভাবে যোগা করতে পারবেন না। রূপান্তরকামী ও সাম্প্রদায়িক সমাজের এই দুই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে সঠিকভাবে তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন পরিচালক লরেন্স। স্ক্রিনপ্লে ও সংলাপও খুবই দুর্বল। আসিফ বা লক্ষ্মী কেউই সেভাবে দর্শকদের হাসাতে পারেননি।
অন্য কোনও মেয়ের দিকে তাকাবে না, আলিকে সতর্ক করলেন জ্যাসমিন ভাসিন